বৈদিক জ্যোতিষ শাস্ত্রে শনি হলেন অন্যতম গ্রহ। তবে শনির নাম উঠলেই মানুষ আশঙ্কিত হন। শনিদেব হলেন ন্যায়ের দেবতা। তিনি কর্মের দাতা। সব গ্রহের মধ্যে সবচেয়ে ধীর গতির গ্রহ। শনিদেবের ধীর গতির কারণে ভালো-মন্দ প্রভাব মানুষের জীবনে দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকে। সাধারণত কোনও ব্যক্তির জীবনে সাড়ে সাতি কমপক্ষে তিনবার আসে। শনি প্রায় আড়াই বছর ধরে যে কোনও একটি রাশিতে থাকে। শনি বর্তমানে মীন রাশিতে অধিষ্ঠিত। চলতি বছরেই বৃহস্পতির মীন রাশি প্রবেশ করেছে শনি। এর প্রভাব এই বছরের শেষপর্যন্ত কোন রাশির উপর কেমন থাকবে চলুন জেনে নেওয়া যাক।
শনির সাড়ে সাতি কী? শনি হল সবচেয়ে ধীর গতির গ্রহ। মানুষের জীবদ্দশায় সর্বাধিক তিনবার সাড়ে সাতি আসতে পারে। শনির সাড়ে সাতি যে কোনও রাশিতে সাড়ে সাত বছর থাকে। শনি একটি রাশিতে থাকে আড়াই বছর। ওই একই রাশিতে আবার পৌঁছতে শনির লাগে ৩০ বছর।
শনির সাড়ে সাতি কীভাবে কাজ করে? শনির সাড়ে সাতির তিনটি পর্যায় রয়েছে। প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয়। শনি সাড়ে সাতি যে কোনও রাশিতে শুরু হলে তখন এটি প্রথম পর্যায়। সাড়ে সাতির দ্বিতীয় পর্যায়ে শনির প্রভাব থাকে তুঙ্গে। তৃতীয় পর্যায়ের সাড়ে সাতিতে প্রভাব তুলনামূলক কম হয়। বৈদিক জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী, সাড়ে সাতির প্রতিটি পর্যায় আড়াই বছরের।
সাড়ে সাতিতে কী ঘটে- সাড়ে সাতি শুরু হলে জাতক-জাতিকার জীবনে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় বৃদ্ধি পায়। কর্মক্ষেত্রে বিবাদ। কাজে বাধা। পরিশ্রমের ফল মেলে না। এই সময়ে ধৈর্যের সঙ্গে সমস্যাগুলির মুখোমুখি হওয়া উচিত। সাড়ে সাতির দ্বিতীয় পর্যায়কে মধ্য আড়াই বছর বলা হয়। এই পর্যায় অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক। স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সমস্যা, কর্মসংস্থান সংকট, আর্থিক দুর্বলতা এবং প্রতারণা ঘটতে পারে। কাজে সাফল্য আসে না। শনির সাড়ে সাতির তৃতীয় পর্যায়ে ঘুরতে থাকে ভাগ্য। শনিদেব ব্যক্তিকে শুভ ফলও দান করেন।
কোন কোন রাশিতে এখন সাড়ে সাতি- মেষ রাশির সাড়ে সাতির প্রথম পর্যায় শুরু হয়েছে। সাড়ে সাতির দ্বিতীয় পর্যায়ে আছেন মীন রাশির জাতক-জাতিকারা। কুম্ভ রাশির জাতক-জাতিকারা সাড়ে সাতির তৃতীয় বা শেষ পর্যায় আছেন।
সিংহ এবং ধনু রাশিতে চলছে শনির ঢাইয়া। আড়াই বছর শনিদেবের রোষে থাকবেন তাঁরা।
কারা মুক্তি পেয়েছেন- সদ্য সাড়ে সাতি থেকে মুক্তি পেয়েছেন মকর রাশির জাতক-জাতিকারা।
সাড়ে সাতি থেকে মুক্তির উপায় কী-
১। মিথ্যা কথা বলবেন না।
২। কাউকে কাজ করিয়ে টাকা বাকি রাখবেন না।
৩। কাউকে অপমান করবেন না।
৪। কারও সঙ্গে প্রতারণা করবেন না।
৫। মদ ও অন্যান্য নেশার বস্তু থেকে দূরে থাকুন।
৬। কাউকে ঠকাবেন না।
৭। পরিশ্রম করুন। ফাঁকিবাজি নয়।
৮। শত বাধা এলেও হাল ছাড়বেন না।
৯। মা-বাবাকে সম্মান করুন।
১০। কারও গায়ে হাত তুলবেন না।