জমিয়ে সাজগোজ, দেদার আনন্দ আর প্রচুর খাওয়াদাওয়া। পুজো মানেই এই তিনটে জিনিস মাস্ট। আর নবমী মানেই উমার বিদায় নেওয়ার পালা। তাইতো এইদিন রাতে আপামর বাঙাসির মনের কথা, 'যেও না নবমী নিশি, আজি লয়ে তারাদলে।' আনন্দের মাঝেও বিষাদের বার্তা দিয়ে যায় নবমী নিশি। তার আগে অবশ্য নবমী মানে বাঙালির কাছে মাংস খাওয়ার দিন। তাই গত কয়েক বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে, নবমীর দিন খাসির মাংসের দোকানের সামনের লাইন বাড়ছে। ভোজন রসিক হওয়ার পাশাপাশি বাঙালি হুজুগে জাতি, কোত্থেকে কবে কে নবমীতে মাংস খাওয়া শিখিয়েছিল তার হদিস না পেলেও সেই ধারা কিন্তু ভালই মেন্টেন করে চলেছে।
বন্ধ হয়ে গিয়েছে নবমীতে দেবীর সামনে বলি দিয়ে রসনাতৃপ্তির রেওয়াজ। কিন্তু মাংস খাওয়া রয়ে গিয়েছে ট্র্যাডিশনের দোহাই দিয়ে। কোলেস্টরলের আর হার্টের অসুখ থাকলেও এই দিনটায় খাসি-পাঁঠার জন্য সব নিয়মকে বুড়ো আঙ্গুল দেখাতে রাজি বাঙালি। তাই প্রতিবছর দোল আর নবমীর দিন এশহরে খাসির দোকানের সামনে চোখে পড়বেই লম্বা লাইন। কচি পাঁঠা না রেওয়াজি খাসি- এই দিন কেউ প্রশ্ন করে না, তাঁদের পেলেই হল। খাসির মাংসের দাম যেমন চড়চড়িয়ে বেড়েছে, তেমনই বেড়েছে নবমীতে খাসির মাংসের চাহিদা।
গতবছর করোনা কালে মণ্ডপে মণ্ডপে ঘোরার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু নবমীর দিন লাইন দিয়ে মাংস কেনা আটকাতে পেরেছিল কই আদালত। গতবার মানুষ মণ্ডপমুখো না হলেও নবমীর দিন গোটা রাজ্যেরই মাংসের দোকানগুলির সামনে যে জনস্রোত দেখা গিয়েছে, তা দেখে বোঝার উপায় ছিল না মহামারির প্রকোপ চলছে।
সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় ছিল, খাসির মাংসের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা শয়ে-শয়ে মুখের অনেকেরই ছিল না মাস্ক।, দূরত্ব-বিধি মানার নিয়মও মানেননি অনেকেই। এবার আবার পুজো দেখার কড়াকড়ি অনেক কম। খোল রয়েছে হোটেল-রেস্তোরাঁও। মণ্ডপে মণ্ডপে দেখা দিচ্ছে জনজয়োর। ফলে রাত পোহালে এবার অনেকটা খোলা মনেই বাঙালি পাঠার দোকানেপ সামনে লাইন দেবে বলাইবাহুল্য। পরিস্থিতি যা , তাতে আম বাঙালিরই নবমীর এই পাঁঠা প্রীতি কমবে না, বরং এবার খাসির দোকানের লাইন মণ্ডপের লাইনকে টেক্কা দিতে পারে কিনা সেটাই দেখার।