শিবের চাহিদা খুব কম। বাঙালির কাছে তিনি ভোলেভালা, ভোলেনাথ। কিছুটা উদাসীন। তাই কোনও ভক্ত যদি নিজের অজান্তেও শিবপুজোয় অংশ নেন বা শিবের মাথায় জল ঢালেন, সে পুণ্য অনেক। তাই বাংলা হোক বা অন্য রাজ্য, শিবভক্ত অসংখ্য। লক্ষ লক্ষ ভক্ত মহাশিবরাত্রি ব্রত রাখেন প্রতি বছর। দেশের প্রতিটি কোণায় কোণায় শিবরাত্রি পালন হয়ে থাকে। এ বছর মহা শিবরাত্রি কবে পড়েছে জেনে নেওয়া যাক।
শিবের পুজো
সুর্যাস্ত থেকে পরবর্তী সূর্যোদয় পর্যন্ত চার প্রহর। প্রতি প্রহর তিন ঘণ্টা করে। শিবরাত্রি ব্রত চার প্রহরে করতে হয়। অজান্তে কেউ পুজো নিবেদন করলেও তুষ্ট হন মহাদেব। স্বল্পেই তুষ্ট হন দেবাদিদেব। তাঁর পুজোয় নীলকন্ঠ-ধুতুরা, বেলপাতা লাগে। শিবকে পুজো নিবেদন করতে প্রয়োজন শুধু এই উপাদানগুলির। একটি মাটির পাত্র জল বা দুধ দিয়ে পূরণ করুন। এতে কিছু বেল পাতা, ধুতুরা, আকন্দ ফুল, চাল ইত্যাদি রাখুন । তারপর শিব লিঙ্গে অর্পণ করুন। বাড়িতে মাটি দিয়ে শিবলিঙ্গ তৈরি করে পুজো করতে পারেন।
কবে পড়েছে শিবরাত্রি
এদিন শিব পুরাণ পাঠ করলে ভাল। মহামৃত্যুঞ্জয় বা শিবায় ওম নমঃ শিবায় মন্ত্র জপ করা উচিত। এছাড়াও, মহাশিবরাত্রির সারা রাত জেগে পুজো করা ভাল বলে মনে করা হয়। এবার ফেব্রুয়ারি মাসের ২৬ ফেব্রুয়ারি, বুধবার পড়েছে মহাশিবরাত্রির তিথি। ২৬ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯ টা ৪২ মিনিট থেকে তিথি শুরু হবে। তিথি সমাপন পরের দিন। সকাল ৮ টা ৩১ মিনিট পর্যন্ত থাকবে শিব চতুর্দশীর তিথি।
কখন পুজো করার সেরা সময়
শাস্ত্র মতে মহাশিবরাত্রির পুজোর শ্রেষ্ঠ সময় হল নিশীথ কাল। এই তিথিতে চার প্রহরে পুজো হয়। অনেকে কোনও একটি প্রহর বা চার প্রহরেই পুজো করেন। শাস্ত্র মতে মহাশিবরাত্রি তিথিতে সন্ধ্যাবেলা স্নানের পর শিবের পুজো করা উচিত। বিশ্বাস অনুযায়ী, ব্রত পালনের পূর্ণ ফল লাভের জন্য সূর্যোদয় থেকে শুরু করে চতুর্দশী তিথিঅস্ত হওয়ার মধ্যেকার সময় পর্যন্ত ব্রত সমাপ্ত করা উচিত। আবার কোনও কোনও ধারণা অনুযায়ী চতুর্দশী তিথি সমাপ্ত হওয়ার পর ব্রতভঙ্গ করা শ্রেয়।
ব্রতের নিয়ম
শিবরাত্রির ব্রত পালন করার আগের দিন সংযম করতে হয়। এদিন সিদ্ধ চালের ভাত বা আমিষ খেতে নেই। আতপ চালের সিদ্ধ ভাত খাওয়ার নিয়ম এদিন। এছাড়া কেউ চাইলে ময়দার তৈরি খাবারও খেতে পারেন। তবে সন্দক লবণ দিয়েই রান্না করতে হয়। এদিন সাধারণ লবণ একদমই খেতে নেই। ব্রতের দিন উপোস করে নিষ্ঠা করে কিছু নিয়ম মানলে ভক্তের মনোবাঞ্ছা পূরণ করেন দেবাদিদেব।