ভাইয়ের কপালে ফোঁটা দিলে নাকি যমের দুয়ারে কাঁটা পড়ে। ভাইফোঁটার এই চিরন্তন উইশ তো আমাদের বিলক্ষণ জানা। কিন্তু তাই বলে যম নিজে ভয় দেখিয়ে সতর্ক করছে, এমন দৃশ্য কষ্ট কল্পনাতেও কেউ আজ পর্যন্ত রচনা করেন নি। তবে শিলিগুড়ির এক পুলিশকর্মী তথা সমাজকর্মীর সৌজন্যে সে দৃশ্য দেখলো শিলিগুড়ি। এ রাস্তা থেকে সে রাস্তা যমরাজ দৌড়ে বেড়ালেন মানুষের কল্যাণ কামনায়।
করোনা নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে যমের দুয়ার খুলে এবার শিলিগুড়ির রাস্তায় নামলেন যমরাজ। এদিন যমরাজ বেশে শিলিগুড়ি রাজপথে মানুষকে মাস্ক ও স্যানিটাইজার দিয়ে বেড়ালেন পুলিশকর্মী তথা সমাজসেবী বাপন দাস।
এদিন শিলিগুড়ি জংশন বাস টার্মিনাস থেকে শুরু করে শিলিগুড়ির হাশমি চক পর্যন্ত যাঁরাই করোনার স্বাস্থ্য বিধি না মেনে সঠিকভাবে মাস্ক পড়েননি তাদের হাতে মাস্ক তুলে দেন এই পুলিশকর্মী।
যমালয়ে জীবন্ত ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতোই শহরের আনাচে কানাচে এদিন সাক্ষাত শমন ছুটে গিয়েছেন ন্যায়দণ্ড হাতে।
ওই ছায়াছবিতে ভানু জীবিত থাকতেই তাকে ভুল করে নিয়ে গিয়েছিলেন মৃত্যুদূতেরা। পরে অবশ্য তাকে মর্তে ফেরৎ পাঠানো হয়েছিল।
কিন্তু শিলিগুড়িতে ঘটেছে ঠিক তার উল্টো। এবার মর্তে জীবন্ত এসে পৌঁছালেন স্বয়ং যমরাজ। তবে কারোর জীবন কেড়ে নিয়ে যেতে নয়। মর্ত্যের মানুষকে মৃত্যুর মুখ থেকে বাঁচাতেই। ফলে এখানেই রিলের সঙ্গে রিয়েলের ফারাক।
করোনার দ্বিতীয় ধাক্কায় সারা দেশের পাশাপাশি রাজ্যেও করোনার প্রকোপ হু হু করে বাড়ছে। বাদ যায়নি দার্জিলিংয়ের পাহাড় কিংবা সমতলের শিলিগুড়িও।
শিলিগুড়িতে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা বহুদিন আগেই তিনশোর ঘর পর করেছে। পাল্লা দিয়ে মৃত্যুও জেলায় গড়ে দশ জন।
এই অবস্থাতেও এখনও শহরের কিছু মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। তাই এবার তাদেরই সতর্ক করতে রাস্তায় নামতে হলো খোদ যমরাজকে।
শুক্রবার বিধাননগর ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সম্পাদক তথা কলকাতা পুলিশের কর্মী বাপন দাস যমরাজ সেজে শিলিগুড়িতে করোনার স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে প্রচারে নামেন।
এদিন দুপুরে শিলিগুড়ির তেনজিং নোরগে বাসস্ট্যান্ড থেকে জেলা হাসপাতাল পর্যন্ত সাধারণ মানুষকে সতর্ক করেন। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যে মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিতরণ করেন তিনি।
বাপন দাস একজন পুলিশ কর্মী হওয়ার সুবাদে নিজের কর্তব্য পালনের পাশাপাশি কাজের ফাঁক সময়ে নানা সামাজিক কাজ করে থাকেন।