ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal) জট কাটাতে কি ফের আসরে নামতে হবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee)? ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী তো ক্রীড়াপ্রেমী। বস্তুত, অতীতেও স্পনসরশিপ নিয়ে তৈরি হওয়া জট কাটাতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ISL জয়ী মোহনবাগান ক্লাব তাঁবুতে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে গিয়েও ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সমস্যা নিয়ে মুখ খোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছিলেন, 'যখন ওরা (ইস্টবেঙ্গল) শুরু করেছে, তখন দেরি হয়ে গিয়েছে। ওরা দলটাও ভাল করে তৈরি করতে পারেনি। কারণ, ওদের আর্থিক অসুবিধা ছিল। কিন্তু মোহনবাগান খেলাটা আগেই খেলে দিয়েছে। সঞ্জীব গোয়েঙ্কা তো টাকার অভাব নেই। ওরা নানা রকম ভাবে সাহায্য করে। বরঞ্চ বাড়তি সাহায্য করে ক্লাবটাকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে।'
আরও পড়ুন: কেন 'বেচারা' ইস্টবেঙ্গল পারছে না? মোহনবাগানের মঞ্চে কারণ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী
এবারও কি মুখ্যমন্ত্রীকেই হস্তক্ষেপ করতে হবে? ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের কথায়, 'আমাদের মুখ্যমন্ত্রী যেহেতু ক্রীড়াপ্রেমী, তাই আউট অফ দ্য ওয়ে গিয়ে সব ক্লাবের পাশে দাঁড়ান এবং তাদের সাহায্য করেন। খেলায় সাফল্য, ব্যর্থতা সবই থাকবে। সেটাকে নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। আশা করছি ইস্টবেঙ্গল ক্লাবও আগামীদিনে এগিয়ে যাবে।'
আরও পড়ুন: East Bengal জট কীভাবে কাটালেন মমতা? চুক্তি নিয়ে থেকেই যাচ্ছে প্রশ্ন!
এর আগের দুটি মরশুমেই ইনভেস্টর সমস্যায় জর্জরিত হয় ইস্টবেঙ্গল। শ্রী সিমেন্ট (Shree Cement) এবং ইস্টবেঙ্গল ক্লাব কর্তাদের মধ্যে সমস্যা এমন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছয় যে, শেষপর্যন্ত আসরে নামতে হয় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে। ক্লাব কর্তাদের সঙ্গে মতের অমিলের ফলেই ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গ ছাড়ে শ্রী সিমেন্ট। ফুটবলার থেকে কোচ এবং সর্বোপরি পারফর্ম্যান্স। সব ক্ষেত্রেই তলানিতে গিয়ে ঠেকে লাল হলুদের পরিসংখ্যান। বহু বছর তাঁবুতে নেই কোনও ট্রফি। প্রাক্তন ফুটবলারদের নিয়ে আলোচনায় পর্যন্ত বসেন ক্লাব কর্তারা। এমনকী আইএসএল (ISL) খেলা নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়ে যায়। আসরে নামেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নে ডেকে পাঠানো হয় ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকার (Debabrata Sarkar) এবং ইনভেস্টরদের। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে শ্রী সিমেন্ট ইনভেস্টর হিসেবে এলেও, একটি মরশুমের বেশি তারা থাকেনি।
ইমামির (Emami) সঙ্গে চুক্তির সময়েও ইস্টবেঙ্গলের হয়ে সওয়াল করেন মুখ্যমন্ত্রী। মোহনবাগান আইএসএল খেললে, ইস্টবেঙ্গল কেন খেলবে না, প্রশ্ন তোলেন তিনি। বারবার বৈঠকে বসেও যখন সমস্যার সমাধান হচ্ছে না, তখন বাধ্য হয়েই এগিয়ে আসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, ইমামি অনেকদিন ধরে বাংলায় ব্যাবসা করছে এবং ইস্টবেঙ্গলের একটি বড় ব্র্যান্ড ভ্যালু রয়েছে। উভয়পক্ষই চুক্তির প্রসঙ্গে রাজি হওয়ায়, সেই মোতাবেক ইমামিকে ইনভেস্টর হিসেবে পাওয়ার পর ফের আইএসএল খেলতে নামে ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু গত মরশুমেও একই হাল হয় দলের।
ক্রীড়ামন্ত্রীর দাবি, 'আইপিএল (IPL) আসবে, আইপিএল যাবে। কিন্তু দিনের শেষে ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান এবং মহামেডান ছাড়া আমরা কোনোকিছুই ধরে রাখতে পারব না।'
রিপোর্টার: শুভঙ্কর দাস