বেঙ্গালুরু এফসিকে হারিয়ে ডুরান্ড ফাইনালে মোহনবাগান সুপার জায়েন্ট। একটা সময় ০-২ গোলে পিছিয়ে ছিল মোহনবাগান সুপার জায়েন্ট। তবে ফিরে আসা কাকে বলে তা মঙ্গলবারও দেখিয়ে দিল তারা। টাইব্রেকারে খেলা গড়ালে বিশাল কাইথ ফের দুটি সেভ করে দলকে ফাইনালে যাওয়ার রাস্তা পরিস্কার করে দেন। ফাইনাল শনিবার নর্থইস্টের বিরুদ্ধে।
প্রথমার্ধে দারুণ ফুটবল খেলে দুই দল। আক্রমণ প্রতি আক্রমণে বারবার বিপক্ষের রক্ষণে কাঁপুনি ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা থাকলেও গোলের দরজা খুলছিল না। একেবারে শেষদিকে বিনিথ ভেঙ্কটেশকে বক্সে ঢোকার মুখে ফাউল করে বসেন মোহনবাগানের তারকা লিস্টন কোলাসো। রেফারি পেনাল্টি দেন। একে ফাউল তারপর রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে বাদনুবাদে জড়ানোয় শাস্তি পেতে হয় লিস্টনকে। হলুদ কার্ড দেখিয়ে সতর্ক করা হয় তাঁকে। পেনাল্টি থেকে ঠান্ডা মাথায় গোল করে দলকে এগিয়ে দেন ক্যাপ্টেন সুনীল ছেত্রী।
এরপরে গোল করার সুযোগ এলেও টম অ্যালড্রেডের হেড বারে লেগে ফেরে। আর লিস্টনের শটও একইভাবে প্রতিহত হওয়ায় প্রথমার্ধে সমতা ফেরাতে পারেনি মোহনবাগান। এর সঙ্গে সমস্যা বাড়ে চোট পেয়ে ক্যাপ্টেন শুভাশিস বসু মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ায়। তিন ডিফেন্ডারে খেলতে গিয়ে বারে বারে হোসে মলিনার দলের ডিফেন্সের সমস্যা বেরিয়ে আসছিল।
দ্বিতীয়ার্ধে মাথা গরম করে আরও একটা গোল খেয়ে বসে মোহনবাগান। বিনা কারণে মাথা গরম করার খেসারত দিতে হয় জেসন কামিন্সদের। গোল করে যান এর আগে পেনাল্টি এনে দেওয়া ভেঙ্কটেশ। পেরেরা দিয়াস সবুজ-মেরুন ডিফেন্সের ভুলথেকে ফয়দা তোলেন। বাধা দেওয়ার জন্য কোনও ডিফেন্ডার না থাকায় এগিয়ে আসেন মোহনবাগান গোলকিপার বিশাল কাইত। তাঁকে এড়িয়ে পেরেরা পাস দিয়ে দেন ভেঙ্কটেশকে। ফাঁকা গোলে বল ঠেলে দেন বেঙ্গালুরুর তারকা।
দুই গোল খেয়ে আশিস রাই ও গ্রেগ স্টুয়ার্টকে নামিয়ে দেন মোলিনা। তিন স্ট্রাইকারে চলে যায় মোহনবাগান। গুরপ্রীত সিং সান্ধুর ভুল থেকে বল পেয়ে গিয়েছিল মোহনবাগান। ফাঁকা গোলে বল হেড করে গোলে রাখতে পারেননি স্টুয়ার্ট। তবে চাপ বাড়াতে থাকে মোহনবাগান। ডানদিক বাঁদিক থেকে একের পর এক আক্রমণ আছড়ে পড়তে থেকে বেঙ্গালুরু ডিফেন্সে। ৬৬ মিনিটে বক্সের মধ্যে লিস্টন কোলাসোকে জার্সি ধরে ফেলে দেওয়ায় পেনাল্টি পায় সবুজ-মেরুন। ৬৯ মিনিটে দিমিত্রি পেত্রাতোস, গুরপ্রীতকে উল্টোদিকে ফেলে গোল করে যান। উল্টোদিকে পরিবর্ত হিসেবে নামা দুই ফুটবলারের সৌজন্যে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ এসে গিয়েছিল বেঙ্গালুরুর সামনে। হলিচরন নাজারির ফ্রিকিক হেড করেন মেন্ডেস। তবে বিশাল তা দক্ষতার সঙ্গে বাঁচিয়ে দেন।
এরপর দারুণ শটে গোল করে দলকে সমতা এনে দেন অনিরুদ্ধ থাপা। কর্নার থেকে বল পান তিনি। গোল থেকে অনেকটা দূরে থাকলেও তাঁর চেটো দিয়ে মারা শট সরাসরি গোলে ঢোকে। ৯০ মিনিটে আর গোল হয়নি। ফলে টুর্নামেন্টের নিয়ম অনুযায়ী পেনাল্টি শুট আউটে গড়ায় ম্যাচ।
প্রথম শটে গোল করেন কামিন্স। গুরপ্রীতকে উল্টোদিকে ফেলে গোল করে যান বিশ্বকাপার। বেঙ্গালুরু হয়ে প্রথম শট নিতে আসেন মেন্ডেজ। বিশাল্কে সুযোগ না দিয়ে গোল করে যান তিনি। মনবীর সিং-এর শট টপ কর্নারে লাগে। রাহুল ভেকের শটও গোলে ঢোকে। লিস্টনও গোল করতে ভুল করেননি। পেদ্রো কাপাও গোল করে যান। পেত্রাতোসের শট আরও একবার বাঁচাতে ব্যর্থ হন গুরপ্রীত। মিস করেন বেঙ্গালুরুর হলিচরন। দারুণ সেভ করেন বিশাল। স্টুয়ার্টও মিস করেন। ডানদিকে ঝাঁপিয়ে সেভ করেন গুরপ্রীত। আবার সেভ করে দলে জেতান বিশাল।