scorecardresearch
 

বিবেকানন্দ, চিত্তরঞ্জনের স্মৃতিধন্য নৃপেন্দ্রনারায়ণ হলের পুজোর এবার ১১৭ বছর

স্বামী বিবেকানন্দ, চিত্তরঞ্জন দাশের স্মৃতিধন্য নৃপেন্দ্রনারায়ণ হলের পুজোর এবার ১১৭ বছর। ইতিহাস আর ঐতিহ্যে মাখামাখি হয়ে এই হলের পুজো দার্জিলিংয়ের গুটিকয় বাঙালির গর্ব।

Advertisement
নৃপেন্দ্রনারায়ন হিন্দু হল-ফাইল ছবি নৃপেন্দ্রনারায়ন হিন্দু হল-ফাইল ছবি
হাইলাইটস
  • ১১৭ বছরে পড়ল নৃপেন্দ্রনারায়ণ হিন্দু হলের পুজো
  • শুরু থেকে কোনও দিনও বন্ধ হয়নি পুজো
  • বিবেকানন্দ, চিত্তরঞ্জন, নিবেদিতা এসেছিলেন হলে

১৯৩০ সালে কোচবিহারের মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণ প্রতিষ্ঠিত হলে যখন এই পুজো শুরু হয়েছিল, তখনও দার্জিলিংয়ে চারিদিকে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত ভবনগুলিতে থাকেন ইংরেজ সাহেবরা। তার সঙ্গে প্রচুর বাঙালি শৈলশহরের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে রয়েছেন। সেই সঙ্গে দেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই চলছে। তবে স্বাধীনতা আসবে কি না, তা জানা ছিল না কারও। দার্জিলিংয়ের ঐতিহ্যবাহী নৃপেন্দ্রনারায়ণ হিন্দু হলের দুর্গা পুজা এ বছর এই পুজো ১০৭ বছরে পড়ল। আগের মতো বাহারি জকম না থাকলেও স্থানীয় বাঙালিদের কাছে এটাই এখনও গর্বের পুজো।

শুরুর পর কখনও বন্ধ হয়নি পুজো

নৃপেন্দ্রনারায়ণ হিন্দু হলের দুর্গাপুজো কমিটির তরফে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ঝড় ঝাপটা এলেও পুজো একবারের জন্য বাধাপ্রাপ্ত হয়নি। ১৯৮৬ সালে গোর্খাল্যান্ড আন্দোলন হোক, কিংবা ২০১৭ সালে পাহাড়ে ধারাবাহিক হিংসা এই পুজো বন্ধ হয়নি।

চাঁদা তোলা হয় না, যে যা দেয় তাতেই চলে পুজো

আলাদা করে চাঁদা তোলা হয় না। ভক্তরা মন্দিরে এসে যে চাঁদা দেন, তাতেই পুজো হয়। চাঁদার পরিমাণ ভালই। তাতে সমস্ত পুজো করেও খরচ বেঁচে যায়। আগে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হত কাকঝোরাতে। এখন সেখানে জল কম। তাই এখন রংবুলের বাংলাখোলাতে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়।

খিচুড়ি ভোগ খেতে আসেন সব ভাষাভাষীর লোক

নৃপেন্দ্রনারায়ণ বেঙ্গলি হলের জায়গাটা শহরের প্রাণকেন্দ্র চকবাজার থেকে দু'তিন মিনিট। নাম চাঁদমারি। অতীতে বাঙালিরা এখানেই থাকতেন বেশি। যে হল ঘরে পুজো চলে, তার লাগোয়া হল ঘরে নবমীতে খিচুড়ি ভোগ হয়। তরকারি ও পায়েস বিলি হয়। সেই ভিড়ে হাজির থাকেন সব জাতির, সব ভাষাভাষীর লোক।

বিবেকানন্দ, চিত্তরঞ্জন, নিবেদিতার স্মৃতি বিজড়িত

শুধু যে বয়সেই পুরনো তাই নয়, ঐতিহ্যও হেলাফেলার মতো নয়। ওই নৃপেন্দ্রনারায়ণ হিন্দু হলঘরেই ১৮৯৮ সালে ভাষণ দিয়েছেন বিবেকানন্দ। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদে ভাষণ দেন নিবেদিতা ও চিত্তরঞ্জন বলে জানা যায়। এখানে ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট হত। যাতে খেলে গিয়েছেন প্রকাশ পাড়ুকোনও। সে সব আজ স্মৃতির পাতায়।

Advertisement

কয়েক প্রজন্ম পর বাংলা-নেপালি দুটিই আপন ভাষা বাঙালিদের

এখন শহরে বাঙালি পরিবার কমতে কমতে প্রায় চল্লিশ পঁয়তাল্লিশ। এঁরা প্রত্য়েকেই তিন-চার প্রজন্ম ধরে আছেন। চাঁদমারিতে এখন বাঙালি কমতে কমতে সাত পরিবার। যে কজন আছেন, তাঁরাই নিষ্ঠা ভরে পালন করে পুজো করেন এখানে। শিলিগুড়ি থেকে মূর্তি আনা হয়। কমিটির ব্রাহ্মণ সদস্যরাই নিজের হাতে ভোগ বানান।

 

Advertisement