এই বছরের শেষ সূর্যগ্রহণ ঘটছে আজ, ২১ সেপ্টেম্বর, রবিবার রাতে। তবে এই গ্রহণ ভারতের আকাশে দেখা যাবে না। কারণ, এটি হবে মূলত রাত ১০টা ৫৯ মিনিটে শুরু হয়ে শেষ হবে ভোর ৩টা ২৩ মিনিটে। ভারত তখন ঘুমোচ্ছে, তাই গ্রহণ দৃশ্যমান হবে না। কিন্তু জ্যোতিষ ও ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে এই গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সূর্যগ্রহণটি হবে কন্যা রাশিতে এবং উত্তরা ফাল্গুনী নক্ষত্রে। যদিও ভারত থেকে দেখা যাবে না, তবুও যেহেতু এটি একটি গ্রহন, তাই কিছু ধর্মীয় নিয়ম অনেকেই মানেন। তবে ভারতের জন্য কোনও সূতককাল প্রযোজ্য নয়। তাই মন্দিরের দরজা বন্ধ হবে না, পুজো-আর্চাও হবে আগের মতোই।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই গ্রহণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও অ্যান্টার্কটিকার কিছু অংশ থেকে দেখা যাবে। সবচেয়ে ভালোভাবে দেখা যাবে নিউজিল্যান্ডের ডুনেডিন শহর থেকে।
যাঁরা শাস্ত্র অনুযায়ী নিয়ম মানেন, তাঁদের জন্য পরামর্শ, মন্ত্রপাঠ, ধ্যান বা জপ করা যেতে পারে। গ্রহন শেষ হলে গঙ্গাজল ছিটিয়ে ঘর পরিশুদ্ধ করার চলও রয়েছে।
পরবর্তী সূর্যগ্রহণ হবে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে, তবে সেটিও ভারতের আকাশে দেখা যাবে না। তাই আজকের গ্রহণ মূলত আধ্যাত্মিক উপলক্ষ হিসেবেই গুরুত্ব পাচ্ছে, চোখে দেখার নয়।
সময়সূচি (ভারতীয় সময়ানুযায়ী, IST)
সূর্যগ্রহণ শুরু হবে রাত ১০: ৫৯ ২১ সেপ্টেম্বর এ।
গ্রহণের সীমার্ধ মুহূর্ত (পিক টাইম) হবে রাত ১: ১১, ২২ সেপ্টেম্বরের দিকে।
এটি শেষ হবে রাত ৩:২৩ সময় অনুযায়ী।
মোট দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ৪ ঘণ্টা ২৪ মিনিট।
রাশিচক্র ও নক্ষত্র
গ্রহণটি ঘটবে কন্যা রাশি‑তে এবং উত্তরা ফাল্গুনি নক্ষত্র‑তে।
দৃশ্যমানতা ও সূতককাল
ভারত থেকে এই গ্রহন দেখা যাবে না।
তারপরে এর কারণে সূতককাল (শাস্ত্রানুগ আচরণ যা গ্রহণকালীন সময় অতীত থেকে শুরু হয়ে গ্রহণ শেষ হওয়ার পর কিছু সময় পর্যন্ত পালন করা হয়) ভারতবর্ষে প্রযোজ্য হবে না।
এই সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে:
নিউজিল্যান্ডে (বিশেষত ডুনেডিনে, যেখানে প্রায় ৭২% পর্যন্ত সূর্য ঢাকা পড়বে)
পূর্ব অস্ট্রেলিয়া
অ্যান্টার্কটিকা এবং দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের কিছু অঞ্চলসমূহ
ধর্মীয় ও আচার-অনুষ্ঠান সংক্রান্ত দিকনির্দেশনা
যদিও ভারত থেকে গ্রহন দেখা যাবে না, তবু জ্যোতিষ ও সংস্কৃতিক বিশ্বাস অনুযায়ী কিছু নিয়ম ও সতর্কতা দেওয়া হয়েছে:
সাধারণভাবে সূর্যগ্রহণের সময় মন্ত্রপঠন, ধ্যান ও শুদ্ধ মনোভাব বজায় রাখার পরামর্শ।খাওয়াদাওয়া, শুষ্ক মাংস, তীক্ষ্ম শস্ত্র বা রন্ধন-বান্নার কাজ এ সময় এড়িয়ে চলা ভালো। যদিও ভারতের প্রেক্ষাপটে সূতককাল প্রযোজ্য নয় বলে এসব নিয়ম কঠোরভাবে লাগু হবে না।
গ্রহন শেষে গঙ্গাজল ছিটিয়ে ঘর পরিষ্কার করা, দানদান করা ও অন্নসংস্কার (দারিদ্র্য দূর করার অভ্যাস) ভালো কাজ হিসেবে ধরা হয়।
পরবর্তী গ্রহন ও ভবিষ্যতের তারিখ
পরবর্তী সুর্যগ্রহণ হবে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৬‑এ। তবে সেটিও ভারতের আকাশে দৃশ্যমান হবে না বলে জানা গিয়েছে। সূর্যগ্রহণ যেমন এক বিজ্ঞান-আধারিত মহাজাগতিক দেহবিন্যাস, তেমনি মানুষের বিশ্বাসে ও আচার-অনুষ্ঠানে একটি বৃহত্তর সামাজিক ও আধ্যাত্মিক উপাদান হিসেবে বয়ে আনে উদ্বোধন, সতর্কতা ও পুনর্জাগরণের অনুভূতি। এই অনন্য সময়টি যদি আমাদের সচেতনভাবে কাটে, তাহলে শুধু ভয় নয়, বরং নন-দৃশ্যমান হলেও তার প্রভাব অনুভব করা যেতে পারে। শান্তি, পরিমিতি ও সহানুভূতির দিকে মনোযোগ বাড়িয়ে।