অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস
আপনারা শুনলে হয়ত বিশ্বাসও করবেন না যে এমনও কোনও কারণের জন্য কোনও ক্রিকেটারকে নির্বাসিত হতে হয়। ২০০৮ সালে সামান্য মাছ ধরার জন্য সাইমন্ডসকে গোটা সিরিজ় নির্বাসনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আসলে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের ওডিআই সিরিজ় খেলার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়ায়। তো, সিরিজ় শুরুর আগে দলের অনুশীলন চলাকালীন একটি মিটিং ডাকা হয়েছিল। তবে এই মিটিংয়ের ব্যাপারে একেবারে অবগত ছিলেন না সাইমন্ডস। সেকারণে সাতসকালেই তিনি মাছ ধরতে চলে যান। এই ঘটনায় রেগে যায় অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বোর্ড। তাঁকে সোজা দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এমনকী পরের সিরিজ়টা ভারতের বিরুদ্ধে খেলার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়ার। এই সিরিজ়েও সাইমন্ডসের খেলা নিয়ে যথেষ্ট অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল।
শাহিদ আফ্রিদি
পাকিস্তানের এই অলরাউন্ডার ক্রিকেটার নিজেকে বিতর্কের জালে জড়িয়ে রাখতেই যেন সবথেকে বেশি ভালোবাসেন। পাঁচ ম্যাচের ওডিআই সিরিজ়ে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে শেষ একদিনের ম্যাচ খেলছিল পাকিস্তান। এই ম্যাচে আফ্রিদিকে বল কামড়াতে দেখা যায়। রানা নাভেদ-উল হাসানের দিকে এগিয়ে আসার সময়েই আফ্রিদির কাজকর্ম ক্যামেরায় রেকর্ড হয়ে যায়। এই ঘটনা অবশ্যই আইসিসি-র নিয়ম লঙ্ঘন করে। নিয়ম অনুসারে, কোনও রকমেই বলের আকৃতি পরিবর্তন করা যাবে না। যদি তা করা হয়, সেটাকে বেআইনি হিসাবে ধরা হবে। এই ঘটনার পর আফ্রিদিকে দুটো টি-২০ ম্যাচে নির্বাসিত করা হয়।
কপিল দেব
নির্বাসনের হাত থেকে রক্ষা পাননি ভারতের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার কপিল দেবও। ১৯৯৩-৯৪ মরসুমে তিনি নির্বাসনের কারণে একটি টেস্ট ম্যাচ খেলতে পারেননি। তবে কারণটা শুনলে আপনিও অবাক হয়ে যাবেন। এর আগের ম্যাচে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে রান করার কারণেই এই ম্যাচে কপিল দেবকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছিল। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় একদিনের ম্যাচে যখন কপিল দেব ব্যাট করতে নেমেছিলেন, তখন ভারতের স্কোর ১০০-র থেকে কিছুটা কম ছিল। এরপরেই ব্যাট হাতে বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন হরিয়াণা হারিকেন। কিন্তু এই বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের কারণেই তাঁকে পরবর্তীকালে সমস্যার মুখে পড়তে হয়। এর বহুবছর পরে কপিল নিজের আত্মজীবনীতে এই ঘটনার কথা উল্লেখ করেন।
শোয়েব আখতার
যেখানে শোয়েব আখতার থাকবেন, সেখানে যে বিতর্ক থাকবে না; এমন কথা যেন দুঃস্বপ্নেও কল্পনা করা যায় না। ইতিমধ্যেই বহু ঝামেলার মধ্যে নাম জড়িয়েছে আখতারের। কিন্তু প্রথমবার টি-২০ বিশ্বকাপ চলাকালীন পাকিস্তানের ড্রেসিংরুমে শোয়েব যা করেছিলেন, তারপর তাঁকে সোজা নির্বাসনের দরজা দেখিয়ে দেওয়া হয়েছি। সূত্রের খবর, ড্রেসিংরুমের মধ্যে পাকিস্তানের প্রত্যেক ক্রিকেটারই উত্তপ্ত বাদানুবাদ করছিলেন। ঠিক সেইসময় শাহিদ আফ্রিদি কিছু অশ্লীল শব্দ প্রয়োগ করলে আখতার তাঁর দিকে ব্যাট নিয়ে তেড়ে যান। শোনা যায়, আফ্রিদিকে মারার বদলে তিনি মহম্মদ আসিফকে মেরে দেন। এরপরই শোয়েবকে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরে অবশ্য আখতার জানিয়েছিলেন, আফ্রিদি নাকি তাঁর পরিবারের সম্পর্কে খারাপ মন্তব্য করেছিলেন। সেকারণেই তিনি রেগে যান। পাশাপাশি আসিফকে মারার জন্য তিনি ক্ষমাও চেয়ে নেন।
রবীন্দ্র জাদেজা
ভারত বনাম শ্রীলঙ্কা একদিনের ম্যাচ চলাকালীন রবীন্দ্র জাদেজাকে এক ম্যাচের জন্য নির্বাসিত করা হয়েছিল। অন্য ক্রিকেটারের দিকে ভুলভাবে বল ছোঁড়ার কারণেই তাঁকে এই নির্বাসনের মুখে পড়তে হয়। শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যান দিমুথ করুণারত্নকে তখন বল করছিলেন জাদেজা। ঠিক এইসময় জাদেজার হাতে বল আসতেই তিনি সোজা ব্যাটসম্যানের দিকে ছুঁড়ে মারেন। মাঠে উপস্থিত আম্পায়ার এই সিদ্ধান্ত নেন যে জাদেজার এই আচরণ যথেষ্ট মারাত্মক। পাশাপাশি জাদেজার নামে তিনটে ডিমেরিট পয়েন্টও যুক্ত হয়ে যায়। এর আগেও নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট ম্যাচ খেলার সময় জাদেজার বিরুদ্ধে পিচ নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছিল। তখনও তাঁর নামের পাশে তিনটে ডিমেরিট পয়েন্ট যুক্ত হয়। অর্থাৎ জাদেজার নামের পাশে ৬ ডিমেরিট পয়েন্ট যুক্ত হওয়ার কারণে তাঁকে এক ম্যাচের জন্য নির্বাসিত হতে হয়।