জাপানে (Japan) বেড়াতে গিয়েছে কখনও? আমাদের মধ্যে অনেকেই গিয়েছেন, আবার অনেকেই যাননি। যারা জাননি তাঁরাই যদি হাতের নাগালে জাপান দেখতে পান কেমন হবে? চলুন খোলসা করা যাক। আসলে কলকাতার মধ্যেই রয়েছে এক টুকরো জাপান। সেটা দেখতে যেতে হবে নিউ টাউনের ইকো পার্কে। ভারতের সবচেয়ে বড় পার্ক হল এই ‘প্রকৃতি তীর্থ’। জায়গাটি অবশ্য ‘ইকো পার্ক’ (Eco Park) নামেই বেশি পরিচিত।
ল্যান্ডস্কেপ ডিজাইনের অভিব্যক্তিতে জাপান সবসময়ই অগ্রণী। জাপানি বাগানের নকশার কেন্দ্রবিন্দু হল প্রকৃতির প্রতি উপলব্ধি এবং সম্মান। জাপানি গার্ডেন ডিজাইনের নীতিতে মুগ্ধ হয়ে HIDCO ইকো পার্কের সেন্ট্রাল লেকের পাশে পার্কের সাড়ে তিন একর জায়গায় একটি আকর্ষণীয় জাপানি ফরেস্ট (Japanese Forest) তৈরি করেছে। ওই এলাকায় উন্নয়নমূলক কাজের সময় এক শ্রমিক গৌতম বুদ্ধের একটি পুরনো ভাস্কর্য (Gautama Buddha Sculpture) দেখতে পান। ফলস্বরূপ জাপানি ফরেস্ট গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন: Rosogolla In kolkata: রসগোল্লা আবার চ্যাপ্টা হয় নাকি? এ 'জিনিস' কলকাতাতেই মেলে, কোথায়?
জাপানের ঐতিহ্যবাহী ধর্ম শিন্টো। প্রকৃতিতে দেবতা মনে করেন জাপানিরা। তাই নিজেদের সংস্কৃতির মতো জাপান প্রকৃতির উপাদানগুলিকে দেবতা হিসাবে পুজো করে। তাদের বাগানগুলি ধ্যান এবং মননের জন্য স্থান হিসাবে গড়ে তোলা হয়। এই বাগান সাজিয়ে তোলার ক্ষেত্রে বৌদ্ধধর্মের সমস্ত অভিব্যক্তি গভীরভাবে জড়িয়ে রয়েছে।
ইকো পার্কের জাপানি ফরেস্ট (Japanese Forest - Eco Park) সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই ডিজাইন করা হয়েছে। বাগানের ডিজাইন দর্শনার্থীদের পাঁচটি ইন্দ্রিয়ের সঙ্গে সংযোগ করে। সবুজ পাতার সমাহার, মঠের ঘণ্টার চিত্তাকর্ষক শব্দ, সেইসঙ্গে একটি জলপ্রপাত, একবারে মনোমুগ্ধকর পরিবেশ। যা আপনার মনে ইতিবাচকতা এনে দেবে। এছাড়াও, সুগন্ধি জাতের গাছের সমৃদ্ধ মিশ্রণ পুরো ঋতু জুড়ে পরিবেশকে মনোরম সুগন্ধে ভরিয়ে তোলে।
কী কী দেখতে পাবেন:
বাঁশবন: এখানে বিভিন্ন ধরনের বাঁশ জৈবভাবে রোপণ করা হয়। পাথরের লণ্ঠন এবং আবর্জনাযুক্ত ভাস্কর্যগুলি স্বর্গীয় অনুভূতি তৈরি করার জন্য সাজানো হয়েছে।
ছোট বুদ্ধ ভাস্কর্য: ছোট স্মাইলিং বুদ্ধ ভাস্কর্য প্রবেশদ্বারের কাছে দর্শকদের স্বাগত জানাবে।
উইস্টেরিয়া আর্বার: আর্বার যে কাউকে বহির্বিশ্ব থেকে সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন করে দেবে এবং তাঁকে প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম করে দেবে।
বৌদ্ধ মঠ ও প্যাগোডা: এখানে একটি বৌদ্ধ মঠ রয়েছে। মাঝে রয়েছে প্যাগোডা।
ঢিবির উপর বন: উঁচু ঢিবির উপর পুরু গাছ লাগানো হয়েছে। যারা মনোরম দৃশ্য আপনার মত শান্ত করে দেবে।
পুকুর: জল জাপানি বাগানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। একটি জাপানি অর্ধবৃত্তাকার সেতু দিয়ে একটি পুকুর তৈরি করা হয়েছে।
উইশ ফাউন্টেন উইথ জাপানিজ ডেমি গড: দ্য গড অফ ফরেস্ট।
বাঁশের আলো: বাঁশের কাণ্ডে ভিতর দিয়ে প্রাকৃতিক আলোর কারসাজি।
জাপানি ফুড আউটলেট: খাঁটি জাপানি খাবার পরিবেশন করে এমন একটি খাদ্য আউটলেট। এখানে বিভিন্ন ধরনের জাপানি খাবার পাবেন। চাইলেই পরিবার বা বন্ধুদের নিয়ে ঢুঁ মারতে পারেন।
লেক ভিউ লন:এই লন দিয়ে হাঁটতে থাকলে উপরে উল্লেখ করা সমস্ত জিনিস দেখতে পাবেন। দুধারে গাছ, মাঝখান পাথর বসানো রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আপনার মন ও শরীর দুটোই ফুরফুরে হয়ে উঠবে।
কীভাবে যাবেন: নিউ টাউনের ইকো পার্কের ১ নম্বর গেট ও আইফেল টাওয়ারের মধ্যে এই জাপানি ফরেস্ট অবস্থিত।
যাওয়ার সময়: দুপুর ১২:০০-সন্ধ্যা ৭:৩০
প্রবেশ মূল্য: বিনামূল্যে