বাঙালি রান্না খেতে দারুণ ভালবাসেন সচিন তেন্ডুলকর (Sachin Tendulkar)। জীবনের ইনিংসে হাফ সেঞ্চুরি করা মাস্টার ব্লাস্টার কলকাতায় এলেই তাঁকে রান্না করে খাওয়ান ময়দানের কর্তা সমর পালের স্ত্রী শুক্লা পাল। এরপর হঠাৎ কলকাতায় খেলতে এসে সটান সমর পালের বাড়িতে গিয়ে চিংড়ি মাছের মালাইকারি খাওয়ানোর আবদারও করেছিলেন সচিন। মারাঠি হলেও চিংড়ি মাছের মালাইকারি খেতে দারুণ ভালবাসেন সচিন। আধুনিক ক্রিকেটের ঈশ্বরের পঞ্চাশ বছরের জন্মদিনে সেই কথাই তুলে ধরলেন সিএবি-র প্রাক্তন কর্তা সমর।
বেঙ্গসরকারের সঙ্গে সমরের বাড়িতে যান সচিন
অধুনা সল্টলেক নিবাসী সমর এবং তাঁর স্ত্রী শুক্লা আপ্লুত। ক্রিকেট প্রশাসক হিসেবে রাজ্য ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থার যুগ্ম সচিবের দায়িত্ব দীর্ঘদিন সামলেছেন সমর পাল। কলকাতা ময়দানের অন্যতম পুরানো ক্লাব এরিয়ানের শীর্ষকর্তা হিসেবে আজও কাজ করে চলা সমর ক্রীড়া প্রশাসনে থাকার কারনে অনেক ক্রীড়াবিদদের দেখেছেন খুব কাছ থেকে। কিন্তু সমর বাবু আপ্লুত সচিনের আন্তরিকতায়। স্মৃতির পাতা উল্টাতে উল্টাতে তিনি বলেন, '১৯৮৭ সালে দিলীপ ভেঙ্গসরকারের সঙ্গে আমাদের শ্যামবাজারের বাড়িতে এসেছিল সচিন। তখন ও রঞ্জি ট্রফিতে খেলছিল। সেবার কলকাতায় খেলতে এসে একদিন রাতে ওরা দু'জন আমার বাড়িতে ডিনার করে। সেই সময়ই প্রথমবার বাগদা চিংড়ির মালাইকারি খেয়েছিল সচিন। রান্না করেছিল আমার স্ত্রী শুক্লা। খুব তৃপ্তি পেয়েছিল ও।'
আরও পড়ুন: ওয়াংখেড়ে জুড়ে 'সচিন সচিন', মাস্টার ব্লাস্টার্সের জন্মদিন পালন MI-এর
হঠাৎ সমরের বাড়িতে হাজির সচিন
সেই দিনের কথা বলতে গিয়ে সমর আরও বলেন, 'সে দিন প্রায় মধ্যরাত অবধি গল্পগুজব করেছিল ওরা দু'জন। তারপর হোটেলে ফেরে ওরা।' পুরনো দিনের কথা বলতে গিয়ে নস্টালজিক সমর পাল। কিংবদন্তি ক্রিকেটার হলেও পাল দম্পতির সঙ্গে এখনও নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন সচিন। তবে শুধু রঞ্জি খেলতে এসেই নয়, ১৯৮৮ সালে সমরের বাড়িতে হঠাৎ চলে গিয়েছিলেন সচিন। কলকাতায় কেনিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে চিংড়ি মাছের মালাইকারি খাওয়ার আবদারও করেছিলেন সচিন।
আরও পড়ুন: সচিনের জন্মদিন সেলিব্রেশনের দিনই লজ্জার রেকর্ড অর্জুনের, এক ওভারে খেলেন ৩১
সচিনের এমন আবদারে চমকে গিয়েছিলেন সমরবাবু। “আমি তো টেনশনে পড়ে গিয়েছিলাম। পরের দিন ম্যাচ আর সচিন চিংড়ি মাছের মালাইকারি খেতে চাইছে। কোনওরকম গন্ডগোল হলে সবাই আঙুল তুলবে আমার দিকেই। কিন্তু সচিন নাছোড়বান্দা। বলেছিলান ম্যাচের পরের দিন খেতে। কিন্তু ও রাজি নয়। কারন ভারতীয় দল ম্যাচের পরদিন খুব সকালে শহর ছাড়বে। তাই ম্যাচের আগের দিন না খেলে আর খাওয়া হবে না। অবশেষে রাজি হতেই হল। বড় বাগদা চিংড়ি নারকেলের দুধ দিয়ে আমার স্ত্রী রান্না করেছিলেন মালাইকারি।” তিনি আরও বলেন,“সেদিন একটু বেশি খেয়ে ফেলেছিল। সেটা নিজেও বলেছিল। তবে তাতে পারফরম্যান্সে যে প্রভাব পড়বে না সে ব্যাপারেও আশ্বাস দিয়েছিল। সেই আশ্বাস যে মিথ্যা ছিল না তা মাঠে প্রমানিত হয়েছিল মাঠে। তার দুরন্ত সেঞ্চুরি ভারতকে সহজ জয় পেতে সাহায্য করেছিল। ” মাস্টার ব্লাস্টার তারপর একটি ছবি সই করে উপহার দিয়েছিল পাল পরিবারকে। যেখানে লিখেছিলেন,“কিপ স্মাইলিং। ”
তেন্ডুলকর পঞ্চাশ বছরে পা দেবেন। তাঁর পঞ্চাশ বছরের জন্মদিন উপলক্ষে ইতিমধ্যেই উৎসব শুরু করেছেন। শুভেচ্ছার পাহাড় জমেছে সচিনের মোবাইলের ইনবক্সে এবং তার সোশ্যাল মিডিয়ার হ্যাণ্ডেলে। সেদিনের সচিন তেণ্ডুলকর এখন ক্রিকেট ঈশ্বর। পঞ্চাশে পা। সমর পাল বলছেন তারা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করবেন এভাবেই সাফল্যের চূড়োয় থেকে সচিন শতায়ু হন।