কেউ দিল্লি, কেউ বেঙ্গালুরু, দেশের বিভিন্ন রাজ্যে কর্মসংস্থানের টানে প্রতিনিয়ত জেলার যুবকরা পাড়ি দিচ্ছে। রাজ্যে বা জেলায় কাজ নেই। নিজেদের সংসার চালাতে চাই অর্থ, চাই কাজ। তাই পেটের টানে জেলার যুবকরা পাড়ি দিচ্ছে বিভিন্ন রাজ্যে। জেলার যুবকরা করোনা কালে কিছুদিন বাড়িতে কাটিয়ে ফের এখন পরিযায়ী শ্রমিক।
মালদা স্টেশনে রোজগার ছবি
মালদা টাউন স্টেশনে গেলে প্রতিদিনই দেখা যায় সেই ছবি। দিল্লি-ফারাক্কা এক্সপ্রেস, গুয়াহাটি-ব্যাঙ্গালোর সহ আরও বেশ কিছু ট্রেনে করে বাইরে যাচ্ছে জেলার যুবকরা। প্রতিদিনই প্রায় জেলাসহ প্রতিবেশী আরও দুই জেলা, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, থেকেও যুবকরা ভিন রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছে।
দালালদের মাধ্যমে পয়সা দেওয়া সম্ভব নয়
মালদার বামনগোলা ব্লকের পাকুয়া এলাকার এক যুবক পরিতোষ মন্ডল দীর্ঘ ২ বছর ধরে ব্যাঙ্গালুরুতে ফাইভস্টার হোটেলে কাজ করে। তার কথায়, পড়াশোনা করেও কোনও লাভ হচ্ছে না। আমাদের মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেদের চাকরি পাওয়া মুখের কথা নয়। পশ্চিমবঙ্গে দালালদের মাধ্যমে টাকা দিয়ে চাকরি পেতে হচ্ছে। আজকে বেশি পড়াশোনা করলেও এই রাজ্যে চাকরি পাওয়া যাচ্ছে না। কাজের পারিশ্রমিকও অত্যন্ত কম। তাই আজকে পরিযায়ী শ্রমিক এর মত ভিন রাজ্যে কাজ করতে যেতে হচ্ছে।
বাইরে শ্রম দিলে ১২ হাজার ৫০০
অন্যদিকে আরেক জন শ্রমিক মালদার বামনগোলা থানার বাসুরা এলাকায় তার বাড়ি ভবতোষ মন্ডল জানান, এলাকায় কাজ পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু টাকা খুব কম। সেই টাকাতে সংসার চালাতে গেলে হিমশিম খেতে হচ্ছে। প্রায় পাঁচ বছর ধরে ব্যাঙ্গালুরুতে কাজ করছন। যেখানে কাজ করছে সেখানে ১২ হাজার ৫০০ টাকা বেতন।সরকারি সুযোগ-সুবিধা আমরা ঠিকমতো পাচ্ছি না তাই আজকে কাজের টানে বাইরে যেতে হচ্ছে।
বামেদের বেকারত্ব তৃণমূল বাড়িয়েছে
এ বিষয়ে জেলা বিজেপির সভাপতি গোবিন্দ চন্দ্র মন্ডল জানান ৩৪ বছরে বামপন্থীদের রাজত্ব করেছে প্রায় লক্ষ লক্ষ বেকার করে চলে গিয়েছে। কল কারখানা নষ্ট করে গিয়েছে। তারপর ১১ বছর আগে তৃণমূল কংগ্রেসের আমলে বেকাররা আরও বেকার হয়ে গিয়েছে। শুধু মালদা জেলার ক্ষেত্রে বলতে পারি প্রায় ৪ লক্ষ ৬০ হাজার মানুষ বাইরে যাচ্ছে কাজ করতে। তার মধ্যে মাস্টার ডিগ্রি, বিএ পাস ছেলে রয়েছে। তারা আজকের পরিযায়ী শ্রমিক হয়ে রয়েছে ।
পরিযায়ীদর জন্য কাজ শুরু করেছে তৃণমূল!
এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি মালদা শাখা সভাপতি শুভদীপ সান্যাল জানান এই বিষয়ে আমরা সুনির্দিষ্টভাবে আমাদের রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আমাদের দলের আইএনটিটিইউসি রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আমরা আলোচনা করে এখানে আমাদের কাজ শুরু করেছি।
ডাটাবেস তৈরি করছে তৃণমূল
তিনি জানান,একটা ডাটাবেস তৈরি করা হচ্ছে। কে কোন কাজ করে তা জানা হচ্ছে। আগামী দু-তিন মাসের মধ্যে আমরা আশা করি তৈরি এর ডাটা করে নিতে পারব। আমাদের একটা সফটওয়্যার কোম্পানির সঙ্গে কথা হয়েছে ব্যাঙ্গালোরে। তারাও আমাদের সাহায্য করবেন।
সরকারি স্কিমের প্রচার করছেন তাঁরা
আমরা শুরু করেছি এখন এই কাজটা করতে গিয়ে আমাদেরকে স্বাভাবিকভাবেই আমাদের সংগঠনের কর্মীদের কে ব্লক স্তরে বুথ স্তরে সেখানটায় নামতে হবে। পরিযায়ী শ্রমিক যারা আজকের দিন রাজ্যের বাইরে কাজে চলে যাচ্ছে, তাঁদের সঙ্গে কথা বলা হবে। সরকারের বিভিন্ন স্কিমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে কাজগুলো কাজগুলো করছেন, সেই কাজ সম্পর্কে তাদেরকে ওয়াকিবহাল করা হবে।