
ছোট বাচ্চারাও বোধহয় এমন করে না। পাড়ার ক্রিকেট বা কলকাতা লিগের পর্যায় এশিয়া কাপকে নামিয়ে আনার চেষ্টা পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের। কলকাতা লিগে এমন ঘটনা বারবার দেখা গিয়েছে। তবে আইসিসি নিয়ন্ত্রিত ক্রিকেটের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা বেশ বিরল। হঠাৎ ম্যাচের দিন তা খেলতে না আসা ক্রিকেটে খুব বেশি হয় না।
কীভাবে এই ঘটনার সূত্রপাত?
এই গোটা ঘটনা শুরু হয় রবিবার গ্রুপ পর্বের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ দিয়ে। সেই ম্যাচে টস করতে এসে পাক ক্যাপ্টেন সলমন আগার সঙ্গে হাত মেলাননি ভারতের ক্যাপ্টেন সূর্যকুমার যাদব। যা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। তবে ম্যাচ শেষ হওয়ার পরে সেই বিতর্কের আগুনে ঘি পড়ে। কারণ, ভারতীয় দল পাক ক্রিকেটারদের সঙ্গে হাত মেলায়নি। এমনকি ভারত তাদের ড্রেসিংরুমের দরজাও বন্ধ করে দেয়। এরপরেই ক্রিকেটের স্পিরিট মানা নিয়ে ভারতীয় দলকে কটাক্ষ করতে থাকে পাক মিডিয়া।
তবে এটা মনে রাখতে হবে, ভারতীয় দলও তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে। তারা জানিয়ে দিয়েছে পাহেলগাঁও হামলায় নিহত পর্যটক ও তাদের পরিবারের কথা ভোলেননি ক্রিকেটাররা। সেই কারণেই পাক দলের সঙ্গে হাত মেলানোর কোনও প্রশ্নই নেই। যদি ক্রিকেটের নিয়মের কথা বলতে হয়, তবে এটা বলতেই হবে, ভবারতীয় দল কোনভাবেই আইন ভাঙেনি। তারা যা করেছে তা একেবারেই নিয়মের মধ্যে থেকে।
বুধবারের নাটক
ভারতের এই আচরণ অপমান হিসেবেই নিয়েছে পাকিস্তান দল। আর সেই কারণেই প্রথমে ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফটকে অপসারণের দাবি ওঠে। শুধু তাই নয়, এই আর্জি নিয়ে আইসিসি-র দারস্থ হয় পাক বোর্ড। সেখানেও মুখ পোড়ে পাকিস্তানের। স্পষ্ট করে আইসিসি-র পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, এ ব্যাপারে আইসিসি কোনও পদক্ষেপ নেবে না। এরপরেই সংযুক্ত আরব আমিরশাহি ম্যাচে দল না নামানোর নাটক শুরু হয়। নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও মাঠে নামায়নি পাক দল। এরপর হঠাৎ কোন জাদুবলে পাকিস্তান মাঠে এল?
কেন খেলতে এল পাক দল?
পাঁচটি টেস্ট খেলা দেশ ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের রাজস্বের ৭৫ শতাংশ ভাগ করে নেয়। সঙ্গাব সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুসারে, শুধুমাত্র এই এশিয়া কাপ থেকে পাকিস্তানের আনুমানিক আয় ছিল ১২-১৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (১০৫-১৪১ কোটি টাকা)। ফলে এশিয়া কাপ বয়কট করা বা না খেলার অর্থ এই বিপুল পরিমাণ টাকা লস করা। পাকিস্তানের মতো একটি বোর্ডের জন্য একটি ভয়াবহ আঘাত।
বাচ্চাদের খেলাতেও এমন হয় না
এমন ঘটনায় পাক বোর্ডের সমালোচনা করেছেন ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার মুরুলী কার্তিক। তিনি বলেন, 'যদি আপনারা কিছু ঠিক করেন, তা হলে সেই সিদ্ধান্তে অনড় থাকুন। সেখান থেকে সরে আসবেন না। যেহেতু এর পেছনে একটা আর্থিক প্রভাব পড়তে পারে, তাও আবার ১৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, সে কারণেই নিজেদের অবস্থান বদলের কোনও মানে হয় না।'