আইএসএলআইএসএল তো বটেই, আই লিগ নিয়েও চলছে চরম ডামাডোল। ভারতীয় ফুটবলে বিনিয়োগ করতে এগিয়ে আসছে না কোনও সংস্থা। ফলে ফুটবলের সঙ্গে জড়িত সকলেই বেশ চিন্তায়। ফেডারেশন কর্তারা নিরুপায়। ফের সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ তারা। বুধবার বেশ ব্যস্ত থাকলেন ফেডারেশন কর্তারা। তবে দফায় দফায় বৈঠক সত্ত্বেও এখনই জট খোলার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে না।
বুধবার প্রথমে তাঁরা নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেন। তারপর সন্ধ্যা ছটা থেকে আইএসএল ক্লাবগুলির অধিনায়কদের সঙ্গে একটি অনলাইন বৈঠক করেন। সন্ধ্যা ৭টা থেকে আইএসএল ক্লাবের সিইওদের সঙ্গে ছিল বৈঠক। আর রাত আটটা থেকে আই লিগ ক্লাবগুলির প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছিল ফেডারেশন।
কী হল এই তিন মেগা বৈঠকে? সূত্রের খবর, অধিনায়কদের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বেঙ্গালুরু এফসির তিন ফুটবলার সুনীল ছেত্রী, গুরপ্রীত সিং সান্ধু ও রাহুল ভেকে। এছাড়াও ছিলেন সন্দেশ ঝিঙ্গন, হগো বুমোস, আদ্রিয়ান লুনারা। এখানে ফেডারেশন নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে দেয়। তারা জানিয়ে দেয়, আইএসএল নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট নতুন করে নির্দেশ না দিলে তাদের আর কিছু করার নেই। তারপর এই বৈঠকে এক সিনিয়র ফুটবলার প্রস্তাব দেন, ফুটবলাররা একযোগে নিজেদের রুটি-রুজির অস্তিত্বের সঙ্কটের কথা জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের কাছে দ্রুত আইএসএল শুরুর অনুরোধ জানালে ভাল হয়। সূত্রের খবর, ফেডারেশন কর্তারা বিষয়টি নাকচ করেননি। সূত্রের খবর, ফুটবলারদের একজোট হয়ে সুপ্রিম কোর্টে এরকম পিটিশন জমা দেওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।
আইএসএল ক্লাবদের সিইও-দের সঙ্গে ফেডারেশনের বৈঠকে বাকি সব ক্লাবের প্রতিনিধি থাকলেও, ছিলেন না ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগানের কোনও প্রতিনিধি। বিষয়টি নিয়ে রীতিমতো প্রশ্ন উঠেছে ভারতীয় ফুটবল মহলে। এখানেও ফেডারেশনের সেই একই যুক্তি। গোটা বিষয়টি রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের অধীনে। এই বৈঠকে ক্লাবগুলো জানতে চায়, ক্লাবজোটের প্রতিনিধিরা আলাদা করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবেন কি না। এছাড়াও প্রাথমিকভাবে এফএসডিএল-সহ যে কোম্পানিগুলো বিড করতে আগ্রহী ছিল, তারা শেষ মুহূর্তে কোন্ সমস্যার জন্য পিছিয়ে গেল, তা নিয়ে বিডারদের সঙ্গে কথা বলতে চায় ক্লাব জোট।
সূত্রের খবর, দুটি বিষয়েই ফেডারেশন কর্তারা ক্লাব প্রতিনিধিদের বাধা দেননি। এখন দেখার, এই দুটি বিষয়ে ক্লাব জোট আগামী কয়েকদিনে কী সিদ্ধান্ত নেয়। তবে, ক্লাবজোটের সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বেঙ্গালুরু এফসি-র পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়, ফেডারেশনকে নিয়ে ক্লাবগুলোর নিজেদের খরচে আইএসএল করা যায় কি না। এই বিষয়ে অবশ্য অন্য ক্লাবগুলো এমন কিছু জানায়নি।
একটি ক্লাব জানায়, সে ক্ষেত্রে ক্লাবের খরচ বাঁচাতে আইএসএলে ফুটবলারদের অন্যদিকে, ফেডারেশনের উপর চাপ বাড়াল আই লিগ ক্লাবগুলো। বুধবার তাদের তিন ঘণ্টার নোটিশে বৈঠকে বসতে বলা হয়। তারপরেই রিয়াল কাশ্মীর, গোকুলাম, নামধারী, শ্রীনিধি ডেকান, রাজস্থান ইউনাইটেড, শিলং লাজং, ডায়মন্ড হারবার এফসি এবং চানমারি এফসি একটি চিঠি দেয় ফেডারেশনকে। আটটি ক্লাবের পক্ষ থেকে বেশ কিছু দাবি পেশ করা হয়। প্রথমত, একই কমার্শিয়াল পার্টনার যেন আইএসএল, আই লিগ এবং আই লিগ টু আয়োজন করে। দ্বিতীয়ত, আগামী ১০ দিনের মধ্যে যেন জানানো হয় আই লিগ কবে শুরু হবে। ১৫ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরুর দাবি জানানো হয়েছে। এই আটটি ক্লাব, ফেডারেশনের বৈঠকে উপস্থিত ছিল না। ফেডারেশন সূত্রের খবর, মাত্র দুটি আই লিগের ক্লাব বৈঠকে ছিল। নিজেদের দাবি নিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে দশটায় কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসবে আট আই লিগ ক্লাবের জোট।