মাত্র ২১ মিনিটের লাল-হলুদ ঝড়। আর তাতেই উড়ে গেল পঞ্জাব। প্রথমার্ধ দেখে মনেই হয়নি এই ইস্টবেঙ্গল ঘুরে দাঁড়াতে পারে। বরং, তারকাদের না থাকা মানসিক ভাবে অনেকটাই পিছিয়ে দিয়েছিল লাল-হলুদকে। শুধু তাই নয় ২ গোলে পিছিয়েও পড়েছিল অস্কার ব্রুজোর দল। ফুটবলাররা লকার রুমে যাওয়ার পরেই যেন বদলে গেল সবটা। ইস্টবেঙ্গল মাঠ ছাড়ল ৪-২ গোলে ম্যাচ জিতে।
যুবভারতীতে আসা ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা যখন গোল করার লোক খুঁজছেন, সেই সময়ই ত্রাতা হয়ে উঠলেন হিজাজি মাহের। ডিফেন্স থেকে উঠে এসে ক্লেইটনের ফ্রিকিকে মাথা ছুঁইয়ে গোল। বিরতির এক মিনিটের মধ্যেই খেলায় ফেরার ইঙ্গিতটা স্পষ্ট হল। পিভি বিষ্ণুর ঠান্ডা মাথার ফিনিসে ম্যাচে ফিরে এল ইস্টবেঙ্গল। খেলার বয়স তখন সবে ৫৪। মাঝমাঠ থেকে মহম্মদ রাকিপের থেকে ক্রস পেয়েছিলেন বিষ্ণু। বল ধরে একটু ভেতরে ঢুকে বিপক্ষের গোল লক্ষ্য করে শট মেরেছিলেন। পঞ্জাবের এক ফুটবলারের গায়ে লেগে তা গোলে ঢুকে যায়। চাপের মুখে পঞ্জাবের ভুল এগিয়ে দেয় ইস্টবেঙ্গলকে। ডান দিক থেকে নন্দকুমারের পাস ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজের গোলেই ঢুকিয়ে দেন সুরেশ মিতেই। তারও ছ’মিনিট পরে আবার বিষ্ণু-ম্যাজিকে এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। এ বার বাঁ দিক থেকে কেরলের ফুটবলারের ক্রসে প্রায় মাটিতে শুয়ে পড়ে হেডে গোল করেন ডেভিড লালানসাঙ্গা।
কীভাবে ঘুরল ম্যাচের রং?
প্রথমার্ধে ছন্দে ছিলেন না নাওরেম মহেশ সিং। তাঁকে তুলে নিয়ে বিষ্ণুকে নামাতেই ম্যাচের রং বদলে গেল। চোট-আঘাতে জর্জরিত ইস্টবেঙ্গলের হাতে এখন এমন বিকল্প কম। তার মধ্যে থেকেই নিজের সাধ্যমতো খেলান অস্কার। তাঁর বুদ্ধিতেই তারকা হয়ে উঠলেন কেরলের বিষ্ণু। অস্কারের একটা চাল খেলা ঘুরিয়ে দিল। ইস্টবেঙ্গল যে ক’টি আক্রমণ করেছে প্রায় প্রতিটিতেই বিষ্ণুর অবদান রয়েছে। একটি গোল করিয়েছেন। একটি গোল করেছেন। এ ছাড়াও বহু আক্রমণে ভূমিকা নিয়েছেন।
প্রথমার্ধে ইস্টবেঙ্গলের ফুটবল চিন্তায় রাখবে
প্রথমার্ধে পঞ্জাবের দু’টি গোল দেখে অনেক সমর্থকই হয়তো বাড়ির পথ ধরেছিলেন। তাঁরা লাল-হলুদের প্রত্যাবর্তন দেখতে পেলেন না। তবে প্রথমার্ধে ইস্টবেঙ্গল যা খেলেছে তা চিন্তিত করার মতোই। শুরুটা খারাপ হয়নি। তবে ম্যাচ যত এগোতে থাকে তত যেন ইস্টবেঙ্গল খোলসের মধ্যে ঢুকে পড়তে থাকে। দু’টি গোল দেখেই মনে হয়েছে দলের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের অভাব রয়েছে। রক্ষণের ফুটবলারদের মধ্যে যোগাযোগের অভাব, আনোয়ার আলি ও মহম্মদ রাকিপের ভুলের সুযোগ নিয়েছে পঞ্জাব। জিতলেও প্রথমার্ধে পারফরম্যান্স চিন্তায় রাখবে অস্কারকে।
টেবিলের কোথায় ইস্টবেঙ্গল?
জিতেও অবশ্য ১১ নম্বরে থাকল ইস্টবেঙ্গল। ১১ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ১০। ১১ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্জাব পাঁচ নম্বরে। জয়ের ফলে বেঁচে থাকল ইস্টবেঙ্গলের প্লে-অফের আশা।