নিউজিল্যান্ডের (India vs New Zealand) কাছে ঘরের মাটিতে টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশের পর ভারতীয় টিম এই মুহূর্তে ক্রিকেট ভক্তদের চক্ষশূল। কেউ চাইছেন, অবিলম্বে সরানো হোক হেডকোচ গৌতম গম্ভীরকে। অনেকে আবার চাইছেন, শুধু গম্ভীর নয়, অবসর নিক বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মাও। এই প্রথম ভারতীয় দল ঘরের মাঠে ৩ বা তার বেশি ম্যাচের টেস্ট সিরিজে একটিও ম্যাচ জিততে পারল না। এমনকী গত ২৪ বছর পর ঘরের মাঠে হোয়াইটওয়াশ হল ভারত। এর আগে ২০০০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে শেষবার হোয়াইটওয়াশড হয়েছিল টিম ইন্ডিয়া।
গম্ভীরের পারফর্ম্যান্সের উপরে কড়া নজর BCCI-র
লজ্জার হারের পর বিসিসিআই-এর রোষের নজরে পড়েছেন দলের হেডকোচ গৌতম গম্ভীর। মাস চারেক আগে গম্ভীরকে ধুমধাম করে কোচ নিয়োগ করেছিল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। এমনকী অস্ট্রেলিয়া সফরের জন্য দল নির্বাচনের মিটিংয়েও গৌতম গম্ভীরকে থাকার বিশেষ অনুমতি দিয়েছিল বিসিসিআই। এবার গতিবিধি যেদিকে যাচ্ছে, গম্ভীরের উপর বেজায় চটে রয়েছে বোর্ড। তার ফলে আগামী দিনে দল নির্বাচনে আর গৌতম গম্ভীরের পরামর্শ শোনা হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। গম্ভীর কোচ হওয়ার পরেই ২৭ বছরে প্রথমবার শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ওয়ানডে সিরিজ হারে ভারত। তারপর নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৩-০ টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশড। দেখা যাচ্ছে, যে ভারত একসময় সবচেয়ে ভাল স্পিন বল খেলত, সেই ভারতই স্পিনের সামনে মুখ থুবড়ে পড়ছে।
গৌতম গম্ভীরকে এমন কিছু সুবিধা বিসিসিআই দিয়েছে, যা রবি শাস্ত্রী বা রাহুল দ্রাবিড়ও পাননি। যেমন, বিসিসিআই-এর নিয়ম অনুযায়ী, নির্বাচক কমিটির মিটিংয়ে বা টিম সিলেকশন মিটিংয়ে থাকতে পারেন না হেডকোচ। গৌতম গম্ভীরকে সেই অনুমতি দিয়েছিল বিসিসিআই। ভারতের অস্ট্রেলিয়া সফরের জন্য টিম সিলেকশন মিটিংয়ে ছিলেন গম্ভীর।
নাইটওয়াচম্যান হিসেবে সিরাজকে পাঠানো ঠিক হয়েছিল?
গৌতম গম্ভীরের স্ট্র্যাটেজি হল, যা-ই হয়ে যাক, একটি স্ট্র্যাটেজিতেই খেলে যেতে হবে। মুম্বই টেস্টে যেমন নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নামানো হল মহম্মদ সিরাজকে। আবার প্রথম ইনিংসে সরফরাজ খানকে ৮ নম্বরে ব্যাটিং করতে পাঠানো হল। পেসার হর্ষিত রানা ও অলরাউন্ডার নীতীশ কুমার-- কম করে দুজনকে শুধুমাত্র গম্ভীরের চাহিদা মেনে বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে দলে রাখা হয়েছে। রানা যদিও শ্রীলঙ্কা বা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ডেবিউ করার সুযোগ পাননি।
গম্ভীরের কিছু সিদ্ধান্ত আশ্চর্যের
হর্ষিত রানাকে যদি ভারতের A টিমের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানো হত, তাহলে সেখানে বাউন্স পিচে ম্যাচ খেলা তাঁকে আসন্ন টেস্ট সিরিজের অভিজ্ঞতা দিতে পারত। পরিবর্তে, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে তাঁকে নেট বোলার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল, যেখানে তিনটি পিচের মধ্যে দুটি ছিল র্যাঙ্ক টার্নার্স। নীতীশের কথা বলতে গেলে, অস্ট্রেলিয়া A টিমের বিরুদ্ধে ম্যাচে, শর্ট বলের সামনে সমস্যায় পড়েছিলেন এবং তাঁর বোলিং ফর্মও ভাল ছিল না। গম্ভীর আত্মবিশ্বাসী ছিলেন, তিনি ফাস্ট বোলিং অলরাউন্ডার হিসাবে হার্দিক পান্ডিয়ার আদর্শ রিপ্লেসমেন্ট হতে পারেন। এখন অস্ট্রেলিয়া সিরিজ গম্ভীরের জন্য লিটমাস টেস্টের চেয়ে কম হবে না। সাইডলাইন থেকে তার দিকে নজর রাখছে বোর্ড।