scorecardresearch
 

Adi Saptagram Fish Fair EXCLUSIVE: মৎস্য কিনিব, খাইব সুখে! বাংলায় মাছেরও মেলা হয়, ৫০০ বছরের প্রাচীন, কোথায়? দেখুন...

কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্মস্থান দেবানন্দপুর থেকে মাত্র ২ কিমি দূরেই কেষ্টপুর গ্রামের আমবাগানে বসে মেলা। রঘুনাথ দাস গোস্বামীর সাধনভূমি শ্রীপাট, ৫০০ বছরের বেশি সময় ধরে বৈষ্ণবদের মহান মিলনক্ষেত্র বলে পরিচিত এই জায়গাতেই বসে মেলা।

Advertisement
আদিসপ্তগ্রামে মাছের মেলা আদিসপ্তগ্রামে মাছের মেলা
হাইলাইটস
  • মেলায় কিনতে পারেন ভেটকি, পমফ্রেট, চিতল, শংকর, চিংড়ি-সহ নানা প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ
  • দরদাম করে কিনতে পারবেন সাধের ইলিশও
  • মেলায় পাওয়া যায় কাঁকড়াও

মাছে-ভাতে বাঙালি, এই প্রবাদ সবাই জানে। তা বলে একটা গোটা মেলা বসে মাছের জন্য! হ্যাঁ, সেটাই হয়ে আসছে ৫০০ বছরের বেশি সময় ধরে। ফি বছর পয়লা মাঘ হুগলি জেলার আদি সপ্তগ্রামের কেষ্টপুর গ্রামে মাছের মেলা বসে। ‘মৎস্য ধরিব, খাইব সুখে’ স্লোগানটা এখানে খাটে না। এখানে যেটা খাটে সেটা হল ‘মৎস্য কিনিব, খাইব সুখে।' কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্মস্থান দেবানন্দপুর থেকে মাত্র ২ কিমি দূরেই কেষ্টপুর গ্রামের আমবাগানে বসে মেলা। রঘুনাথ দাস গোস্বামীর সাধনভূমি শ্রীপাট, ৫০০ বছরের বেশি সময় ধরে বৈষ্ণবদের মহান মিলনক্ষেত্র বলে পরিচিত এই জায়গাতেই বসে মেলা। চুনো-পুঁটি থেকে রাঘব বোয়াল, সবই মাছই বিক্রি হয়।

সাধারণ মিষ্টি জলের রুই কাতলা তো আছেই। মেলায় কিনতে পারেন ভেটকি, পমফ্রেট, চিতল, শংকর, চিংড়ি-সহ নানা প্রজাতির সামুদ্রিক মাছও। দরদাম করে কিনতে পারবেন সাধের ইলিশও।

দেখা মিলতে পারে কোনও নাম না জানা মাছেরও। কোনও কোনও মাছের ওজন ১০০ কেজি পর্যন্ত। এছাডা়ও মেলায় পাওয়া যায় কাঁকড়াও। সেটাও দরদাম করে কিনতে পারেন।

ভোর থেকেই চলে বিকিকিনি। স্থানীয়রা তো বটেই আশপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষ ভিড় করেন এই মেলায়। পাশের জেলাগুলি থেকেও এখানে মাছ কিনতে ভিড় করেন মানুষজন।

৫১৫ বছর আগে কেষ্টপুরের রাজকুমার রঘুনাথ দাস গোস্বামী সন্ন্যাস গ্রহণের পর পয়লা মাঘ বাড়ি ফিরেছিলেন। সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিলেন কৃষ্ণমূর্তি। বাড়ি ফিরে তিনি মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তার সঙ্গেই জড়িয়ে মেলার ইতিহাস। কেষ্টপুর এলাকাটি ছিল সপ্তগ্রামের রাজা হিরণ্যদাস ও তাঁর ভাই গোবর্ধন মজুমদারের অধীনস্ত এলাকা। গোবর্ধনের ছেলে রঘুনাথ ছোটবেলা থেকে ধার্মিক। মাত্র ১৫ বছর বয়সে পায়ে হেঁটে চলে যান ওড়িশার মন্দির শহর পুরী। সেখানেই নিত্যানন্দ মহাপ্রভুর কাছে সন্ন্য়াস নেন তিনি। এরপর কেষ্টপুরে ফিরে পয়লা মাঘ মহাপ্রভুর দেওয়া কৃষ্ণমূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন। সেই থেকেই প্রতিবছর পয়লা মাঘ হয়ে আসছে এই মেলা।

Advertisement

অনেকেই মেলা থেকে মাছ সেদিন আর বাড়ি ফেরেন না। ওখানেই মাাছ কাটা-ধোয়া করে ভেজে খাওয়া হয়। অনেকে আজকের দিনে মাছ দিয়েই এখানে পিকনিক করেন। সেদিন আর মাংস হয় না। পাতে পড়ে হরেক রকমের মাছ।

মাছ মেলাকে কেন্দ্র করে পয়লা মাঘ গ্রামের প্রতিটি বাড়িতেই অতিথিদের আনাগোনা লেগেই থাকে। আসলে মাছ কেনার পাশাপাশি নানা ধরনের মাছ দেখার সুবর্ণ সুযোগ কেউ চট করে হাতছাড়া করতে চান না।

Advertisement