এবারের ইন্ডিয়ান সুপার লিগে একেবারেই ভাল জায়গায় নেই বাংলার দুই বড় ক্লাব। শনিবার ফিরতি ডার্বিতে মুখোমুখি হবে এসসি ইস্টবেঙ্গল ও এটিকে মোহনবাগান (SC East Bengal VS ATK Mohun Bagan)। সাত নম্বরে থাকা এটিকে মোহনবাগানকে এই ম্যাচ থেকে তিন পয়েন্ট তুলতেই হবে। এসসি ইস্টবেঙ্গলে শুধুই লজ্জা এড়ানোর লড়াই। গোটা টুর্নামেন্টেই দুই দলকে ভাবিয়েছে তাদের গোলরক্ষক সমস্যা। আজতক বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রাক্তন গোলরক্ষক ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ''গোটা ভারতেই ভাল গোলরক্ষক তৈরি হচ্ছে না। ফলে সমস্যা হচ্ছে সকলেরই। ডার্বিতে যে কোনও সময় যে কোনও দল গোল খেয়ে যেতে পারে। কারণ অরিন্দম বা অমরিন্দর কেউই ছন্দে নেই। অরিন্দম আগের দিন যে গোলটা প্রথমে খেল তাতে আত্মবিশ্বাসের অভাব পরিষ্কার।'' এসসি ইস্টবেঙ্গলে এবার যোগ দেওয়া অরিন্দম ভট্টাচার্য আগের বার এটিকে মোহনবাগানের হয়ে আইএসএল-এর সেরা গোলরক্ষক নির্বাচিত হয়েছিলেন।
এটিকে মোহনবাগান এর পরেও মুম্বাই সিটি এফসি থেকে অমরিন্দর সিংকে সই করায়। এএফসি কাপে দলে থাকলেও খেলার সুযোগ দেওয়া হয়নি অরিন্দমকে। এটিকে মোহনবাগানে থাকলে সুযোগ মিলবে না সম্ভবত এটা বুঝতে পেরেই এসসি ইস্টবেঙ্গলের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান অরিন্দম। ভাস্কর যদিও মনে করেন, এতে দুই দলের কোনও দলেরই লাভ হয়নি (SC East Bengal VS ATK Mohun Bagan)। তিনি বলেন, ''এটিকে মোহনবাগানের ডিফেন্স অনেকটাই ভাল। মুম্বাই সিটি এফসি-র ক্ষেত্রেও তাই। সেই কারণেই অমরিন্দরের ভুলগুলো চোখে পড়েনি এতদিন। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে যে ধরনের ভুল ওর থেকে আমরা দেখেছি তাতে প্রশ্ন উঠতে বাধ্য। অন্যদিকে অরিন্দমের ব্যাপারটাই পুরো উল্টো। দলটাই খেলতে পারছে না। ফলে আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরছে ওর। মাঝেমাঝেই দেখছি বল ফিস্ট করে এমন জায়গায় ফেলছে যেখান থেকে ফের বিপদ তৈরি হয়ে যেতে পারে। তাই ডার্বিতে যে গোলরক্ষক যত কম ভুল করবে তার দলই কিছুটা এগিয়ে থাকবে।''
প্রশ্ন ছিল ১০-এর মধ্যে দুই গোলরক্ষককে আপনি কত দেবেন? প্রশ্ন শুনেই হেসে ফেললেন ভাস্কর। তিনি বলেন, ''কী নম্বর দেব? ধারাবাহিকতাই নেই। বড় দলে খেলা অত সহজ নয়। ডার্বি (SC East Bengal VS ATK Mohun Bagan) তো আরও কঠিন। দুই জনের কারুরই খুব বেশি ডার্বি খেলার অভিজ্ঞতা নেই। তাই নম্বর দেওয়ার জায়গা এখনও আসেনি।''
আরও পড়ুন: ডার্বির আগে নতুন ফুটবলার সই করাল এসসি ইস্টবেঙ্গল
আরও পড়ুন: ICC র্যাঙ্কিংয়ে রোহিতকে টপকে গেলেন বিরাট, রইল পুরো তালিকা
১০ টা ম্যাচ খেলে ফেলেছেন অমরিন্দর। মাত্র দুটি ক্লিনশিট রয়েছে তাঁর। অন্যদিকে আরও খারাপ অবস্থা অরিন্দমের। ৯ ম্যাচে মাত্র একটা ক্লিন শিট। এসসি ইস্টবেঙ্গলের আরও এক গোলরক্ষক শুভম সেনও এগিয়ে রয়েছেন তাঁর থেকে। মাত্র চার ম্যাচে দুটি ক্লিন শিট রয়েছে তাঁর। অমরিন্দর সিং ছাড়া নামানোর মত কোনও গোলরক্ষকও নেই এটিকে মোহনবাগানের কাছে। যারা রয়েছেন তাঁদের মধ্যে অভিলাশ পাল প্রায় চার বছর আইএসএল-এর দলে থাকলেও এখনও একটাও ম্যাচ খেলেননি। এটিকে অ্যাকাডেমির থেকে উঠে আসা আর্শ শেখও এখনও একটাও ম্যাচ খেলেননি।
ভারতীয় গোলরক্ষকদের সঠিক প্রশিক্ষন দেওয়া হচ্ছে না বলেই মনে করেন ভাস্কর। তিনি বলেন, ''বেসিক জায়গায় কী করে ভুল হয় বলুন তো? এখন কাউকে বল গ্রিপ করতে দেখি না। শুধু ফিস্ট করে বাঁচিয়ে দেওয়া। গ্রিপ করলে যে আত্মবিশ্বাস বাড়ে সেটা বুঝতে হবে। টেকনিক আরও ভাল করতে হবে। এগুলো অনেক অনুশীলনের পর ঠিক হয়। এখন আর সেই সময় নেই। কিন্তু মরশুমের শুরুতে গোলরক্ষক কোচরা কী করছিলেন আমি জানি না। শুধু এই দুই দল নয়, ভারতের এক নম্বর গোলরক্ষক গুরপ্রীত সিং সান্ধুকেও গ্রাউন্ডার বলে গোল খেতে দেখে অবাক হচ্ছি। এ ভাবে কেউ গোল খায়? তাও আবার এত বড় মঞ্চে। তবে কী শুরুতেই গলদ থেকে গেল?''