দেশের মানুষের হাতের নাগালে এসে গিয়েছে ইলিশ। এখন বিদেশে রফতানি করা হবে এই রূপোলি ফসল। ইলিশ রফতানি নিয়ে এমনই সুখবর দিল বাংলাদেশ সরকার। তবে ইউরোপ বা অন্য দেশে কত পরিমাণ যাবে, আর ভারতে কত পরিমাণ আসবে তা এখনও কোনও ঘোষণা করেনি সরকার। তবে বাংলাদেশের পর ভারতই সবচেয়ে বেশি ইলিশ উপভোক্তা দেশ। তাই আশা করা হচ্ছে, ইলিশ দেওয়া হবে এ দেশকেও।
গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ সরকার খোকা ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারিতে কড়াকড়ি করেছে। পাশাপাশি বছরে একাধিকবার কয়েক দফায় ইলিশ সহ সমস্ত রকম মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। যার ফলে উৎপাদন বেড়েছে। ফলে এখন সস্তার পুঁটি বা রুইয়ের দামে ইলিশ পাচ্ছে বাংলাদেশের বেশিরভাগ এলাকা। এমনকী এপার বাংলাতেও শীতকালেও প্রচুর ইলিশ মিলেছে জেলেদের জালে। তার উপর আমদানি ঠিক থাকলে আগামী বর্ষাতেও ভাল রকম ইলিশ মিলবে বলে আশা করছে ভারতের অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবঙ্গও।
নিজেদের দেশের ইলিশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে চায় বাংলাদেশ বলে সেদেশের সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন বাংলাদেশের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী রেজাউল করিম। মন্ত্রী জানান, ইলিশ সম্পদ উন্নয়নের মধ্য দিয়ে আমরা বাংলাদেশের সমস্ত মানুষের হাতের নাগালে ইলিশ মাছ পৌঁছে দিতে চান তাঁরা। অর্থাৎ পুঁটি কিংবা রুইয়ের দরে ইলিশ মিলবে বলে আশা করছেন তাঁরা।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ দফতর এই উদ্দেশ্য়ে কাজ করছে। এ জন্য সে দেশের সরকার ইলিশ উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রতি বছর ৩১ মার্চ থেকে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত খোকা ইলিশ সংরক্ষণ সপ্তাহ উদযাপন করছে সরকার। কার্যক্রম বাস্তবায়নে সরকারি প্রচেষ্টার পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং আপামর জনসাধারণ বিশেষ করে মৎস্যজীবী সম্প্রদায় ও উপভোক্তাদের আন্তরিক সহযোগিতা প্রয়োজন। বাংলাদেশবাসীর কাছে তিনি অনুরোধ করেন,খোকা ইলিশ, কেনা বা বেচা এবং খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
বিশ্বের মোট আহরিত ইলিশের প্রায় ৮০ শতাংশের বেশি ধরা হয়। ছয় লাখের বেশি লোক ইলিশ ধরার সঙ্গে নিয়োজিত। ২০ থেকে ২৫ লাখ লোক ইলিশ পরিবহন,বিক্রয়, জাল ও নৌকা তৈরি, বরফ উৎপাদন প্রক্রিয়াজাতকরণ,রফতানি ইত্যাদি কাজে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত।
আগের ইলিশ ধরা প্রতিরোধ আইন সংশোধন করে জাটকা আহরণ নিষিদ্ধ সময় নভেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত ৮ মাস করা হয়েছে এবং জাটকার দৈর্ঘ্য ২৫ সেন্টিমিটার বা ১০ ইঞ্চি করা হয়েছে। বিগত ২০০৮ থেকে ২০০৯ অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন দুই লাখ ৯৮ হাজার টন, ২০২০-২১ অর্থবছরে তা বৃদ্ধি পেয়ে পাঁচ লাখ ৬৫ হাজার টনে উন্নীত হয়েছে। উৎপাদন ও প্রাপ্যতা বৃদ্ধির ফলে ইলিশ সকল শ্রেণি পেশার মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে এসেছে।’
এখন ইলিশ বাঁচিয়ে বড় করে যদি সস্তায় রফতানি করা সম্ভব হয়, তাহলে আপামর ইলিশপ্রেমীর জন্যই তা ভাল।