
আইএসএল ও আই লিগভারতীয় ফুটবলের অচলাবস্থা কাটাতে পদক্ষেপ নিচ্ছে ক্রীড়ামন্ত্রক। বুধবার ক্রীড়ামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসছেন এফএসডিএল, আইএসএল-এর ক্লাব প্রতিনিধিরা। দিল্লিতে হবে বৈঠক। ওইদিনই আই লিগের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী মনসুখ মান্ডভিয়া। এমনটাই সূত্রের খবর।
পুরোপুরি ব্যর্থ এআইএফএফ
সমস্যা সমাধানের জন্য ফেডারেশন যে পুরোপুরি ব্যর্থ, এটা প্রমাণিত হয়ে যাওয়ার পর দেশের ফুটবলের স্বার্থরক্ষায় এগিয়ে এসেছে কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রক। কারণ, এর আগেও ক্লাবগুলির সঙ্গে আলোচনায় বসেও কাজের কাজ কিছুই করতে পারেননি ফেডারেশন কর্তারা। আই লিগের ক্লাবগুলি তো আবার ফেডারেশনের ডাক অস্বীকার করে সরাসরি আলোচনায় বসে ছিলেন কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী মানসুখ মাওব্যর সঙ্গে। সেখানে কেন্দ্রীয় ক্রীড়া সচিবও উপস্থিত ছিলেন। যেখানে ফেডারেশনের শীর্ষ কর্তাদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আনেন আই লিগ ক্লাব প্রতিনিধিরা।ফুটবল বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এরপরই ফুটবল নিয়ে জট খেলার ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে ওঠে কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রক। আর সেই কারণেই আইএসএল-আই লিগ ক্লাবগুলির সঙ্গে আলোচায় বসার পরিকল্পনা।

সুপ্রিম কোর্টে চলছে শুনানি
কিছুদিন আগেই সুপ্রিম কোর্টে শুনানির সময় সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, কেন্দ্র এই সমস্যা নিয়ে ওয়াকিবহাল। তারপরেই সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, দু'সপ্তাহ পরে এই ইস্যুতে কেন্দ্রর বক্তব্য শুনবে সুপ্রিম কোর্ট। নিজেদের বক্তব্য সুপ্রিম কোর্টে পেশের আগে আইএসএল এবং আই লিগ আয়োজন নিয়ে বিভিন্ন প্রাইভেট সংস্থার সঙ্গে কথা বলছে কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রক। বিভিন্ন সংস্থার থেকে আইএসএল এবং আই লিগ কীভাবে করা সম্ভব, তা নিয়ে খসড়াও চাওয়া হয়েছে। ফলে আশা করা যাচ্ছে, খুব দ্রুতই দেশের লিগ চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে কেন্দ্র। আর সেই কারণেই শোনা যাচ্ছে, কয়েকদিনের মধ্যেই আইএসএল এবং আই লিগ ক্লাবগুলির সঙ্গে লিগের খসড়া নিয়ে আলোচনায় বসতে চাইছেন ক্রীড়ামন্ত্রকের কর্তারা।
আপাতত যা পরিস্থিতি, এই মরসুমে বিশাল বড় করে আইএসএল আয়োজন করা কিছুটা অসম্ভব বলেই মনে করা হচ্ছে। কিন্তু দেশে ফুটবল বন্ধ হয়ে আছে, এটাও ভারতীয় ফুটবলের জন্য অত্যন্ত খারাপ বিজ্ঞাপন। তাই সব পক্ষই চাইছে, দেশে অন্তত ফুটবলটা চালু হোক। না হলে ফুটবল ক্লাবগুলি বন্ধ করার জায়গায় পৌঁছে যাচ্ছে। এই মরসুমে আইএসএল হলেও ওড়িশা দল গড়তে পারবে কি না, এখনই বোঝা যাচ্ছে না।
চাপ দিচ্ছেন বিদেশি ফুটবলাররাও
কিছু ঘোষণা না হলে বিদেশি ফুটবলাররাও ক্লাবগুলিকে চাপ দিচ্ছেন, তাঁদের ভবিষ্যত নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য। ফলে যেভাবেই হোক, ক্লাবগুলিও চাইছে, অন্তত আইএসএল-আই লিগটা শুরু হোক। বিভিন্ন কর্পোরেট সংস্থার সঙ্গে কথা বলার পর পরিস্থিতিটা পুরো বুঝে নিয়ে এবার কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রক চাইছে, ক্লাবগুলিকে বুঝিয়ে বলতে ঠিক কোন পরিস্থিতিতে, কীভাবে এই মরসুমের লিগ করা যায়। একই সঙ্গে জানাতে চায়, এই মুহূর্তে কর্পোরেট সংস্থাগুলিও কী ভাবছে। সব মিলিয়ে আইএসএল এবং আইলিগ শুরু নিয়ে ক্লাব এবং কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রক যখন এক অবস্থানে আসবে, তখনই সুপ্রিম কোর্টে পুরো পরিস্থিতি জানাবে কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রক।
কবে থেকে শুরু হতে পারে দুই লিগ?
প্রাথমিক যে খসড়া তৈরি হচ্ছে, তাতে ২০ জানুয়ারির মধ্যে আইএসএল শুরু করার ভাবনা রয়েছে। কারণ, ১০-১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে যদি আইএসএল শুরু নিয়ে পুরো রিপোর্ট জানানো যায়, তারপর লিগে খেলার জন্য প্রস্তুতি নিতে ক্লাবগুলিকে ন্যূনতম একমাস সময় দিতই হবে। তাই আশা করা যাচ্ছে, এই মরশুমের আইএসএল শুরু হলে তা হবে ২০ জানুয়ারির মধ্যে। তবে কী ফরম্যাটে লিগ হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। কারণ, তা নিয়ে আবার অল্প বিস্তর সমসয়ও রয়েছে। এক মরশুমে ২২টি ম্যাচ না খেললে আবার এএফসি-র স্লট পাওয়া যাবে না। সিঙ্গল লেগ হলে, একটি ক্লাবের ২২টা মাচ খেলার সম্ভাবনা নেই বললেই হয়।