আর কয়েকদিন পরেই সরস্বতী পুজো। বিদ্যাদেবীর আরাধনার মাতবেন বঙ্গবাসী। এই বছর ২৬ জানুয়ারী পড়েছে সরস্বতী পুজো। আর সরস্বতী পুজো মানে কচিকাঁচা তথা ছাত্রছাত্রীদের মনে যেন বাড়তি আনন্দ। কারণ এই পুজোর সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে থাকে পড়ুয়ারা। আমারা প্রায় প্রত্যেকেই ছোটবেলায় বাড়ির পুজোর পাশাপাশি স্কুল বা পাড়ার সরস্বতী পুজোর সঙ্গে যুক্ত থেকেছি। এই প্রতিবেদনে ছোটবেলার সেই সমস্ত সরস্বতী পুজোরই কিছু ভুলতে না পারা স্মৃতি রোমন্থন করা হবে।
ঘর সাজানো - কমবেশি প্রায় প্রত্যেক বাড়িতেই সরস্বতী পুজো হয়। যেহেতু আগেই বলা হয়েছে এই পুজোর সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকে ছাত্রছাত্রীরা, তাই বাগদেবীর আরাধনা উপলক্ষ্যে ঘর সাজানোর দায়িত্বও থাকতো তাঁদের ওপরেই। রঙিন কাগজ না প্লাস্টিকের শিকলি-সহ আরও বেশকিছু উপকরণ দিয়ে পুজোর আগের দিন ঘর সাজানোর কাজ আমরা প্রায় সকলেই করেছি, যা আজও স্মৃতির সরণিতে অমলিন।
দেবীর চরণে বই ও পেন - সরস্বতী যেহেতু বিদ্যার দেবী, তাই তাঁর কাছে বই রাখার প্রচলন আজও আছে। একটা সময় সরস্বতী পুজোর কয়েকদিন পরেই আয়োজিত হত বার্ষিক পরীক্ষা। তাই যার যে কিছু দুর্বলতা রয়েছে, সে সেই বইটিই দেবীর কাছে রাখত। কেউ কেউ আবার যে পেন দিয়ে পরীক্ষা দেবে বলে মনোস্থির করেছে, সেটিও রেখে দিত দেবীর চরণে। আশা একটাই, মায়ের আশার্বাদে পরীক্ষা যেন ভাল হয়।
অন্য স্কুলে নিমন্ত্রণ - স্কুলে সাধারণত একটু উঁচু ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদের দেওয়া হত পুজো পরিচালনার দায়িত্ব। পুজোর ক'দিন আগে থেকেই শুরু হয়ে যেত জোরকদমে প্রস্তুতি। ঠাকুর আনা থেকে প্রসাদ বিতরণ, সব কাজেই দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হত। আর তার সঙ্গে চলত অন্যস্কুলে নিমন্ত্রণের পালা, কিশোর বয়সে যা হয়ে উঠত রীতিমতো রোমাঞ্চকর।
পাড়ার পুজো, চাঁদা তোলা ও রাত জাগা - বাড়ি ও স্কুলের পুজোর পাশাপাশি অনেই যুক্ত থাকত পাড়ার পুজোর সঙ্গেও। আর সেই পুজোয় সকলের সঙ্গে মিলে চাঁদা তোলা, ঠাকুর আনা বা রাত জাগার মধ্যে ছিল এক আলাদরকম উত্তেজনা। আসলে সারাবছর পড়াশোনার চাপ ও কড়া শাসনের মাঝে ওই ক'টা দিন ছিল যেন এক অঘোষিত মুক্তি।
মনের মানুষের সঙ্গে চোখাচুখি - সরস্বতী পুজো মানেই বাঙালির ভ্যালেন্টাইন ডে। ওইদিন হলুদ শাড়ি-পাঞ্জাবিতে আজও দেখা দেখা যায় যুবক-যুবতী, তরুণ-তরুণীদের। আমাদের ছোটবেলাতেও তার ব্যতিক্রম ছিল না। আর সবচেয়ে বড় কথা, সেই দিন হলুদ রঙে নিজেকে সাজিয়ে নিয়ে মনের মানুষের সঙ্গে ঘুরতে বেরনো বা কমপক্ষে একটু চোখাচুখি যেন বুকের মধ্যে ঝড় তুলতো, যা কোনওদিনই ভোলার নয়।
আরও পড়ুন - যথেচ্ছ মোমো খাচ্ছেন? ক্ষতি জানলে মুখে তোলার আগে ১০ বার ভাববেন