Kaushiki Amavasya 2025: কিশোর রবীন্দ্রনাথকে দেখেই কী বলেছিলেন বাকসিদ্ধ বামাক্ষ্যাপা? তারাপীঠের যে ঘটনাগুলি আজও রহস্য

শোনা যায়, মা অন্নপূর্ণা নিজে হাতে অন্নভোগ খাইয়েছিলেন সাধক বামদেবকে। যদিও পুরানবিদদের একাংশের দাবি, বামাক্ষ্যাপার জন্মের বহু আগে থেকেই এই মন্দির এক মহাতীর্থ ছিল, ব্রহ্মার মানসপুত্র বশিষ্ঠ ঋষি এই তারাপীঠে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন।

Advertisement
কিশোর রবীন্দ্রনাথকে দেখেই কী বলেছিলেন বাকসিদ্ধ বামাক্ষ্যাপা? তারাপীঠের যে ঘটনাগুলি আজও রহস্যকৌশিকী অমাবস্যা ২০২৫
হাইলাইটস
  • মা অন্নপূর্ণা নিজে হাতে অন্নভোগ খাইয়েছিলেন সাধক বামদেবকে
  • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে দেখেই ভবিষ্যত্‍ বলে দিয়েছিলেন বামাক্ষ্যাপা
  • মা তারার অষ্টরূপ, দেবী পুজিত হন বৌদ্ধতন্ত্রেও

দিনটা বড় শুভ। হ্যাঁ, আজ রাতেই তো কৌশিকী অমাবস্যা। লক্ষ লক্ষ ভক্তের ভিড় তারাপীঠে। ভক্তদের বিশ্বাস, কৌশিকী অমাবস্যায় মা তারাকে একটি বার দর্শনেই জীবনের সব অশান্তি, দুঃখ, কষ্ট দূর হয়ে যায়। কৌশিকী অমাবস্যার রাতে তারাপীঠে বহু ঐশ্বরিক ঘটনা ঘটে বলে কথিত। তারাপীঠের মহাশ্মশানে গা ছমছমে পরিবেশ। চারিদিকে রাতভর যজ্ঞ, তন্ত্রসাধনা। এই শ্মশানেই তো সাধনায় সিদ্ধিলাভ করেছিলেন বামাক্ষ্যাপা। সেই সাধনা এতটাই শক্তিশালী ছিল যে, বামাক্ষ্যাপা মৃতদেহকে বাঁচিয়ে দিতে পারতেন বলে শোনা যায়। মা তারার ক্ষ্যাপা ছেলে বামাকে দু হাত ভরে আশীর্বাদ করেছিলেন দেবী। 

মা অন্নপূর্ণা নিজে হাতে অন্নভোগ খাইয়েছিলেন সাধক বামদেবকে

কথিত আছে, বামাক্ষ্যাপা ছিলেন বাকসিদ্ধ। তাঁর কথা নাকি, অক্ষরে অক্ষরে মিলে যেত। বামাচরণ চট্টোপাধ্যায় ছেলেবেলায় গৃহত্যাগ করে কৈলাশপতি বাবা নামে এক সন্ন্যাসীর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। কৈলাশপতি বাবা তারাপীঠে থাকতেন। তখন তারাপীঠ ছিল বীরভূমের একটি অজ পাড়াগ্রাম। তারা মায়ের ক্ষ্যাপা সন্তান। তাই নাম হয়ে যায় বামাক্ষ্যাপা।  তারাপীঠেই দ্বারকা নদীর তীরে যোগ ও তন্ত্রসাধনা করেন।

সাধক বামাক্ষ্যাপা
সাধক বামাক্ষ্যাপা

পরে তিনি নিকটবর্তী মল্লরাজাদের মন্দিরময় গ্রাম মালুটি (অধুনা ঝাড়খণ্ড রাজ্য)তে যান যোগ সাধনার জন্য। সেখানে দ্বারকার তীরে মৌলাক্ষী দেবীর মন্দিরে সাধনাকালে প্রায় ১৮ মাস অবস্থান করেন। শোনা যায়, মা অন্নপূর্ণা নিজে হাতে অন্নভোগ খাইয়েছিলেন সাধক বামদেবকে। যদিও পুরানবিদদের একাংশের দাবি, বামাক্ষ্যাপার জন্মের বহু আগে থেকেই এই মন্দির এক মহাতীর্থ ছিল, ব্রহ্মার মানসপুত্র বশিষ্ঠ ঋষি এই তারাপীঠে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন।

তারাপীঠের মন্দির
তারাপীঠের মন্দির

কৌশিকী অমাবস্যার সেই রাতে শ্মশানে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন বামদেব। বিখ্যাত হল তারাপীঠ। তারা মায়ের চরণভূমি। ১২৭৪ বঙ্গাব্দে কৌশিকী অমাবস্যায় তারাপীঠ মহাশ্মশানে শ্বেতশিমূল বৃক্ষের তলায় সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। কৌশিকী অমাবস্যার তিথিতেই কৌশিকী রূপে মা তারা শুম্ভ-নিশুম্ভ নামক অসুরদের দমন করেছিলেন বলে লেখা রয়েছে পুরানে। তন্ত্রসাধনার ১০ মহাবিদ্যার দ্বিতীয় মহাবিদ্যা হলেন মা তারা।

তারাপীঠের মহাশ্মশান
তারাপীঠের মহাশ্মশান

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে দেখেই ভবিষ্যত্‍ বলে দিয়েছিলেন বামাক্ষ্যাপা

Advertisement

ইতিহাস বলছে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে একবার চারণকবি মুকুন্দ দাস গিয়েছিলেন তারাপীঠে। তখন বামাক্ষ্যাপা জীবীত। সারাদিন অপেক্ষার পরে সন্ধ্যায় বামদেব দর্শন দেন। কিশোর রবিকে দেখেই বামদেব বলে দিয়েছিলেন, 'তোর খুব নাম-ডাক হবে।' ঠিক তাই ঘটেওছে। 

মা তারার অষ্টরূপ, দেবী পুজিত হন বৌদ্ধতন্ত্রেও

মা তারার মোট আট ধরনের প্রতিমার উল্লেখ পাওয়া যায় পুরানে। তারা, উগ্রতারা, মহা উগ্রতারা, বজ্রা, নীলা, সরস্বতী, কামেশ্বরী ও ভদ্রকালী। ভদ্রকালীর পরিবর্তে কোথাও কোথাও চামুণ্ডার নামও পাওয়া যায়। বৌদ্ধতন্ত্রেও মা তারার সাধনার রীতি রয়েছে।

 

POST A COMMENT
Advertisement