ছিন্নমূল মানুষের একটাই রঙ। লাল-হলুদ। সে কারণেই ডার্বি জিতে সতীর্থ মহম্মদ রশিদকে উৎসর্গ করল ইস্টবেঙ্গল। দুই গোল করে ম্যাচের নায়ক দিমিত্রিয়াস ডিমানটাকোস যখন সমর্থকদের সামনে রশিদের জার্সি নিয়ে গেলেন, তখন আবেগে ভাসল লাল-হলুদ গ্যালারি। আসলে রশিদদের দুঃখ বোঝে ইস্টবেঙ্গল জনতা। প্যালেস্তাইন থেকে আমেরিকায় চলে আসা ফুটবলারের জীবনে নেমে এসেছে বিপর্যয়। হারিয়েছেন বাবাকে।
আর সেই কারণেই ডার্বিতে ছিলেন না তিনি। তিনি না থাকায় সমস্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা ছিল। তবে ডার্বির আগে সৌভিক চক্রবর্তী বলে গিয়েছিলেন, ম্যাচটা রশিদের জন্য জিততে চাই। আর ম্যাচ শুরু হওয়ার পর থেকে সেটাই বারবার দেখা গিয়েছে। মাথা তুলে দাঁড়াতেই পারেনি মোহনবাগান আক্রমণ। একদিক থেকে লিস্টন কোলাসোর দৌড় বন্ধ হতেই হাঁসফাঁস করতে শুরু করল মোহনবাগান। এর মধ্যেই দুই গোলে পিছিয়ে পড়ায় সমস্যা আরও বাড়ে।
রশিদ না থাকায়, স্ট্রাইকারে একজনকে রেখেই শুরু করেছিলেন অস্কার ব্রুজো। আনোয়ার আলি ও কেভিন সিবিলে দারুণ ছন্দে। ফলে কিছুক্ষেত্র ছাড়া লাল-হলুদ ডিফেন্সে চাপ পড়েনি। বল স্ন্যাচ হয়ে গিয়েছে মিডফিল্ডেই। যে কাজটা রশিদ একা করতেন, সেটাই সবাই মিলে করেছেন। গ্যালারিতেও দেখা রশিদকে নিয়ে ব্যানার, যেখানে লেখা আছে, তাঁর পাশে থাকার অঙ্গীকার। যুদ্ধবিদ্ধস্ত প্যালেস্তাইন থেকে উঠে আসা এই ফুটবলার এবার ইস্টবেঙ্গলে। প্রথম কিছু ম্যাচেই জাত চিনিয়ে দিয়েছেন। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া, মানুষের ঘুরে দাঁড়ানোর আশ্রয় ইস্টবেঙ্গল। যা রবিবার করে দেখাল অস্কারের দল। ঘুরে দাঁড়ানোর সুচনা যদি এমন হয়, তবে আত্মবিশ্বাসী ইস্টবেঙ্গল যে কোনও দলের বিপদের কারণ হতে পারে।
অস্কার ব্রুজোকে প্রথম ডার্বিতে এসেই দলের হার দেখতে হয়েছিল। যেটা মরসুমের প্রথম ডার্বিতেই ফেরত দিয়ে দিলেন স্প্যানিশ কোচ। রশিদ না থাকায়, পাঁচ মিডফিল্ডার নামিয়ে দিয়েছিলেন অস্কার। দেদার ফাউল করে মোহনবাগান মিডফিল্ডারদের খেলা তৈরিই করতে দেননি। হলুদ কার্ড দেখলেও, এ ম্যাচটা জেতার জন্য মরিয়া ছিল লাল-হলুদ।