ইরফান খান। নামটা আমাদের সকলের কাছেই বেশ পরিচিত। অভিনয়ের জগতে তিনি যে স্বতন্ত্র্য ছাপ তৈরি করে গেছেন, তা আজ আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ২০২০ সাল বলিউডের বহু প্রখ্যাত বলিউড অভিনেতাকে কেড়ে নিয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছেন ইরফান খানও। আজ এই অভিনেতার ৫৪তম জন্মবার্ষিকী।
তথাকথিত বলিউডি কমার্শিয়াল সিনেমায় সেভাবে দেখতে পাওয়া যায়নি ইরফানকে। কিন্তু, তাঁর প্রত্যেকটা সিনেমাই দর্শকদের মনে গভীর দাগ কেটে গেছে। কোনটা ছেড়ে কোনটার কথা বলি? তালিকায় রয়েছে 'পান সিং তোমার', 'লাইফ অফ পাই', 'পিকু', 'লাঞ্চবক্স', 'হিন্দি মিডিয়াম', 'তলোয়ার', 'ডুব'-এর মতো সুপারহিট ছবি।
কিন্তু, আপনি কি জানেন যে অভিনয়ের পাশাপাশি ক্রিকেটটাও দারুণ খেলতেন ইরফান খান? হ্যাঁ, ঠিকই শুনছেন। তরুণ বয়সে তিনি যথেষ্ট প্রতিভাবান ক্রিকেটার ছিলেন। এমনকী, নিজের রাজ্যের হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও সুযোগ পান ইরফান খান।
রাজস্থানের জয়পুরে জন্ম বলিউড তারকা ইরফান খানের। স্বপ্ন দেখতেন ক্রিকেটার হওয়ার। অনূর্ধ্ব-২৩ সি কে নাইডু প্রতিযোগিতায় খেলার জন্য নির্বাচিতও হয়েছিলেন অলরাউন্ডার ইরফান। কিন্তু, পরিবারের আর্থিক সংকটই তাঁর ক্রিকেট খেলার পথে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
মাত্র ২৫০ টাকার জন্য তিনি জয়পুর থেকে আজমেরে ক্রিকেট খেলতে আসতে পারেননি। এরপর তিনি ভেঙে পড়েন হতাশায়। ছেড়েই দেন ক্রিকেট খেলা। ধীরে ধীরে পা রাখেন অভিনয় জগতে।
২০১৭ সালে ইউটিউবের একটি জনপ্রিয় চ্যাট শো'য়ে এসে একথা নিজের মুখেই জানিয়েছিলেন ইরফান। তিনি বলেন, "ক্রিকেটটা আমি ভালই খেলতাম। আমি অলরাউন্ডার ছিলাম। কিন্তু, বল করতেই বেশি পছন্দ করতাম। তাই আমাকে সবাই বোলার বানিয়ে দিয়েছিল। আমি শুধু বল ছুঁড়ে দিতাম আর তাতেই ২-৩ উইকেট পেয়ে যেতাম।"
এই প্রসঙ্গে আপনাদের জানিয়ে রাখি, একটি সিনেমার শুটিংয়ের জন্য কলকাতার বাটা স্টেডিয়ামে ক্রিকেট খেলতে দেখা গিয়েছিল এই প্রখ্যাত অভিনেতা। তিনি ব্যাট এবং বল দুটোই করেছিলেন।
১৯৯৯ সাল। ‘দ্য গোল’ নামে এক হিন্দি ছবির শুটিং হয়েছিল বাটা স্টেডিয়ামে। বাঙালি ফুটবল কোচের ভূমিকায় ছিলেন ইরফান। চরিত্রের নাম অনুপম। সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্রে ছিল বছর পনেরোর এক কিশোর। মানু নামের সেই চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন বাটারই ছেলে তাপস ঢালি। বাটার বাড়ি থেকে তাপস বলছিলেন ‘ইরফান স্যার ফুটবল খুব ভালো খেলতে পারতেন না। তবে সিনেমার প্রয়োজনে যতটুকু দরকার, সেটা খুব মন দিয়ে শিখেছিলেন। কিন্তু ক্রিকেটটা খেলতেন দারুণ।’