এবারের দুর্গাপুজোয় সোনাগাছির যৌনপল্লিতে কার্যত এলাহি আয়োজন। চমকে দেওয়া থিমের পুজোয় যখন কলকাতা ও জেলাগুলি একে অপরকে টেক্কা দিচ্ছে, তখন সোনাগাছির দুর্গাপুজোয় অভিনব ব্যাপার। নাচ, গান অনুষ্ঠানে জমজমাট ব্যাপার হতে চলেছে সোনাগাছির যৌনপল্লির পুজোয়।
এশিয়ার বৃহত্তম যৌনপল্লি কলকাতার সোনাগাছি। একদশকেরও বেশি সময় ধরে সোনাগাছির যৌনকর্মীরা দুর্গাপুজোর আয়োজন করে আসছেন। এই বছর যৌনকর্মীদের সন্তানরা পুজোর মূল উদ্যোক্তা।
সোনাগাছির শীতলা মন্দিরের কাছেই এ বছর দুর্গাপুজো হবে। আগামী ২২ সেপ্টেম্বর উদ্বোধনে এলাহি আয়োজনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
উপস্থিত থাকবেন সঙ্গীত শিল্পী ঊষা উত্থুপ, মন্ত্রী শশী পাঁজা, বিধায়ক দেবাশিস কুমার সহ সিনেমা জগতের মহারথীরা।
পুজোতে থাকছে না কোনও মাটির প্রতিমা। পরিবর্তে জীবন্ত দুর্গা, কার্তিক, লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশদের দেখা যাবে ।
যাঁরা দুর্গা, কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী, অসুর সাজবেন, তাঁরা এই মুহূর্তে দিনরাত এক করে প্র্যাক্টিস করে চলেছেন । নাচ, গান, অভিনয়েরও নানা অনুষ্ঠান থাকবে।
সোনাগাছি বহু প্রাচীন একটি যৌনপল্লি। এই যৌনপল্লি আরও কিছু অজানা তথ্য নিয়ে একটু আলোচনা করা যাক। এই যৌনপল্লি নিয়ে ১৮৮০ সালে নাটক লেখা হয়েছিল, নাম ‘বেশ্যালীলা’।
সোনাগাছির যৌনকর্মীদের একটা বড় অংশ জুড়ে রয়েছে বাংলাদেশ ও নেপালের মহিলারা। এই যৌনপল্লিতে প্রায় ১০ হাজার যৌনকর্মী বসবাস করেন।
সোনাগাছিতে এক রাত্রের জন্য ৩০০ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে খদ্দেরদের। পারিশ্রমিকের এত বৈচিত্র্য ভারতের আর কোনও ‘নিষিদ্ধ পল্লি’তে বিরল।
১৯ ও ২০ শতক থেকেই সোনাগাছি কলকাতার একটি যৌনপল্লি হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। এই সময়কালে এটি এশিয়ার বৃহত্তম যৌনপল্লি হিসাবে পরিচিতি লাভ করে।
বর্তমানে, সোনাগাছি প্রকল্পটি একটি যৌনকর্মীদের সমবায় সমিতির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এই সমিতি যৌনকর্মীদের কন্ডোম ব্যবহার নিশ্চিত করতে এবং তাদের অধিকার রক্ষা করতে কাজ করে।
করোনাকালে সোনাগাছির যৌনকর্মীরা খুব কড়া ভাবে সব নিয়ম মেনে ছিলেন।