চাষ করতে চান? চাষ করার নেশা রয়েছে? চাষ করে আয় করতে চান? অথবা পরিবারের জন্য শখে এর ফসল ফলাতে চান! সবই ঠিক আছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, জমি নেই। তাইতো? এখন আর সে চিন্তা করতে হবে না। চাষ করতে হলে আর জমির দরকার হচ্ছে না। ব্যপারখানা কী? তাই ভাবছেন তো! আসুন একটু খুলেই বলা যাক।
এখন বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন, এমন এক চাষের পদ্ধতি। যেখানে মাটির সঙ্গে কোনও সম্পর্ক থাকবে না। অথচ দিব্যি আলুটা, মূলোটা, বেগুনটা আপনার বাড়ির গাছে পতপত করে ঝুলবে। এখনও যদি কোনও সন্দেহ থাকে, তাহলে আপনাকে হাইড্রোপনিক ফার্মিং এর বিষয়টি জানিয়ে দিই।
ব্যালকনি থেকে বড় বারান্দা কিংবা ছাদের কার্নিশ, যে কোনও জায়গায় দিব্যি ফলাতে পারেন। লাউ, কুমড়ো, শসা, করোলা, লঙ্কা, আলু, পটল, পেঁয়াজ যা ইচ্ছে তাই। মাটির মান ধীরে ধীরে যেমন খারাপ হচ্ছে। তেমনই শহর-গঞ্জে মাটির পরিমাণ কমেছে। ফলে ইচ্ছে থাকলেও চাষ করা যাচ্ছে না. তাদের ক্ষেত্রে এই হাইড্রোপনিক ফার্মিং অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি পদ্ধতি হতে পারে। বিজ্ঞানী এবং গবেষকদের লাগাতার চেষ্টার ফলে এই পদ্ধতি চালু হয়েছে।
হাইড্রোপনিক ফার্মিং এর সবচেয়ে বিশেষত্ব হল, এর মধ্যে গাছ লাগানো থেকে গাছের বৃদ্ধি এবং ফলন এর জন্য মাটির সংস্পর্শের কোনও প্রয়োজন থাকে না এবং খরচ মাটিতে চাষ এর চেয়ে অনেক কম। ভোপালের বাসিন্দা সাক্ষী ভরদ্বাজ মাইক্রোবায়োলজির পিএইচডি করছেন। তিনি নিজের হাইড্রোপনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ শুরু করেছেন এবং পাশাপাশি তাঁর গবেষণা করছেন। তিনি জানিয়েছেন যে খেতে বিভিন্ন রকমের ফার্টিলাইজার উপযোগ করা হয়। তাতে ফসলের মধ্যে সার এর প্রভাব দেখা দেয়। যা শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর। এমন পরিস্থিতিতে হাইড্রোপনিক ফার্মিং গুরুত্বপূর্ণ এবং লাভজনক। শরীরের পক্ষে তো বটেই, খরচ অনেক কম।
হাইড্রোপনিক পদ্ধতিতে ফার্মিং এর জন্য বেশি জায়গা প্রয়োজন হয় না। কেবল নিজের প্রয়োজনের অনুযায়ী তার সেটআপ তৈরি করতে হবে। ১ অথবা ২ প্লান্টার সিস্টেম থেকেও এর শুরু করা যেতে পারে। আবার বড় স্তরে ১০ বা ১৫ প্লান্টার সিস্টেম ব্যবস্থা করতে চাইলে পারা যাবে। কপি, পালং, স্ট্রবেরি, কাশ্মীরি লঙ্কা, চেরি, টমেটো, তুলসি, লেটুসের মতো বিভিন্ন উপাদেয় এবং পুষ্টিকর সবজি চাষ করা হচ্ছে।
একটা অ্যাকোরিয়াম বা কন্টেনার নিয়ে তার মধ্যে একটা লেভেল পর্যন্ত জল ভরে দিন। কন্টেনারে মোটর লাগিয়ে দিন যাতে জলের ফ্লো বজায় থাকে। এরপর কনটেইনারে পাইপ ফিট করে দিন। ফলে সেই পাইপ দিয়ে নীচের অংশ দিয়ে জল ফ্লো করে যেতে পারে পাইপে দু'তিন সেন্টিমিটার গামলা ফিট করে দিতে হবে। তা সেট করার জন্য কয়েকটা ফুটো করতে হবে। এবার তার ছোট ছোট ছিদ্র করে গামলা ফিট করতে হবে।
গামলায় জলের মধ্যে বীজ এদিক-ওদিক যেন না চলে যায়, সেটা নজর রাখতে হবে। এর জন্য চারকোল দিয়ে চারিদিকে কভার করে দিন। যার পরে গামলাতে নারকেলের মালাই এর পাউডার দিয়ে দিতে হবে। এরপর তার ওপর ছড়িয়ে দিতে হবে। আসলে নারকেলের মালাই এর পাউডার জলের সঙ্গে খুব ভালোভাবে মিশে যায়। যা গাছের চারার বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এর মধ্যে মাছের পালন করা যেতে পারে। আসলে মাছের বর্জ্য পদার্থ গাছের খাদ্য হিসেবে খুব ভালো কাজ করতে পারে।