স্বস্তি ফিরল বিসিসিআই নির্বাচকদের। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে চতুর্থ টেস্টের পর ধ্রুব জুরেলকেই জাতীয় দলের পরবর্তী উইকেটকিপার হিসাবে দেখছেন সবাই। তিনি যে দলে নিজের জায়গাটা আরও জোরাল করে নিলেন সেটা স্পষ্ট হল চতুর্থ টেস্টেই। প্রথম ইনিংসে ৯০ রান করার কঠিন পরিস্থিতিতে দ্বিতীয় ইনিংসেও ৩৯ রান করে অপরাজিত থাকেন জুরেল।
ঈশান কিশান, কেএস ভরত অনেকেই দীর্ঘদিন জাতীয় দলে খেলছেন। কিন্তু কেউই দলকে সেভাবে ভরসা জোগাতে পারেননি। আর সুযোগ পেয়েই তা কাজে লাগলেন ধ্রুব জুরেল। তিনি দেখিয়ে দিলেন তিনি তৈরি। মিডল অর্ডারে তাঁকে চোখ বন্ধ করে ভরসা করা যেতে পারে। সেই সঙ্গে উইকেটকীপিংটা তো আছেই। দলের কঠিন সময়ে পিচে দাঁড়িয়ে থেকে ব্রিটিশ বোলারদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন একা। তাঁর এই মানসিকতা যে তাঁকে বাকিদের থেকে এই লড়াইয়ে অনেকটাই এগিয়ে দিল সে ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই।
ঈশান কিষান যখন সুযোগ পেয়েও তা ছেড়ে দিলেন, ঠিক তখনই দু'হাতে সেই সুযোগ লুফে নিলেন জুরেল। উল্লেখ্য, ঈশান কিষান দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ থেকে সরে দাঁড়ান। তারপর একাধিকবার বোর্ডের নির্দেশ অমান্য করেন। কেএস ভরতও সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন। তাঁকেও অনেকগুলো ম্যাচেই দলে রাখা হয়েছিল। কিন্তু তিনি বারবার হতাশ করেন। অপরদিকে অভিষেক টেস্টেই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেন ধ্রুব জুরেল। যদিও অল্পের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেন তিনি। তবে সবাই মুগ্ধ তাঁর খেলা দেখে। তিনি যে দলকে দীর্ঘমেয়াদী সার্ভিস দেবেন সেটা বোঝাই যাচ্ছে। তাঁর খেলা দেখে প্রাক্তন কিংবদন্তী 'সুনীল গাওস্কার' পর্যন্ত বলে বসেন যে তিনি পরবর্তী 'ধোনির' ছায়া দেখতে পাচ্ছেন তাঁর মধ্যে। তবে তাঁর থেকে প্রত্যাশাও যে গগন চুম্বী হবে সেটা হয়তো তিনি ভালই বুঝেছেন। দলের মিডল অর্ডারের সমস্যা তিনি পূরণ করতে পারেন কি না সেটা তো সময়ই বলে দেবে। এবার যে তিনি দলের প্রথম চয়েস উইকেট কিপার হবেন ঈশান কিশন ও কেএস ভরতকে হারিয়ে সেটা পরিষ্কার।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত হাবিলদার নেম সিংহ। ছেলের আন্তর্জাতিক মঞ্চে অভিষেক দেখে যিনি আপ্লুত। তবে রবিবার ৯০ রান করে তিনি আউট হতেই শেষ হয় টিম ইন্ডিয়ার ইনিংস। বাবা নেম সিংহ কার্গিল যুদ্ধে লড়াই করেছেন। ফলে লড়াই তাঁর রক্তে। ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে এগিয়ে ৪৬ রানে। আন্তর্জাতিক কেরিয়ারে প্রথমবার পাঁচ উইকেট নিলেন শোয়েব বশির। রাঁচি টেস্ট ম্যাচের দ্বিতীয় দিন যশস্বী জয়সওয়াল ছাড়া যেখানে আর কেউ হাফ সেঞ্চুরি করতে পারেননি, সেখানে ম্যাচের তৃতীয়দিন হাফসেঞ্চুরি করে ফেললেন ধ্রুব জুরেল। তবে সবথেকে বড় কথা, এমন একটা জায়গা থেকে তিনি দলের হাল ধরেছিলেন যখন ভারতীয় ক্রিকেট শিবিরে অক্সিজেন প্রায় শেষই হয়ে গিয়েছিল। ধ্রুব'র এই ইনিংস নিয়ে ইতিমধ্যেই গোটা দেশজুড়ে প্রশংসার বন্যা বইতে শুরু করেছে।
দ্বিতীয় ইনিংসে আবার ১৯২ রান তাড়া করতে নেমে ১২০ রান গিয়েই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে টিম ইন্ডিয়া। সেখান থেকে শুভমন গিলের সঙ্গে জুটি গড়ে ভারতীয় দলকে ৫ উইকেটে জয়ের রাস্তা দেখান জুরেল।