৮২ দিন পর জয়ের মুখ দেখল ইস্টবেঙ্গল (East Bengal)। তাও আবার বিদেশের মাটিতে। এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের (AFC Challenge League) দ্বিতীয় ম্যাচে বসুন্ধরা কিংসকে (Basundhara Kings) ৪-০ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের আশা জিইয়ে রেখেছেন দিমিত্রিয়াস ডিমানটাকোসরা। বড় ব্যবধানে জেতার ফলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগও থাকছে তাদের সামনে। ৭ আগস্ট ডুরান্ড কাপে (Durand Cup) ডাউনটাউন হিরোজ এফসি-র বিরুদ্ধে শেষবার জয়ের মুখ দেখেছিল ইস্টবেঙ্গল। তারপর থেকে শুধু হার অর হার জুটেছে তাদের বরাতে।
শনিবার এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে ভুটানের পারো এফসি-র সঙ্গে ড্র করে ইস্টবেঙ্গল। টানা আট ম্যাচে হারের পর সেটাই ছিল লাল- হলুদের প্রথম পয়েন্ট। তার রেশ কাটার আগেই জয়ের দেখাও পেয়ে গেল তারা, নয় ম্যাচ পর। এই জয়ের ফলে দু'ম্যাচে চার পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপে দু'নম্বরে উঠে এসেছে ইস্টবেঙ্গল। সমসংখ্যক ম্যাচে ২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে সেবাননের নেজামেহ এফসি। ১ নভেম্বর তাদের হারালেই সরাসরি নকআউটে পৌঁছে যাবে ইস্টবেঙ্গল। তবে সেই মাচ থেতে পুরো পয়েন্ট না পেলে, অর্থাৎ ড্র করলেও শেষ আটে যাওয়া নিয়ে জটিল অঙ্কের মধ্যে পড়বে ইস্টবেঙ্গল। কারণ নিয়ম অনুযায়ী, এই প্রতিযোগিতার পশ্চিমাঞ্চলের তিন গ্রুপের চ্যাম্পিয়নদের পাশাপাশি সেরা দ্বিতীয় স্থানাধিকারী দল যাবে নকআউটে। যদিও এদিন যে ফর্মে প্রথমার্ধ খেলল ইস্টবেঙ্গল, তা ধরে রাখতে পারলে নেজমের বিরুদ্ধে জিততে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
মঙ্গলবার লিড নিতে মাত্র ৩৩ সেকেন্ড সময় নেয় ইস্টবেঙ্গল। মাদিহ তালালের সঙ্গে পাস খেলে কর্নার ফ্ল্যাগের কাছ থেকে বক্সের মধ্যে বল রেখেছিলেন লালচুংনুঙ্গা। বাঁ পায়ের মাপা শটে গোল করে যান দিমিত্রিয়স দিয়ামাস্তাকস। বলা হচ্ছে, এএফসি-র মঞ্চে এটাই সর্বকালের দ্রুততম গোল। আইএসএল এবং এই প্রতিযোগিতা মিলিয়ে শেষ তিন ম্যাচেই গোল পেলেন তিনি। তবে শেষ ম্যাচেও এভাবে এগিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটেই পাল্টা গোল খেয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। এদিন সেই সম্ভাবনা এড়াতে শুরু থেকেই বসুন্ধরা ডিফেন্সকে প্রবল চাপের মধে রাখলেন নন্দকুমার, তালালরা বেশ কয়েকটা ব্যর্থ চেষ্টার পর সাফল্য এল ২০ মিনিটে। জটলার মধ্য থেকে বল বল পেয়ে যান সৌভিক চক্রবর্তী। প্রথম একাদশে প্রত্যাবর্তনটা দূরন্ত এক ভলিতে স্মরণীয় করে রাখলেন বঙ্গ মিডফিল্ডার।
সৌভিকের গোলের কয়েক সেকেন্ড আগে নন্দর সাজিয়ে দেওয়া বল তিনকাঠিকে রাখতে পারেননি মহেশ সিং, উড়িয়ে দেন বারের উপর দিয়ে। সেই ব্যর্থতা ঢেকে দিলেন সৌভিক। ২৬ মিনিটে ফের গোল করল ইস্টবেঙ্গল। সোলো রানে বক্সে ঢুকে প্রতিপক্ষের তিন ডিফেন্ডারের মধ্য দিয়ে গোলে শট রেখেছিলেন নন্দ। বসুন্ধরা গোলকিপার আনিসুর রহমান জিকো তার নাগালই পাননি। ৩৩ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ের ভলিতে ৪-০ করলেন আনোয়ার আলি। ওখানেই একপ্রকার ঠিক হয়ে যায় ম্যাচের ভাগ্য। দ্বিতীয়ার্ধে বসুন্ধরা বেশ কয়েকটা সুযোগ পেয়েছিল। তবে গোলকিপার প্রভসুখন গিল আর আনোয়ারের সৌজন্যে শেষ পর্যন্ত ক্লিনশিট রেখে জিতল ইস্টবেঙ্গল।