তৃতীয় দিনে একটাও বল খেলা হয়নি। চতুর্থ দিনে দারুণ ছন্দে ভারতের বোলাররা। ২৩৩ রানে বাংলাদেশকে অল আউট করে ভারতীয় দল। প্রথম ভারতীয় বাঁ হাতি স্পিনার হিসেবে ৩০০ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব গড়লেন রবীন্দ্র জাদেজা। সিরাজ, বুমরা ও অশ্বিন ২টি করে উইকেট নেন। ২ উইকেট পেয়েছেন বাংলার আকশদীপ ও। এই ম্যাচ জিততে পারলে নিশ্চিতভাবেই দারুণ ইতিহাস গড়বে।
আর মাত্র আট উইকেট দরকার ভারতের
দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের শুরুটা একেবারেই ভাল করতে পারেনি। ১৮ রানে জাকির হাসানের উইকেট হারায় সফরকারী দল। জাকির আর অশ্বিনের বলে এলবিডব্লিউ আউট হন। জাকির ১৫ বল খেলে ১০ রান করেন। এরপর নাইট ওয়াচম্যান হাসান মাহমুদকেও আউট করেন অশ্বিন। এরপর চতুর্থ দিনে নিজেদের দলকে আর কোনো ক্ষতি হতে দেননি শাদমান ইসলাম ও মুমিনুল হক। বাংলাদেশ এখনও ২৬ রানে পিছিয়ে রয়েছে।
দারুণ শুরু টিম ইন্ডিয়ার
জয়সওয়াল ও রোহিত দারুণ ছন্দে। ছক্কা ছাড়া মারছেন না রোহিত। অন্যদিকে জয়সওয়াল চার মারছেন। বিরাট চাপে বাংলাদেশ। রোহিত শর্মা ও যশস্বী জয়সওয়াল মাত্র ৩ ওভারেই ৫০ পার করে দিলেন তাঁরা। তবে ৫৫ রানের মাথায় আউট হন ভারতীয় দলের ক্যাপ্টেন। উইকেট নিলেন মিরাজ। ১১ বলে ২৩ রান করে আউট রোহিত।
যশস্বী জয়সওয়ালের সেঞ্চুরি করার সুযোগ থাকলেও হাসান মাহমুদের বলে বোল্ড হন তিনি। যশস্বী ৫১ বলে ৭২ রান করেন, যার মধ্যে ১২টি চার ও দুটি ছক্কা ছিল। এরপর শুভমান গিল ও ঋষভ পন্ত একসঙ্গে ইনিংস এ গিয়ে দেন। চায়ের সময় ভারতের স্কোর ছিল ১৩৭/২ রান।
চায়ের পর ভারতকে দুটি বড় ধাক্কা দেন সাকিব আল হাসান। সবার আগে শুভমান গিলকে (৩৯ রান, ৪টি চার ও একটি ছক্কা) আউট করেন শাকিব। এরপর ঋষভ পান্তকেও (৯) প্যাভিলিয়নে পাঠান তিনি। পন্ত ও গিল দুজনেই হাসান মাহমুদের বলে আউট হন। এরপর দায়িত্ব নেন বিরাট কোহলি ও কেএল রাহুল। ৩৫ রান করার পর কোহলি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দ্রুততম ২৭০০০ রান করার রেকর্ড গড়েন। এই বিষয়ে তিনি সচিন তেন্ডুলকরকে পেছনে ফেলেন। সচিন তাঁর ৬২৩তম ইনিংসে ২৭০০০ রান করেছিলেন। যেখানে ৫৯৪ তম ইনিংসে এই কৃতিত্বটি অর্জন করেছিলেন কোহলি।
বিরাট কোহলি ৩৫ বলে ৪৭ রান করে আউট হন, যার মধ্যে ৫টি চার ও একটি ছক্কা ছিল। শাকিব আল হাসানের বলে বোল্ড হন কোহলি। অন্যদিকে, কেএল রাহুল ৩৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন। অন্যদিকে, কোহলির আউটের পর ভারত হারিয়েছে রবীন্দ্র জাদেজা (৪) ও আর. অশ্বিনের (১) উইকেট। কেএল রাহুল মেহেদির বলে বড় শট মারতে গিয়ে স্টাম্পড হন। রাহুল ৪৮ বলে ৬৩ রানের ইনিংস খেলেন, যাতে সাতটিচার ও দুটি ছক্কা ছিল। রাহুলের পর ১২ রান করা মেহেদির বোলিংয়ে আকাশ দীপের উইকেট হারায় ভারত। আকাশ দীপ আউট হতেই ইনিংস ডিক্লেয়ার ঘোষণা করেন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা। বাংলাদেশের পক্ষে শাকিব আল হাসান ও মেহেদি হাসান মিরাজ নেন চারটি করে উইকেট।
সব উইকেট হারাল বাংলাদেশ
২৩৩ রানে ১০ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। বৃষ্টির তাণ্ডব দেখা গেছে এই ম্যাচে। তৃতীয় দিনে একটি বলও হয়নি কারণ প্রবল বৃষ্টির কারণে মাঠ খুব ভিজে গিয়েছিল। দ্বিতীয় দিনেও বৃষ্টির কারণে একটি বলও খেলা হয়নি। খারাপ আলো ও বৃষ্টির কারণে প্রথম দিনে মাত্র ৩৫ ওভার খেলা হয়েছিল। ম্যাচে টস জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা। তাঁর নেতৃত্বে টিম ইন্ডিয়া বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চেন্নাই টেস্ট ম্যাচে ২৮০ রানে জিতেছে। রবিচন্দ্রন অশ্বিন দারুণ অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করেন।
বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে এখন পর্যন্ত হাইলাইটস এই ম্যাচে শুরুটা ভালোই করে ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ম্যাচে নিজের প্রথম ওভার বল করতে আসা আকাশ দীপের বলে স্লিপে যশস্বী জয়সওয়ালের হাতে ক্যাচ আউট হয়ে যান জাকির হাসান। তখন বাংলাদেশ দলের স্কোর ছিল ২৬ রান। স্কোরবোর্ডে যখন মাত্র ২৯ রানে ঝুলছে আকাশ দীপ এলবিউড শাদমান ইসলাম (২৪)। লাঞ্চ পর্যন্ত বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৭৪/২। কিন্তু লাঞ্চের পরপরই অশ্বিনের বলে এলবিডব্লিউ হন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত (৩১)।
চতুর্থ দিনের খেলায় বাংলাদেশ শীঘ্রই একটি ধাক্কা খেয়েছিল যখন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম একটি দুর্দান্ত বলে জসপ্রিত বুমরার বলে ক্লিন বোল্ড হন। মুশফিকুর রহিম ৩২ বল মোকাবেলা করে ১১ রান করেন। রহিম আউট হওয়ার কিছুক্ষণ পরই হাফসেঞ্চুরি করেন মুমিনুল। এরপর বড় ধাক্কা পায় বাংলাদেশ, যখন রোহিত শর্মার হাতে মহম্মদ সিরাজের বলে ক্যাচ আউট হন লিটন দাস। তখন বাংলাদেশের স্কোর ১৪৮ রান। বাংলাদেশি ভক্তরা শাকিবের কাছ থেকে ভালো পারফরম্যান্স আশা করলেও বিশেষ কিছু করতে পারেননি তিনি। সাকিব (৯) মহম্মদ সিরাজের বলে ক্যাচ আউট করেন অশ্বিন। দারুণ ভাবে পেছনের দিকে ঝাঁপিয়ে ক্যাচ ধিরেন সিরাজ। শাকিবের আউটের সময় স্কোর ছিল ১৭০ রান। মুমিনুল দুর্দান্ত ব্যাটিং চালিয়ে যান এবং টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৩তম সেঞ্চুরি করেন। চতুর্থ দিনে লাঞ্চ পর্যন্ত বাংলাদেশের স্কোর ২০৫/২। লাঞ্চের পর, ভারতীয় দল তার সপ্তম সাফল্য পায়, যখন মেহেদি হাসান মিরাজ (২০) জসপ্রিত বুমরাকে প্যাভিলিয়নে পাঠান। প্রথম স্লিপে শুভমান গিলের হাতে ধরা পড়েন মেহেদি। এরপর বুমরাহও তাইজুল ইসলামকে (৫) বোল্ড করেন। এবার উইকেট নেওয়ার পালা মোহাম্মদ সিরাজের, যিনি হাসান মাহমুদকে (১) এলবিডব্লিউ আউট করেন।