"নো ভ্যাক্সিন,নো ওয়ার্ক।" আর "নো ওয়ার্ক নো পে"। চা বলয়ে করোনা প্রতিরোধে কঠিন সিদ্ধান্ত নিল উত্তরবঙ্গের চা মালিক সংগঠন। দ্বিতীয় ডোজ না নিলে শ্রমিকরা আর বাগানে কাজে যোগ দিতে পারবে না।
টিকায় অনীহা
এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডুয়ার্স ব্রাঞ্চ অব ইণ্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিআইটিএ) এবং টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইণ্ডিয়া(টাই)। তবে করোনার প্রথম ডোজ নিলেও পরবর্তীতে দ্বিতীয় ডোজ নিতে একশ্রেণির শ্রমিকদের মধ্যে প্রবল অনীহা দেখা দিয়েছে।
হাঁড়িয়া ও মদ খাওয়া যাবে না, তাই টিকা নেয় না
শ্রমিকদের দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার কারণ হিসেবে বাগান কর্তৃপক্ষের ধারণা যে ইতিমধ্যেই চা শ্রমিক মহল্লায় রটে গিয়েছে যে দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পর টানা পনের দিন মদ কিংবা হাঁড়িয়া খাওয়া যাবে না। আর সেই কারণেই বেশিরভাগ শ্রমিক দ্বিতীয় ডোজ নিতে প্রবল অনীহা দেখাচ্ছে।
চিন্তিত বাগান কর্তৃপক্ষ
আলিপুরদুয়ারের মাঝেরডাবরি চা বাগানের ম্যানেজার চিন্ময় মজুমদার বলেন আদিবাসী মহল্লার বেশিরভাগ মানুষ মাদকাসক্ত। ওদের সমাজে রটে গেছে এই বিষয়টি। তাই দ্বিতীয় ডোজ না নিতে ওদের যে অনীহা তাঁর একটা কারণ এই মদ না খেতে পারার ভয় হতে পারে।
জোর করে টিকা
দ্বিতীয় ডোজ নিতে বেশির ভাগ চা শ্রমিকদের কিছুতেই হাসপাতালমুখী করা বা বাগানের টিকা দেওয়ার শিবিরে আনা যাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে শ্রমিকদের জন্য ওই দু’টি চা মালিক সংগঠন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উত্তরবঙ্গে ডিবিআইটিএ’র ৮৯টি চা বাগান আছে। অন্যদিকে, টাইয়ের বাগান আছে ৪৫টি। বাগানে কাজ করার সময় ভিড় তেমন হয় না বলে কোনও বাগানেই এর আগে ও পরে করোনার ছোবল সেরকম ছিল না।
ডিবিআইটিএ’র সম্পাদক সঞ্জয় বাগচি বলেন, আমরা গত এক বছর ধরে বার বার শ্রমিকদের দ্বিতীয় ডোজ নিতে অনুরোধ করছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হল শ্রমিকরা কিছুতেই কথা শুনছে না। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। তাই বাধ্য হয়ে আমাদের ৮৯ টি বাগানে এই কড়া অবস্থান নিতে হয়েছে।
টাইয়ের উত্তরবঙ্গের চেয়ারম্যান চিন্ময় ধর বলেন, আমরা ইতিমধ্যেই আমাদের ৪৫টি বাগানে সমীক্ষা করে দেখেছি অনেক শ্রমিক এখনও দ্বিতীয় ডোজ নেয়নি। এর ফলে যে কোন মুহুর্তে বাগানে করোনা ও তার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রমন ছড়াতে পারে। সেজন্যই আমরা সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি যে স্থায়ী শ্রমিকরা এখনও দ্বিতীয় ডোজ নেয়নি তাঁদের আর বাগানে কাজ দেব না।