FIFA World Cup 2022: নির্ধারিত সময় ম্যাচ ২-২ গোলে ড্র থাকার পর, শেষ মুহূর্তে মেসির গোল। আর তাতেই বিশ্বকাপ জিতল আর্জেন্টিনা। এক্সট্রা টাইমে ম্যাচ গড়ালেও জয় পেল নীল-সাদা ব্রিগেড। ৩৬ বছর পর স্বপ্নপূরণ মেসির। মনে করিয়ে দিলেন ১৯৮৬ সালের মারাদোনার ফুটবল বিশ্বকাপের স্মৃতি।
পরাজয়ের গ্লানি থেকে সাফল্যের উত্তরন। অতলে হারিয়ে যাওয়া থেকে সিংহাসনে অবতরণ। আর্জেন্টিনা দেখাল, ফুটবল কৌলিন্যে তারাও প্রথম সারিতে। ১৯৭৮,১৯৮৬-এর পরে ২০২২ আর্জেন্টিনার এই বিশ্বকাপ জয় যেন এক মহাকাব্যিক রূপকথা। খাতায় কলমে আর্জেন্টিনার তুলনায় এগিয়ে ছিলেন ফরাসীরা। তবুও একটা “কিন্তু” লিখতে হচ্ছিল কারণ লিওনেল মেসি নামক যাদুকরের উপস্থিতি। প্রতিপক্ষ যার দাপটের সামনে ধারে ভারে এগিয়ে থেকেও সাহসী হতে ভয় পায়।
“মেসিফোবিয়া”র এই আতঙ্কই তুলিকলার দেশকে স্বচ্ছন্দ হতে দেয়নি। আর আর্জেন্টিনার অধিনায়কের উপস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে বিশ্বকাপ ফাইনালের বাজিগর অ্যাঞ্জেলো ডি মারিয়া। তাঁর বাঁ পায়ের স্কিল মনোহারিণী। কিন্তু মেসির আলোয় তা চিরকালই আড়ালে। ফাইনালে সেই লুকিয়ে থাকা স্কিলেই রূপোর দেশে সোনার কাপ। ২৩ মিনিটে বক্সের মধ্যে ডি মারিয়াকে ল্যাং মারলেন ডেম্বেলে। ন্যায্য পেনাল্টি। তা থেকে গোল করতে ভুল করেননি লিওনেল মেসি। চলতি বিশ্বকাপে ছয় নম্বর গোলটি করে সোনার বুটের মালিক হলেন। বিশ্বকাপ ফাইনালে বয়স্কতম স্কোরারের রেকর্ড উঠল তাঁর নামের পাশে।
পিছিয়ে পড়ে প্রত্যাবর্তনের গল্প বিশ্বকাপে নতুন নয়। কিন্তু গ্রিজম্যান,এমবাপেরা তো মেসির পেনাল্টি থেকে গোলের ধাক্কায় তড়িতাহত। যা থেকে বাকি সময় বের হতে পারল না তারা। ৩৬ মিনিটে ফের গোল। এ বার মেসি,আলভারেজ, ডি মারিয়ার ত্রিফলায় বিদ্ধ ফ্রান্স। মাঝমাঠে মেসির বাঁ পায়ের চাটায় বাড়ানো বল ধরে আলভারেজের দৌড় এবং পিছন থেকে উঠে আসা ডি মারিয়ার জন্য তা বাড়িয়ে দেওয়া। ফরাসি ডিফেন্স স্তব্ধ করে গোল ডি মারিয়ার। ছত্রিশ মিনিটে জোড়া গোলের ধাক্কায় ফ্রান্স দিগভ্রষ্ট। প্রেসিং ফুটবলের নতুন ছকে কাপ জয়ের রাস্তা সাজিয়েছিলেন স্কালোনি। যার হদিশ দেশঁর ছেলেরা পাননি। তার পরই খেলা ঘোরান এমবাপে। দ্বিতীয়ার্ধে দুমিনিটের মধ্যে দু-দুটো গোল। সমতা ফেরাল ফ্রান্স। খেলা গড়াল অতিরিক্ত সময়ে। অতিরিক্ত সময়েও আর্জেন্টিনার ত্রাতা হলেন মেসি। শোধ করলেন এমবাপে। টাইব্রেকারেও প্রথম সুযোগেই বল জালে ঢোকালেন মেসি।
অঘটন,তারকা বিদায়ের আবহ কাতার বিশ্বকাপ জুড়ে। তার মধ্যে বেঁচেছিল মেসির কাপ স্বপ্ন। আর্জেন্টিনার তৃতীয়বার বিশ্বকাপ জয় স্বপ্নপূরনের সমাপতন। প্রয়াত মারাদোনার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘের সর্বোচ্চ ডালি। সেরাদের পঙক্তিতে স্থায়ী আসন লাভ করলেন জীবন্ত কিংবদন্তি মেসি।