এবার উত্তরবঙ্গে ঘাঁটি গাড়তে চলেছে বাংলাদেশের ইলিশ। তার মানে পদ্মা-মেঘনার ইলিশ পাওয়া যাবে উত্তরবঙ্গে বসেই। সুস্বাদু রূপোলি ফসল পেতে উত্তরবঙ্গবাসীকে আর কলকাতা হয়ে ঘুরে আসার জন্য় অপেক্ষা করতে হবে না। কারণ মালদাতেই এখন থেকে আইনি পথে বৈধ ইলিশ পাবেন খদ্দেররা। তবে পরে দক্ষিণবঙ্গের সীমান্তেও চালু হতে পারে এই একই ধরণের হাট।
ইন্টারন্যাশনাল হাট
ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ককে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পদক্ষেপ করা হয়েছে। মালদা সীমান্তের জিরো পয়েন্টে বসতে চলেছে ইন্টারন্যাশানাল হাট (International Haat)। এখানে দুই দেশের পণ্যসামগ্রী কেনা বেচার সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের ইলিশের পাশাপাশি অন্যান্য সামগ্রী যেমন মিলবে, তেমনই এ বাংলার লোভনীয় জিনিসগুলিও বাংলাদেশী গ্রাহকরা কিনে নিয়ে যেতে পারবেন অনায়াসেই। যেহেতু জিরো পয়েন্টে হাট বসছে, তাই কাউকেই ভিসা-পাসপোর্টের ঝক্কি সামলাতে হবে না। সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গের পাঁচটি সীমান্ত জিরো পয়েন্টে হাট খোলার পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
মালদা থেকে বিএসএফ সূত্রে পাওয়া খবরে জানা হিয়েছে, প্রাথমিকভাবে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে ইন্টারন্যাশনাল হাট চালুর পরিকল্পনা করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ ও ভারত দু'দেশের সরকারের মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে বলে খবর।
কীভাবে হবে জমি অধিগ্রহণ?
হাট তৈরি করারৃ জন্য দু'দেশের কিছুটা করে জমি অধিগ্রহণ করা হবে। জিরো পয়েন্টে বাংলাদেশ ও ভারতের (পশ্চিমবঙ্গ)-এর অংশে ৭৫ মিটার করে জমি অধিগ্রহণ করে যৌথভাবে তৈরি হবে হাট। দুই দেশের সীমান্ত এলাকার পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে বসবাসকারী বাসিন্দারা হাটে তাঁদের সামগ্রী বিক্রি করতে পারবেন। হাট চলাকালীন দুই দেশের তরফেই কড়া নিরাপত্তা জারি করা থাকবে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মোতায়েন থাকবে দুদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। প্রয়োজনে নিকটবর্তী থানার পুলিশও রাখা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।
দু'পাশেই হবে অর্থনৈতিক বিকাশ
উত্তর মালদার সাংসদ খগেন মূর্মূ এ বিষয়ে বলেন, আত্মনির্ভর ভারত গড়ার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। তারই অঙ্গ হিসেবে এমন উদ্যোগ। এতে সীমান্ত যেমন জমজমাট হবে, দু-দেশের লাগোয়া এলাকায় ব্যাপক অর্থনৈতিক পরিবর্তন ঘটবে।
কী কী পাওয়া যাবে হাটে ?
উল্লেখ্য, এই হাটে সবজি ছাড়াও খাদ্যশস্য, মিষ্টি, দই, মধু, আম মাছ-মাংস, ডিম, কাপড়, দুদেশের আকর্ষণীয় পণ্য সামগ্রী বিক্রি হবে। তবে বহুজাতিক কোম্পানির কিছু এখানে মিলবে না। সম্পূর্ণটাই হবে কুটির ও ক্ষুদ্রশিল্প জনিত জিনিসের বাজার। তবে বাকি যাই থাক না কেন বাংলাদেশের তরফে মালদার ফজলি আম কিংবা মুর্শিদাবাদের ল্যাংড়া আমে নজর যেমন থাকবে, ভারতীয়দের বা এপার বাংলার বাঙালিদের নজর থাকবে পদ্মা-মেঘনার রূপোলি ইলিশের দিকেই। আগামী ৬ মাসের মধ্যেই এটি চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।