চেন্নাইয়ে সহজ ম্যাচ কঠিন করে জিতল দক্ষিণ আফ্রিকা। ১ উইকেটে জয় দেখে যতই হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচ মনে হোক না কেন, দ্বিতীয়ার্ধে দক্ষিণ আফ্রিকা ইনিংসের ৪০ ওভার পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকা হারতে পারে এমন কোনও সম্ভাবনা দেখা তো দূর অস্ত, ভাবাও যায়নি। আচমকা দক্ষিণ আফ্রিকা সহজ ম্যাচ যেখানে ওভারে ৩ রান করে নিলেই জেতা যাবে, এমন পরিস্থিতিতে এক ধাক্কায় একগুচ্ছ উইকেট হারিয়ে আচমকা ৯ উইকেটে দাঁড়িয়ে যায়। পাকিস্তান বলে এই ম্যাচ বের করতে পারেনি, নইলে দক্ষিণ আফ্রিকা এই ম্যাচ জেতে না। এলোমেলো বল করে পাকিস্তান ম্যাচের রাশও ছেড়ে দিল আর শেষ উইকেটে কেশব মহারাজ ও তাবরেজ শামসি মাথা ঠান্ডা রেখে আরেকটা অঘটন ঘটতে দিলেন না। তবে ম্যাচটি হারার সঙ্গে সঙ্গেই পাকিস্তান রেকর্ড বুকে নাম তুলে নিল। তবে কোনও ভাল কারণে নয়, পাকিস্তান তাদের বিশ্বকাপ ইতিহাসে একটি অবাঞ্ছিত রেকর্ড গড়ল।
এই পরাজয়ের ফলে তারা টুর্নামেন্টে টানা চারটি ম্যাচ হারল। যা বিশ্বকাপের ইতিহাসে পাকিস্তানের জন্য প্রথম। এর আগে এ্মন ঘটনা কখনও ঘটেনি। পাকিস্তান টানা চারটি ম্যাচ হারেনি। সে দিক দিয়ে এটি একটি লজ্জাজনক রেকর্ড। এই ম্যাচের আগে তারা টানা ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে হেরেছে। হারের এই ধারা পাকিস্তানের বিশ্বকাপ সফর প্রশ্নের মুখে ফেলে দিল। এখন তাদের বাকি ম্যাচ জিততেই হবে। পাশাপাশি অন্যদের হার-জিতের উপর নির্ভর করতে হবে।তাদের এখন অবস্থান অনিশ্চিত। তাদের বাকি সব ম্যাচ জিততে হবে এবং সেমিফাইনালে কোয়ালিফাই করার সুযোগ পেতে অন্যান্য ফলাফলের উপর নির্ভর করতে হবে। পাকিস্তানের পরে ম্যাচ কলকাতায়। সেখানে তারা আগামী ৩১ অক্টোবর বাংলাদেশের মুখোমুখি হবে।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান। প্রথমে ব্যাট করতে নামলে ঝড় তুলছে দক্ষিণ আফ্রিকা। কুইন্টন ডি কক, হেনরি ক্লাসেনের মতো ব্যাটাররা দারুণ ছন্দে। শুধু তাই নয়, বড় রানের লক্ষ্য দিয়ে বোলাররাও আগুন ঝড়াচ্ছেন। সেই কথা মাথায় রেখেই এই ম্যাচে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বাবর আজম। তবুও ২৭০ রানেই গুটিয়ে গেল পাকিস্তান।
ব্যাট করতে নামলেও ওপেনিং জুটি ব্যর্থতা এড়াতে পারেনি। ৩৮ রানে ২ উইকেট হারানোর পর, দলের হাল ধরতে হয় ক্যাপ্টেন বাবর আজমকে। তার আগে আব্দুল্লা সাফিক ১৭ বলে ৯ রান করে আউট হন। ইমাম উল হক ১৮ বলে ১২ রান করে ফেরেন। মার্কো জ্যানসনই এই দুই উইকেট তুলে নেন। বাবর হাল ধরলেও ৫০ রান করেই আউট হন। বড় রান করতে পারেননি মহম্মদ রিজওয়ানও। ২৭ বলে ৩১ রান করে আউট হন তিনি। ইফতিকারও বড় রান পাননি এদিন। মাত্র ৩৬ বলে ৪৩ রান করলেও দলের আরো বেশি রান দরকার ছিল।
বাবর আউট হওয়ার পর, শাহদাব খান ও সৌদ সাকিল ভাল জুটি গড়ে তোলেন। সাকিল রান পেলেও বড় রান করতে পারেননি। ৫২ বলে ৫২ রান করেই আউট হন তিনি। তাঁর ইনিংসে ছিল সাতটা চার। তবে পাকিস্তান দল এরপর আর কোনও পার্টনারশিপ গড়ে তুলতে পারেননি। ৭১ বল খেলে ৮৪ রানের পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন তাঁরা। এছাড়া মহম্মদ রিজওয়ান ও বাবার আজম ভাল জুটি গড়লেও রান হয়নি সেভাবে। ৫৬ বলে ৪৮ রান করেন তাঁরা।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৬ বল বাকি থাকতে জয় তুলে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। যদিও শেষ উইকেট হাতে নিয়ে জয় তুলে নেয় প্রোটিয়ারা। শেষদিকে ম্যাচ বেশ হাড্ডাহাড্ডি হয়ে উঠেছিল। তবে শেষ হাসি হাসে দক্ষিণ আফ্রিকা।