কল্যাণ চৌবেলিওনেল মেসির অনুষ্ঠানে তাণ্ডব। রবিবারও গোটা মাঠ জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বাকেট সিট। লণ্ডভণ্ড গোটা স্টেডিয়াম। এর জেরে মাথা হেঁট হয়েছে কলকাতাবাসীর। তার থেকেও বড় সমস্যা হল, ভবিষ্যতে কোনও ম্যাচ পাওয়া নিয়ে সমস্যায় পড়তে হতে পারে কলকাতার এই আইকনিক স্টেডিয়ামকে। এমনটাই মত কল্যাণ চৌবের। বিজেপি নেতা হওয়ার পাশাপাশি তিনি সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতিও।
রবিবার এই ঘটনা নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর পাশে বসেই উদ্বেগ প্রকাশ করেন কল্যাণ। তিনি বলেন, 'খেলা হল একটা দেশের সফট পাওয়ার। ২১১টা দেশে খবরটা ছড়িয়ে গিয়েছে। এটা ব্যক্তির বা রাজনৈতিক দলের ক্ষতি নয়। পশ্চিমবঙ্গে আন্তর্জাতিক খেলার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াবে এই ঘটনা। ভারত কমনওয়েলথ গেমস আয়োজন করছে'। শুধু তাই নয়, কলকাতায় আর কোনও আন্তর্জাতিক ম্যাচ হওয়া নিয়ে সন্দেহ রয়েছে বলেও জানিয়ে দিলেন কল্যাণ।
কলকাতা ভারতীয় ফুটবলের মক্কা। পশ্চিমবঙ্গে এই খেলা দুর্দান্ত জনপ্রিয়। লেভ ইয়াশিন, পেলে, ম্যারাডোনা, অলিভার কান, রজার মিলা এবং আরও অনেক কিংবদন্তি ফুটবলার এখানে এসছেন। এই ফুটবলারদের সফরেও নির্দিষ্ট প্রটোকল ছিল। যখন আমরা নিজেদের দিকে তাকাই, তখন মনে করি যে মাঠ খেলার জন্য তৈরি হয়েছে এবং আমরা অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছি। এর ফলে ভারতীয় ফুতবল আরও ৫০ পিছিয়ে গেল। শুধু তাই নয় কলকাতায় কোনও আন্তর্জাতিক ম্যাচ হবে কিনা সেটা নিয়েও বড় প্রশ্ন তৈরি হল।'
সূত্রের খবর, ৬৮,০০০ দর্শক সংখ্যা যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের। সেখানে প্রায় ৭০,০০০ মানুষ ঢুকে পড়েছিলেন। যদি গড়ে ৫০,০০ টাকা টিকিটের দাম বলে ধরে নেওয়া হয়, তবে টিকিট বিক্রি করেই ৩৫ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা পেয়েছেন শতদ্রু দত্তরা। এটা শুধু টিকিটের টাকা। এছড়াও আছে স্পন্সরশিপের টাকা। পাশাপাশি মাঠের মধ্যে যে মিনারেল ওয়াটার বিক্রি হচ্ছিল। তার দামও ছিল আকাশছোঁয়া। শোনা যাচ্ছে ২০ টাকার জলের বোতল বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকায়। কোল্ড ড্রিঙ্কস, অন্যান্য খাবারদাবারের ক্ষেত্রেও দাম ছিল অনেকটাই বেশি।
তবে এটা শুধুই গড় হিসেব। ফলে শুধু সাড়ে তিন কোটি টাকা নয়, এই অনুষ্ঠান থেকে নানাভাবে আরও অনেক বেশি টাকা তুলে এনেছিলেন উদ্যোক্তারা। এখন প্রশ্ন হল, এই বিপুল টাকা আদৌ ফেরত দেওয়া সম্ভব? অনলাইনে যারা টিকিট কেটেছিলেন তাদের টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে। তবে যারা অফ লাইনে কেটেছিলেন, তাদের ক্ষেত্রে কী হবে? কীভাবে সেই টাকা ফেরত পাবেন সাধারণ মানুষ?
রবিবার বিধাননগর মহকুমা আদালতে তোলা হয় শতদ্রু দত্তকে। ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আদালতের পক্ষ থেকে। শনিবার ঘটনার পর, কলকাতা বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার হন শতদ্রু। রবিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শতদ্রু দত্তর আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেলতে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের হেপাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সল্টলেকে অশান্তির জন্য সাধারণ দর্শকদেরও দোষারোপ করেন তিনি।