
মোটামুটি দশম শতাব্দীতে আরব দেশগুলিতে হালিমের (Haleem) উদ্ভব হয়েছিল এবং সম্ভবত এর নাম ছিল হারিশা। বিভিন্ন রকমের ডাল, গম , মাংস, ঘি এবং গরম মশলা একসঙ্গে মিশিয়ে কয়েক ঘণ্টা ধরে রান্না করা হয় হালিম। হালিম বা হারিশার সবচেয়ে পুরনো লিখিত রেসিপি পাওয়া যায় কিতাব-আল-তাবিখ নামের রান্নার বইতে। এই বইটিতে তৎকালীন রাজা বাদশাহদের বেশ কিছু খাবারের রেসিপি লেখা রয়েছে। বইটির লেখক আবু মুহাম্মদ আল মুজ্জাফর ইবন সায়ার। জানা যায়, ভারতে হারিশা বা হালিমের আগমন মুঘলদের হাত ধরে। দ্বিতীয় মুঘল সম্রাট হুমায়ুনের আমলে ভারতে আগমন হলেও হারিশা ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় আকবরের আমলে।
রমজান মাসে রোজার ইফতারে হালিম এর বিশেষ কদর রয়েছে। সারা দিন রোজা রাখার পর প্রোটিনের ঘাটতি মেটাতে সাহায্য করে হালিম। হাই প্রোটিন হওয়ার কারণে শরীরে এনার্জি জোগাতে দারুণ উপকারী হালিম। তাই রমজান মাসে (Ramadan 2023) এই খাবারটির চাহিদা তুঙ্গে থাকে।
কলকাতা মানেই বিরিয়ানির সঙ্গে প্রেম। তবে হালিমও খুব বেশি পিছিয়ে থাকবে না। হালিম এখন সারা বছরই কলকাতায় (Haleem In Kolkata) পাওয়া যায়। তবে, রমজান মাসে এটির চাহিদা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে যায়। যেহেতু মোঘলাই খাবার কলকাতাবাসীর অন্যতম পছন্দের, তাই এখানে জায়গা করে নিয়েছে হালিমও। আমরা এই প্রতিবেদনে কল
আরও পড়ুন: Mishti Doi In Kolkata: কলকাতায় সেরা দই কোথায় মেলে? এই দোকানগুলি 'অমৃত-কুম্ভ'
জিশান (Zeeshan Restaurant): জিশান পার্ক সার্কাসের একটি জনপ্রিয় রেস্তরাঁ। এখানে প্রায় সারা বছর সুস্বাদু হালিম পাওয়া যায়। যদি কোনও করণে আপনি আরসালানের হালিম মিস করে থাকেন, তাহলে বেকবাগানের দিকে একটু হেঁটে জিশানের হালিম ট্রাই করে দেখুন। গ্রাহকদের কাছে এদের হালিম সর্বকালের প্রিয়।
শিরাজ গোল্ডেন রেস্তরাঁ (Shiraz Golden Restaurant): মল্লিক বাজার ক্রসিং দিয়ে যাওয়ার সময় আপনি এই জায়গাটিকে উপেক্ষা করতে পারবেন না। রমজানের চেতনায় বেঁচে থাকার জন্য এই জায়গাটি উৎসবের চেতনায় সাজানো হয় এবং এখানে শাহী হালিম বা ঐতিহ্যবাহী ইরানি হালিম বা হায়দরাবাদি হালিম পাওয়া যায়।
আমিনিয়া (Aminia): আমিনিয়া হল কলকাতার একটি বিখ্যাত রেস্তরাঁ চেইন। এরাও মোঘলাই খাবারের জন্য পরিচিত। পার্ক সার্কাস, এসপ্ল্যানেড এবং নিউ আলিপুর সহ শহর জুড়ে রেস্তরাঁটির বেশ কয়েকটি শাখা রয়েছে। আমিনিয়াও রমজান মাসে সুস্বাদু হালিম পরিবেশন করে।
রয়্যাল ইন্ডিয়ান হোটেল (Royal Indian Hotel): রয়্যাল ইন্ডিয়ান হোটেল হল কলকাতার একটি কিংবদন্তি রেস্তরাঁ। যারা এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে খাঁটি মোঘলাই খাবার পরিবেশন করে আসছে। এই রেস্তরাঁটি খিদিরপুরের ফ্যান্সি মার্কেটের পাশে অবস্থিত। এখানকার ইন্ডিয়ান স্পেশাল মাটন হালিম, যা গ্রাহকদের কাছে হট ফেভারিট। এখানে হালিম পাওয়া যায় বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। গোটা রমজান মাসে রেস্তরাঁটি সুস্বাদু হালিমের জন্য গন্তব্যস্থল হয়ে ওঠে।
হাজি সাহেব (Haji Saheb): হাজি সাহেব রেস্তরাঁর দুটি আউটলেটই অত্যন্ত সুস্বাদু হালিম পরিবেশন করে। তবে, এদের হালিমের দাম একটু বেশি।
সুফিয়া (Sufia): সুফিয়া হল জাকারিয়া স্ট্রিটে (Zakaria Street) অবস্থিত একটি ছোট রেস্তরাঁ, যা কলকাতার অন্যতম সেরা হালিম পরিবেশন করে। রেস্তরাঁটি তার সুস্বাদু এবং মশলাদার হালিমের জন্য পরিচিত।
সার্ফায়ার (Surfire): দক্ষিণ কলকাতার রজনী সেন রোডের এই রেস্তরাঁর হালিমের জনপ্রিয়তা আজকাল অনেকেরই মুখে মুখে ফিরছে। এখানে সারা বছরই হালিম পাওয়া যায়। তাই যে কোনও একদিন সন্ধেবেলা ঢুঁ মারতে পারেন।
সাবির (Sabir’s Hotel): চাঁদনি চকের এই রেস্তরাঁটিকে বলা হয় রেজালার পথপ্রদর্শক। সাবিরে রমজানের সময় হালিম পাওয়া যায়। তবে এখানে শুধু এক ধরনের হালিম পরিবেশন করা হয়। সেটা হল মাটন হালিম।