বছরের শেষ চন্দ্রগ্রহণ খুবই বিশেষ হতে চলেছে। ভারত-সহ পৃথিবীর একাধিক দেশ থেকে ৭ সেপ্টেম্বর, রবিবার দেখা যাবে পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ। এদিন রাত ৯টা থেকে গভীর রাত (ভারতীয় সময়) পর্যন্ত চলবে এই গ্রহণ। এই গ্রহণের সময় আকাশে দেখা যাবে রক্তবর্ণ চাঁদ। কিন্তু কেন এই চাঁদের রং রক্তিম হয়, এর কারণ অনেকেই জানেন না, আসুন জেনে নিই।
পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ কী
চাঁদের নিজস্ব কোনও আলো নেই। তার উপর সূর্যের আলো পড়ে। তারপরেই তাকে দেখা যায়। পৃথিবী চাঁদ এবং সূর্যের মাঝে চলে এলে সূর্যের আলো আর চাঁদে পড়ে না। বদলে পৃথিবীর ছায়া চাঁদের উপরে পড়ে। তখনই হয় চন্দ্রগ্রহণ। পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদের রং হয় লাল। সে কারণে তাকে ‘রক্ত চাঁদ’ (ব্লাড মুন)-ও বলা হয়ে থাকে।
কেন চাঁদের রং লাল
চন্দ্রগ্রহণের সময় সূর্যের আলো পৃথিবীপৃষ্ঠে পড়ে বিপরীত দিকে পৃথিবীর যে ছায়া ফেলে সেটা দুই ধরনের। মাঝখানের অপেক্ষাকৃত ঘন অন্ধকারকে বলা হয় ‘প্রচ্ছায়া’ (umbra) আর অপেক্ষাকৃত কম ঘন অন্ধকারকে বলা হয় ‘উপচ্ছায়া’ (penumbra)। সূর্যের আলো বায়ুম-লের মধ্য দিয়ে প্রতিসরিত হতে হতে পৃথিবীর যে দিকে চাঁদ অবস্থান করছে সে দিকের বায়ুমণ্ডলে চলে আসে। বায়ুমণ্ডলে প্রতিসরণের সময় স্বল্প তরঙ্গদৈর্ঘ্যরে রংগুলো বিক্ষিপ্ত হয়ে যায়। লাল রঙের তরঙ্গদৈর্ঘ্য অন্যান্য রঙের তুলনায় বেশি বলে খুব একটা বিক্ষিপ্ত না হয়েই লাল রং পৃথিবীর অপর দিকের বায়ুমণ্ডলে চলে আসে এবং এরপর চাঁদের বুকে প্রতিফলিত হয়। আর এ কারণেই আমরা লাল রঙের চাঁদ দেখতে পাই।
কতক্ষণ চলবে চন্দ্রগ্রহণ
আবহাওয়া যদি রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ভাল থাকে, তাহলে ভারতের যে কোনও স্থান থেকে পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ সম্পূর্ণরূপে দেখা যাবে। ৭ সেপ্টেম্বর রাত ৯টা ৫৭ মিনিটে পৃথিবার ছায়া প্রথম চাঁদের ওপর পড়বে। এরপর তা ধীরে ধীরে গোটা চাঁদকে ঢেকে দেবে, যেটা হবে রাত ১১টা থেকে এবং চলবে ৮ সেপ্টেম্বর ১২টা ২৩ মিনিট পর্যন্ত। এরপর চাঁদ ধীরে ধীরে পৃথিবীর ছায়া থেকে বেরোতে শুরু করবে ভারতীয় সময় রাত ১টা ২৭ মিনিটে।
কোথা থেকে দেখা যাবে
এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, আফ্রিকা থেকে দেখা যাবে এই চন্দ্রগ্রহণ। ভারতের প্রায় সব শহর থেকেই দেখা যাবে। কলকাতা, দিল্লি, মুম্বই, পুণে, লখনউ, হায়দরাবাদ, চণ্ডীগড় থেকে স্পষ্ট এই গ্রহণ দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আবহাওয়া অবশ্যই অনুকূল থাকতে হবে।
আবার কবে দেখা যাবে
ভারত থেকে আবার পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ দেখা যাবে ২০২৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর। সেই গ্রহণের জন্য অপেক্ষা করে থাকতে হবে দেশবাসীকে।