22 Km Run To Nomination In Darjeeling: গ্রামে রাস্তা নেই, বেহাল যোগাযোগ ব্যবস্থা। হাসপাতালে যেতে হয় কয়েক কিলোমিটার হেঁটে। নিজের গাড়ি বা বাইক থেকেও লাভ নেই। কারণ রাস্তার যা অবস্থা উল্টে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। পাশাপাশি পাহাড়ে ক্রমবর্ধমান দূষণ ও যানজটের সমস্যা রয়েছে। এই সমস্ত সমস্যা সমাধান করার কেউ নেই। রাজনীতি রাজনীতির মত চলছে। পালাবদল ঘটছে, কিন্তু দীর্ঘ সমস্যার সমাধান করতে কেউ এগিয়ে আসছেন না। এমনই অভিযোগ তুলে অভিনব প্রতিবাদ করে পাহাড়ের এক প্রার্থী নির্দল থেকে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আর মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য গোটা রাজ্যের ও দেশের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য তিনি দৌড়ে এসে মনোনয়ন জমা দিয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছেন। তার তোলা সমস্যার সমাধান হবে কি না, তা পরের কথা। কিন্তু গোটা রাজ্যে মনোনয়নকে ঘিরে গোলমাল, হিংসা, দলবদলের খবরের ভিড়ে আলাদা করে নজর কেড়েছে এই পাহাড়ি যুবকের ২২ কিলোমিটার দৌড়ে এসে মনোনয়ন জমা দেওয়ার অভিনব অহিংস পন্থা।
আরও পড়ুনঃ জ্যান্ত সার্ডিন মাছ গিলে হাঁপানির অভিনব চিকিৎসা নিতে ভিড় হায়দরাবাদে Viral
আরও পড়ুনঃ ইতিহাস! টিকিট বিক্রিতে সর্বকালীন রেকর্ড ভাঙল দার্জিলিঙের টয় ট্রেন, একমাসে সর্বোচ্চ আয়
দার্জিলিং জেলার জোরবাংলো-সুখিয়াপোখরি ব্লকের সোনাদা গ্রাম পঞ্চায়েতের তুমসং খাসমহলের বাসিন্দা শরণ সুব্বা পেশায় গাড়িচালক হলেও তিনি নেশায় অ্যাথলিট। তাঁর গ্রামের বেহাল রাস্তা। রাস্তার পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে কেউ অসুস্থ হলে স্ট্রেচারে করে কয়েক কিলোমিটার পাহাড়ি ঢাল দিয়ে নামিয়ে তারপরে অ্যাম্বুলেন্সে তুলতে হয়। নিজে গাড়িচালক হলেও গাড়ি নিয়ে গ্রাম পর্যন্ত ঢুকতে পারেন না। পাশাপাশি গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের জের পড়েছে পাহাড়েও। চলতি বছরে কয়েক দশকের রেকর্ড ভেঙে তাপমাত্রা চড়েছিল তুঙ্গে। যা নাড়া দিয়েছে তাঁকেও। সব মিলিয়ে পাহাড়ে বদলের ডাক দিয়ে কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নয়, আলাদা করেই রাজনীতির লড়াইয়ে নামছেন তিনি।
প্রায় দু’দশক পাহাড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন (WB Panchayat Polls) হয়নি। পথঘাট সংস্কার করা হয় না। আবার পাহাড়ে ক্রমেই দূষণ বেড়ে চলেছে। এর প্রতিবাদেই সোনাদা থেকে সুখিয়াপোখরি ২২ কিলোমিটার দৌড়ে এসে মনোনয়নপত্র জমা করলেন শরণ। তার এই কর্মকাণ্ড দেখে চমৎকৃত আধিকারিকরাও। যদিও শরণ সুব্বার মধ্যে ক্লান্তির ছাপ ছিল না। তিনি বলেন, “যানজট না কমালে বিপাকে পড়বে ভালবাসার পাহাড়। এই বার্তা দিতেই দৌড়ে এলাম মনোনয়ন জমা দিতে।”
ছোট থেকেই পাহাড়ে বেড়ে ওঠা শরণের। কিন্তু চোখের সামনে দেখতে পান, পাহাড়ে গাড়ির সংখ্যা বেড়ে চলেছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দূষণও। আবার বর্তমানে যানজট মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগে রাস্তা দিয়ে পায়ে হেঁটে যাতায়াত করা গেলেও এখন তা আর হয়ে ওঠে না। তাই তিনি প্রতিবাদস্বরুপ তাঁর বাড়ি সোনাদা থেকে সুখিয়াপোখরি পর্যন্ত দৌড়ে আসেন। ২১ কিলোমিটার দৌড়ে আসতে তাঁর সময় লেগেছে ৪ ঘন্টা।
জানা গিয়েছে, শরণ সুব্বা সোনাদাতেই নির্দল প্রার্থী হচ্ছেন। তাঁর লক্ষ্য আগামীতে পাহাড়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরি করা। প্রতিটি রাস্তা সংস্কার করা। শরণ বলেন, “আমাদের প্রশাসনিক কাজকর্মের জন্যও অনেক দূর যেতে হয়। চিকিৎসা করাতেও কয়েক ক্রোশ দূরে ছুটতে হয়। তাই আমি চাই আমাদের গ্রামের মানুষেরা শান্তিতে থাকুক।” পাশাপাশি পাহাড়ে যেভাবে গাড়ির সংখ্যা বাড়ছে তা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনার প্রয়োজনীয়তাও উপলব্ধি করেছেন তিনি। সোনাদা থেকে মাত্র কয়েক কিলোমটার দার্জিলিং যেতেই অনেক সময় লেগে যায়। যানজট সমস্যা মেটাতে হবে নইলে পর্যটকরা আসতে চাইবে না।”