
ভারতীয় ক্রিকেট দলে জায়গা পাওয়া শুধু পারফরম্যান্সের উপর নির্ভর করে না, প্রয়োজন ফিট থাকাও। কারণ, মাঠে একজন প্লেয়ার কতটা ফিট, তার উপরেই নির্ভর করে, টিম পারফর্ম্যান্স। একটা সময় ছিল, যখন ভারতীয় ক্রিকেটে ফিটনেসে বিশেষ জোর দেওয়া হত না। কিন্তু সে সব অতীত। এখন ভারতীয় ক্রিকেটে ফিটনেসের পরে দেখা হয় পারফর্ম্যান্স। এই বাস্তবটি হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছিলেন সরফরাজ খান। ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটে একের পর এক সেঞ্চুরি করেও দীর্ঘ দিন জাতীয় দলে সুযোগ পাননি। কারণ, অতিরিক্ত ওজন ও ফিটনেস নিয়ে সংশয়। কিন্তু সেই চেহারা আজ অতীত। আজকের সরফরাজ চমকে দেন নিজের ফিটনেস দিয়েই।
মাত্র ২ মাসে প্রায় ১৭ কেজি ওজন ঝরিয়ে, ফিটনেসে নজির গড়েছেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া তাঁর নতুন ছবি দেখে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, এটা কীভাবে সম্ভব হল? চলুন দেখে নিই, কী ছিল এই ট্রান্সফর্মেশনের পেছনে।
ডায়েট প্ল্যান: ‘না’ বলেছিলেন ভাত-রুটিকে
সরফরাজের বাবা নওশাদ খান জানিয়েছেন, গোটা পরিবার একসঙ্গে ডায়েট পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেয়। বাড়ির রান্নায় পুরোপুরি ছেদ পড়ে ভাত ও রুটি খাওয়ার। কারণ, এই দুটোই কার্বোহাইড্রেটে ভরপুর। আর ওজন কমানোর পথে সবচেয়ে বড় বাধা হল কার্বোহাইড্রেট।
কী কী ছিল সরফরাজের ডায়েটে?
সেদ্ধ ডিম, গ্রিলড চিকেন, ফাইবার সমৃদ্ধ সবজি: ব্রোকলি, গাজর, কাকরি, বেবি কর্ন, অ্যাভোকাডো ও স্প্রাউটস, , চিনি-মুক্ত গ্রিন টি / গ্রিন কফি,দিনে অন্তত ৩–৪ লিটার জল
একেবারে ‘নো’ চিনি, ময়দা, তেল-ঝাল খাবার, সোডা ও জাঙ্ক ফুড
এই ডায়েট ফলো করে তাঁর শরীরে ফ্যাট বার্নের হার বেড়ে যায়। এর সঙ্গে হালকা ওয়ার্কআউট মিলিয়ে দ্রুত রেজাল্ট এসেছে।
ওয়ার্কআউট ছিল নিয়মিত, তবে জিম নয়
বেশিরভাগ দিনেই সরফরাজ নিয়ম মেনে হাঁটতেন, সাইক্লিং করতেন এবং যোগাসন করতেন। সারা দিনে একবার হলেও ঘাম ঝরানো কার্ডিও ছিল আবশ্যিক। তবে জিমে ভারোত্তোলনের মতো হার্ড ট্রেনিং খুব একটা করেননি। এছাড়া প্রতি রাতে ঘুমের সময় নিশ্চিত করতেন ৭–৮ ঘণ্টা ঘুম, কারণ ঘুম না হলে ওজন কমানো কঠিন।
পরিবারের ভূমিকাই সবচেয়ে বড় মোটিভেশন
এই রূপান্তরে সরফরাজ একা ছিলেন না। বাবা, মা, এমনকি ছোট ভাই মুসা খানও একই ডায়েট অনুসরণ করতেন। কোনও উৎসবে পোলাও বা বিরিয়ানি তৈরি হলেও তাঁরা ছুঁতেন না। ওজন কমানো মানে শুধু শরীর বদল নয়, গোটা লাইফস্টাইল বদল। আমরা পুরো পরিবার মিলে এই পরিবর্তন এনেছি, বলছেন বাবা নওশাদ।
শুধু ক্রিকেটার নয়, আপনিও পারবেন যদি চান
সরফরাজের এই ফিটনেস ট্রান্সফরমেশন থেকে শিক্ষা নেওয়া যায় অনেক কিছু। জিমে না গিয়ে, দামী সাপ্লিমেন্ট না খেয়ে, শুধু ডায়েট ও ডিসিপ্লিন ফলো করেও ওজন কমানো সম্ভব।