ওড়িশা এফসি-র (Odisha FC) বিরুদ্ধে প্লে অফের ম্যাচে ভয়ঙ্কর চোট পেয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন। ভর্তি করতে হয়েছিল হাসপাতালে। চোট পাওয়ার পরেও দারুণ ভাবে ফিরে এসেছেন এটিকে মোহনবাগান গোলরক্ষক বিশাল কাইত (Vishal Kaith)। হায়দরাবাদের (Hyderabad FC) মাঠে সবুজ-মেরুনের শেষ দুর্গের প্রহরী কিছু অসাধারণ সেভ না করলে সেমিফাইনালে ঘরের মাঠে পিছিয়ে থেকেই নামতে হত জুয়ান ফেরান্দোর (Juan Ferrando) ছেলেদের। আইএসএল-এ (ISL) ধারাবাহিক ভাবে ভাল পারফর্ম করার পুরস্কার পেয়েছেন বিশাল। তবে ঘরের মাঠে সমর্থকদের সমর্থন তাঁর মন ভালো করে দিয়েছে।
বিশাল বলেন, 'আমি কোনোদিন ভাবিনি ২১টা ম্যাচ গোলের নীচে দাঁড়াতে পারব। সেটা সম্ভব হয়েছে ঘরের মাঠে দারুণ সমর্থকদের জন্য। ওড়িশা এফসি-র বিরুদ্ধে যখন আহত হই তখন। জীবনে কোনোদিন ওরকম চোট পাইনি। মিনিট খানেক অজ্ঞানও হয়ে গিয়েছিলাম। মাঠে অ্যাম্বুলেন্স ঢুকেছিল। সেই অবস্থায় সকলেই আমাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে। জা দেখে আমি আপ্লুত। উঠে দাঁড়ানোর পর সমর্থকরা যেভাবে আমাকে উদ্বুদ্ধ করেছে তা কোনোদিন ভুলব না।'
আরও পড়ুন: ডার্বিতে ফের মুখোমুখি মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল, কবে?
সোমবার দ্বিতীয় লেগে খেলতে নামছে মোহনবাগান
সোমবার সেমিফাইনালের দ্বিতীয় পর্বে হায়দরাবাদ এফসির বিরুদ্ধে খেলতে নামছে এটিকে মোহনবাগান। আইএসএল সেমিফাইনালের প্রথম লেগে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই গোলশূন্য ভাবে শেষ হয়। আর তাই সোমবারের ম্যাচ গুরুত্বপূর্ণ মোহনবাগানের কাছে। কারণ এই ম্যাচেই ফয়সলা হয়ে যাবে কে যাবে আইএসএল ফাইনালে। সেই কারণেই এই ম্যাচে নামার আগে ফোকাসড জুয়ান ফেরান্দোর দল। ঘরের মাঠে নিজেদের সেরা পারফরম্যান্স দিতে মরিয়া সবুজ-মেরুন ব্রিগেড।
গোল্ডেন গ্লাভস পেয়েও সন্তুষ্ট নন বিশাল
জীবনে প্রথমবার গোল্ডেন গ্লাভস পেয়েছেন হিমাচল প্রদেশ থেকে উঠে আসা এই গোলকিপার। বিশাল বলেন," গোল্ডেন গ্লাভস পেয়ে ভাল লাগছে। যে কোনো গোলরক্ষকের কাছেই স্বপ্ন থাকে এই সম্মান পাওয়ার। বিশ্বকাপ থেকে আইএসএল বা বিভিন্ন প্রতিযোগিতায়, সব জায়গাতেই দেখতাম যে, কোনও একজন গোলরক্ষক এই সম্মান পাচ্ছেন। আমারও স্বপ্ন ছিল এই সম্মান পাওয়ার। জীবনে প্রথমবার এই সম্মান পেলাম। এটা হয়তো আমাকে আরও ভাল খেলতে উদবুদ্ধ করবে।'' গোল্ডেন গ্লাভস পেয়েও সন্তুষ্ট নন বিশাল। এখনও অনেকটা পথ হাঁটা বাকি। তাই চ্যাম্পিয়ন হওয়াই লক্ষ্য তাঁর। বিশাল বলেন, 'গোল্ডেন গ্লাভস পেয়ে আমি সন্তুষ্ট নই। আমার সামনে এখন দুটি লক্ষ্য। প্রথমত, শেষ দুটো ম্যাচ জিতে নিজে অপরাজিত থাকা। দ্বিতীয়ত, দুটি ম্যাচ জিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়া। সেই লক্ষ্যেই সোমবার মাঠে নামবো। মাঠে যখন নামব তখন এই সম্মানের কথা মাথায় রাখতে চাই না। ট্রফি না পেলে এই সম্মানের কোনো দাম নেই আমার কাছে।'
আরও পড়ুন: ২৩ মার্চ বোর্ড মিটিং, ৫ বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারে ইমামি-ইস্টবেঙ্গল
বিশাল এখনও মনে করেন নিজের সেরা ফর্মে পৌঁছাতে পারেনি। মোহনবাগান গোলরক্ষক বলেন, 'গোল্ডেন গ্লাভস পেলেও আমি এখনও আমার সেরা ফর্মে পৌঁছতে পারিনি। আমার লক্ষ্য আরও ভাল খেলা। আমি অনেক গোল সেভ করেছি বলে খুব হইচই হচ্ছে। কিন্তু মনে করি, গোলরক্ষকের কাজই হল গোল অক্ষত রাখা। আমি সেই কাজটাই করেছি মাত্র। এবং এর জন্য আমি কৃতজ্ঞ দলের সতীর্থ এবং কোচেদের কাছে। তাদের জন্যই আমি এই সম্মান পেয়েছি। আমার পাওয়া সম্মান আমি ওদেরই উৎসর্গ করতে চাই। ফুটবল দলগত খেলা। সবাই ভাল না খেললে ম্যাচ জেতা যায় না। অনেকেই জানতে চাইছে আমি যে সেভ গুলো করেছি তার মধ্যে সেরা কোনটা? আমার মতে গত বৃহস্পতিবার হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে প্রথম সেমিফাইনালের শুরুর দিকে কিয়ানিসের যে হেডটা ডানদিকে ঝাঁপিয়ে সেভ করেছি, ওটাই এই মরশুমে আমার করা সেরা সেভ। ওই বলটা বেশ কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দিয়েছিল আমাকে।'