সাদা-কালো বর্গাকার খোপ কাটা বোর্ড। মুখোমুখি লড়াইতে দু'পক্ষ। লক্ষ্য একটাই, বিপক্ষের রাজাকে পরাজিত করা। এতক্ষণে আশাকরি কারও আর বুঝতে বাকি নেই, এখানে কীসের কথা বলা হচ্ছে। হ্যাঁ ঠিকই ধরেছেন, বিষয় এখানে দাবা খেলা। ভারত তথা গোটা বিশ্বে একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় এই খেলা, বা বলা ভাল মগজাস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যম। কিন্তু এটা জানেন কি, ঠিক কবে কোথায় চালু হয়েছিল দাবা খেলা? বা এটা জানেন কি, শুধুমাত্র দাবা খেলার মধ্যে দিয়েই ভারতের একটি গ্রাম জগৎবিখ্যাত হয়ে উঠেছে?
দাবা খেলার সূচনা কোথায়?
বেশিরভাগ ঐতিহাসিকই মনে করেন প্রাচীন ভারতেই দাবা খেলার সূত্রপাত। তবে কোনও কোনও ঐতিহাসিকগণের আবার ধারণা, চিন বা পারস্যতেও জন্ম হয়ে থাকতে পারে দাবার। তবে ইউরোপে দাবার যে রূপ প্রবেশ করে তা কমবেশি সাড়ে তেরশো বছর আগে পারস্যতে খেলা হত। শোনা যায়, একসময় মুসলিম বিশ্বে নাকি এই খেলাটি বিপুল জনপ্রিয়তা পায় এবং ইসলামের প্রচারের সঙ্গে সঙ্গেই সেটি উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে।
এই নিয়ে আরও মতবাদ রয়েছে। ইতিহাসবিদদের একটা বড় অংশ মনে করেন, প্রাচীন মিশরে দাবার মতোই একটি খেলার সন্ধান পাওয়া যায়, যা 'শতরঞ্জ' নামে পরিচিত ছিল। আবার গবেষকদের কারও কারও মতে ষষ্ঠ শতাব্দীরও আগে গুপ্তযুগে ভারতে 'চতুরঙ্গ' নামে একটি খেলার সূচনা হয়, সেটিই এযুগের দাবা।
দাবা খেলার জন্য ভারতের এই গ্রাম বিখ্যাত
তবে সময় যত এগিয়েছে, ততই জনপ্রিয় হয়েছে দাবা, মানুষ মেতে উঠেছেন এই বুদ্ধির খেলায়। আর তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ হল কেরলের ত্রিসুর জেলার মারোত্তিচাল গ্রাম। বেশ কয়েক দশক আগে গ্রামের মানুষকে মদ ও জুয়ার নেশা থেকে মুক্ত করে তাঁদের এই খেলা সম্পর্কে বোঝাতে শুরু করেন সি অন্নিকৃষ্ণন নামে এক ব্যক্তি। প্রথম দিকে অবশ্য সফল হননি তিনি। কিন্তু পরে ধীরে ধীরে দাবার প্রতি গ্রামের মানুষের আগ্রহ বাড়তে থাকে এবং ছোট-বড়, মহিলা-পুরুষ নির্বিশেষে সকলেই এই খেলার ভক্ত হয়ে ওঠেন। বর্তমানে গ্রামের সিংহভাগ মানুষই এই খেলার সঙ্গে যুক্ত। যার জেরে মারোত্তিচাল এখন 'দাবা গ্রাম' বা 'Chess Village' নামে গোটা বিশ্বে পরিচিত।
আরও পড়ুন - Tata Group-এর এই সংস্থার ৩০ লক্ষ শেয়ার বিক্রি রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালার, কেন?