নিউজিল্য়ান্ড-এর সামনে এখন একটাই লক্ষ্য হারের পরিণতিকে চতুর্থদিনে নিয়ে ফেলা যায় কি না। নইলে বলা হবে তিনদিনেই গুটিয়ে গেল কিউইরা। কানপুরের প্রথম টেস্টে কোনও রকমে হার বাঁচানো গিয়েছিল। কিন্তু মুম্বইতে কোনও পরিস্থিতিতেই তা সম্ভব নয়।
দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতীয় দল দ্রুত রান তোলার গেরোতে ৭ টি উইকেট হারিয়ে ফেলেন। যদিও তা ভারতীয় দলের স্ট্র্যাটেজির অংশ ছিল। ৭ উইকেটে ২৭৬ রান তুলে ভারত ইনিংসের সমাপ্তি ঘোষণা করে। নিউজিল্যান্ডের সামনে লক্ষ্য মাত্রা দাঁড়ায় প্রথম ইনিংসের লিজ মিলিয়ে ৫৪০ রানের। যা কঠিন নয় কার্যত অসম্ভব। কারণ এত বড় রান তাড়া করে আজ পর্যন্ত কেউ জেতেনি।
অনেকে ফলোঅন করানো নিয়ে প্রশ্ন তুললেও নিউজিল্যান্ড দল সাম্প্রতিক অতীত ভারতকে যেভাবে ভুগিয়েছে। তাতে তাঁদের মাঠে দৌড় করানোতে এবং নাজেহাল করানোর বিরাট স্ট্র্যাটেজিতে কোনও ভুল নেই। ৫৪০ রানের লক্ষ্য়ে আগেই কাঁধ ঝুলে গিয়েছিল নিউজিল্যান্ডের। সেই সঙ্গে জিততে হবে চাপটা আলগা হয়ে গিয়েছিল। কারণ ম্যাচ তাদের হাতের বাইরে চলে যায়। সেখানে চাপমুক্ত হয়ে খেলা শুরু করায় প্রথম ইনিংসের চেয়ে ঢের ভালো শুরু করেন কিউইরা। যদিও এমন পিচে দীর্ঘক্ষণ ঘূর্ণির মোকাবিলা অপ্রতিরোধ্য অস্ট্রেলিয়াও করতে পারেনি এক জমানায়। আর এই কিউই দল তাদের ধারেকাছেও নেই।
দ্বিতীয় ইনিংসে ড্যারেল মিচেল ভাল ব্যাট করেছেন। দিনের শেষে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন একা কুম্ভ হয়ে হেনরি নিকোলাস। তিনি ৩৬ রানে অপরাজিত রয়েছেন। সঙ্গে রয়েছেন সবে ক্রিজে আসা রাচিন রবীন্দ্র। সকাল সকাল লাঞ্চের আগেই খেলা গুটিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। দিনের শেষ কিউইরা ১৪০/৫। জিততে দরকার পাক্কা ৪০০ রান। কাল কিউইদের দেশে তাঁদের কোনও সমর্থক যদি টিভি না খোলেন, তাহলে তাঁদের দোষ দেওয়া যাবে না।
নিউজিল্যান্ডের পক্ষে সান্ত্বনার একটাই বিষয় প্রথম ইনিংসের মতো ল্যাজ গুটিয়ে যায়নি তাঁদের। অন্তত লড়াইয়ের চেষ্টাটা ফিরিয়ে এনেছেন। দলের একমাত্র ব্য়াটার যে কেন উইলিয়ামসন তা এদিন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন ভারতীয়রা। পাশাপাশি টেস্টের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা যে পিচের সহায়তা না পেলে ম্যাচ অনুকূলে আনতে পারেন না, তাও পরিষ্কার।
আহামরি বল না করেও আজাজ প্যাটেলের ১০ উইকেট নেওয়া বোধহয় হজম হয়নি ভারতীয় বোলারদের। তাই কিউই ইনিংসের শুরুতেই আগুনে পেস দিয়ে এক ঝটকায় তিনটি উইকেট ফেলে দেন মহম্মদ সিরাজ। ইশান্ত শর্মার চেয়ে তিনি যে এখন অনেক বেশি কার্যকর, তা প্রমাণিত। সিরাজের পথ ধরেই নিউজিল্যান্ড ইনিংসের টুঁটি চিপে ধরল ভারতীয় বোলাররা। ফল ৬২ রান তুলতেই পেট্রল খতম দ্বীপরাষ্ট্রের। তবে পিচে জুজু ছিল না তা প্রমাণিত দিন শেষে ময়াঙ্ক ও চেতেশ্বর পূজারার যুগলবন্দিতে।
এটি নিউজিল্যান্ডের জন্য একটি রোলার-কোস্টার দিন ছিল। এদিন ভারতীয় ইনিংসের ১০ উইকেট নিয়ে তাদের স্পিনার আজাজ প্যাটেল অনিল কুম্বলে ও জিম লেকারের ১০ উইকেটের রেকর্ঢ স্পর্শ করেন। তবে তাঁর আনন্দ স্থায়ী হয়েছে মাত্র এক ঘন্টা। ভারতের ৩২৫ রানের জবাবে মাত্র ৬২ রানে গুটিয়ে যায় কিউই ইনিংস।