scorecardresearch
 

গুপ্তিপাড়ায় প্রথম ১২ বন্ধুর বারোয়ারি পুজো, বাংলায় দুর্গাপুজো শুরু কবে?

শরৎকালে দেবী দুর্গার এই পুজোর নামকরণ হয় 'অকালবোধন' বা শারদীয়া দুর্গা পূজা। রামচন্দ্রের আরাধনায় সন্তুষ্ট হয়ে তাঁর বর দেন দেবী। শ্রী রামচন্দ্র রাবণকে নিহত করে সীতাকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন। সেই থেকে প্রতি বছর শরৎকালে দেবী দুর্গার পুজো করা হয়। এর আগে কালকেতু নামে এক ব্যাধ বসন্তকালে শ্রী চণ্ডীকে বাসন্তী নামে পুজো করতেন, তাই বসন্তকালের পুজোকে বাসন্তী পুজো বলা হয়।

Advertisement
দেবী দুর্গা দেবী দুর্গা
হাইলাইটস
  • শরৎকালে দেবী দুর্গার এই পুজোর নামকরণ হয় 'অকালবোধন' বা শারদীয়া দুর্গা পূজা
  • বাংলাদেশে সম্ভবত মোঘল আমল থেকেই দুর্গা পুজো শুরু হয় বলে অনুমান
  • সম্ভবত সনাতন ধর্মতসাহিনি সভা, বাগবাজারে সর্বজনীন দুর্গোৎসবের সূচনা করে

Durga Puja History: মা দুর্গা হলেন দেবাদিদেব মহাদেবের জায়া। শান্ত, স্নিগ্দ্ধ মাতৃরূপিণী। আবার কখনও তিনি প্রবল পরাক্রমশালী মহিষাসুরমর্দিনী। ধর্ম ও অধর্মের সঙ্কটে দেবী দুর্গা রূপ ধারণ করেন তিনি। সকল দেবতাদের অস্ত্র ও অলংকার দিয়ে সুসজ্জিত হন। দুর্গম নামের এক অসুরকে পরাস্ত করলে মহাদেব তাঁর নামকরণ করেন দেবী দুর্গা। মহিষী মাতার পুত্র মহিষাসুর স্বর্গ, মর্ত্য, পাতালে ত্রাস ছড়াতে থাকেন তখন দেবী দুর্গা দশ হাতের দশ অস্ত্র দিয়ে যুদ্ধ করেন ও সবশেষে ত্রিশূল দিয়ে বধ করেন দেবী দুর্গা। পৌরাণিক মতে, বিশ্বের সকল শক্তির সম্মিলিত রূপ হলেন দেবী দুর্গা। 

মহাভারত, হরিবংশ, বিষ্ণু পুরাণ, দেবী পুরাণ, ভাগবত ও বাসনপুরাণে দেবী দুর্গার উল্লেখ রয়েছে। পুরাকালে শ্রী রামচন্দ্র দেবী সীতাকে উদ্ধার করতে দেবী দুর্গার পূজা করেছিলেন। শরৎকালে দেবী দুর্গার এই পুজোর নামকরণ হয় 'অকালবোধন' বা শারদীয়া দুর্গা পূজা। রামচন্দ্রের আরাধনায় সন্তুষ্ট হয়ে তাঁর বর দেন দেবী। শ্রী রামচন্দ্র রাবণকে নিহত করে সীতাকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন। সেই থেকে প্রতি বছর শরৎকালে দেবী দুর্গার পুজো করা হয়। এর আগে কালকেতু নামে এক ব্যাধ বসন্তকালে শ্রী চণ্ডীকে বাসন্তী নামে পুজো করতেন, তাই বসন্তকালের পুজোকে বাসন্তী পুজো বলা হয়।

বাংলায় দুর্গা পুজোর সূচনা কবে?

দুর্গা পুজো কবে শুরু হয়েছে তার যথার্থ তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে বাংলাদেশে সম্ভবত মোঘল আমল থেকেই দুর্গা পুজো শুরু হয় বলে অনুমান। বৈদিক যুগেও দেবী দুর্গার আরাধনার প্রমাণ মেলে। ইতিহাস মতে, দেবী দুর্গার পুজো আনুমানিক ১৫০০ শতকের শেষ দিকে প্রথম শুরু হয়। সম্ভবত, দিনাজপুর- মালদার জমিদার স্বপ্নাদেশের পর পারিবারিক ভাবে দুর্গা পুজো প্রথম শুরু করেছিলেন। 

১৭৯০ সালে গুপ্তিপাড়ার ১২ জন বন্ধু বা ইয়ার মিলে দুর্গা পুজোর ঐতিহ্যটি চালু করেন, একে বলা হত ‘বারো পল পূজা’। যাকে দুর্গার বারোয়ারি পুজো বলেও অভিহিত করা হয়। মনে করা হয়, কাশিমবাজারের রাজা হরিনাথ, কলকাতায় প্রথম দুর্গা পুজোর প্রচলন করেন। এরপরে ব্রিটিশ আমলের কলকাতায় প্রায় বহু বাড়িতেই দুর্গা পুজোর ইতিহাস পাওয়া যায়। সেসময় ব্রিটিশেরাও উদ্গ্রীব থাকতেন এই উৎসবে যোগ দিতে। রাজা নবকৃষ্ণ দেব যা শোভাবাজার রাজবাড়ী নামে খ্যাত, সেই বাড়িতে এক বছর নাকি দুর্গোৎসবে এমন খরচ করা হয়েছিল যা  প্রায় গ্র্যান্ড ফিস্টে পরিণত হয়। 

Advertisement

সেসময় জমিদার, বনেদি বাড়ি গুলিতেই ঘটা করে দুর্গাপুজো হতো। ১৯১০ সালে কলকাতায় প্রথম আনুষ্ঠানিক ভাবে বারোয়ারি পুজোর সুত্রপাত ঘটে। সম্ভবত সনাতন ধর্মতসাহিনি সভা, বাগবাজারে সর্বজনীন দুর্গোৎসবের সূচনা করে। দুর্গা পুজোর বিবর্তন বাড়ির পুজো, তারপর বারোয়ারি পুজো থেকে সবশেষে সর্বজনীন হয়ে ওঠে। বর্তমানে এই পুজো সারা বিশ্বের মানুষের কাছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে গেছে।
 

Advertisement