বাগবাজারে মায়ের ঘাট এবং গার্ডেন রিচে সুরিনাম ঘাটের সৌন্দর্যায়ন করবে গার্ডেন রিচ শিপবিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স (GRSE) লিমিটেড। GRSE-র কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (CSR) কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই প্রকল্পের লক্ষ্য ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই দুটি ঘাট সাজিয়ে তোলা হবে।
হুগলি নদীর তীরবর্তী 'মায়ের ঘাট' এবং 'সুরিনাম ঘাট'-র সংস্কারের পর কলকাতার ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করবে বলে আশাবাদী GRSE। এই উদ্যোগের জন্য গত ৬ অগাস্ট শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি পোর্টের জেনারেল ম্যানেজার রাজীব শ্রীবাস্ত, জিআরএসই এবং শান্তনু মিত্র, চিফ ইঞ্জিনিয়ার (এসএমপিকে) স্বাক্ষর করেন। জিআরএসই-এর চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর, কমান্ডার পিআর হরি, আইএন (অবসরপ্রাপ্ত) এবং এসএমপিকে-এর চেয়ারম্যান শ্রী রথেন্দ্র রমন এবং উভয় প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
কলকাতার আধ্যাত্মিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ
উত্তর কলকাতার বাগবাজার এলাকায় অবস্থিত মায়ের ঘাটের আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব রয়েছে। সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ হল সুরিনাম ঘাট। এই ঘাট থেকে পাল তোলা জাহাজ লাল্লাতে করে ২৬ ফেব্রুয়ারি, ১৮৭৩ সালে ৪১০ জন চুক্তিবদ্ধ শ্রমিক এবং তাদের পরিবার নিয়ে সুরিনামের ডাচ উপনিবেশের উদ্দেশে রওনা হয়েছিল। এই সুরিনাম থেকে ভারতীয় প্রবাস যাত্রার সূচনা হয়। পরবর্তী চার দশক ধরে, ১৯১৬ সাল পর্যন্ত মোট ৩৪,৩০৪ জন ভারতীয় ৬৩টি জাহাজে করে এই ঘাট থেকে যাত্রা করেছিলেন।
আজ, ১,৭৫,০০০-এরও বেশি ভারতীয় বংশোদ্ভূত মানুষ, সুরিনামের জনসংখ্যার ৩৫%-এরও বেশি। এই ঘাটে রয়েছে 'মাই বাপ' স্মৃতিস্তম্ভ। তাতে ঐতিহ্যবাহী পুঁটলি বয়ে নিয়ে যাচ্ছেন একজন ধুতি-পঞ্জাবী পরিহিত পুরুষ এবং শাড়ি পরা মহিলার ভাস্কর্য রয়েছে। হাতে দুটি ধর্মগ্রন্থ। অনেকে মনে করেন এটি রামায়ণ অথবা মহাভারত। এই দুই জায়গাকে ঐতিহাসিকভাবে সংরক্ষণ করতে উদ্যোগী GRSE।