৩৬ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই রায় সংশোধন করলেন তিনি। জানালেন সংখ্যাটা হবে ৩৬ হাজার হবে না। ৩৬০০০ নয়, প্রাথমিক চাকরি বাতিলের সংখ্যা প্রায় ৩২ হাজার। নির্দেশ সংশোধন করে এমনটাই জানালেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
গত শুক্রবারই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় ৩৬ হাজার প্রশিক্ষণহীন শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন। কিন্তু, তারপর অভিযোগ করা হয়, প্রায় ৩২ হাজার প্রশিক্ষণহীন শিক্ষক ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় চাকরি পেয়েছিল। কিন্তু, নির্দেশে হাইকোর্ট জানিয়েছিল, ৩৬ হাজার। তা মঙ্গলবার সংশোধন করা হয়। এদিন শুনানিতে মাননীয় বিচারপতি জানান, দুটি ভুলের কথা ছিল। সেই দুটোই সংশোধন করা হবে। সেই দুটো সংশোধন করে, চাকরি বাতিলের সংখ্যাটি ৩২ হাজারের কাছাকাছি হবে। আর সর্বনিম্ন নম্বর সংশোধন করে হবে ১৩.৭৯৬।
আরও পড়ুন : ৩৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল কেন ? সামনে এল বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়
শুক্রবার ৩৬ হাজার প্রশিক্ষণহীন প্রাথমিক শিক্ষকদের চাকরি বাতিল নিয়ে মোট ১৭ পাতার আদেশনামা জারি করেন মাননীয় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ ছিল- ২০১৬ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের যে ইন্টারভিউ হয়েছিল তার সঙ্গে যেন স্থানীয় ক্লাব পরিচালনার মিল রয়েছে। অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট না-হওয়া সত্ত্বেও কীভাবে শিক্ষকতার চাকরি পেলেন চাকরিপ্রার্থীরা তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, শিক্ষাগত যোগ্যতার জন্য বরাদ্দ নম্বরে শেষে ঠাঁই পাওয়া প্রার্থীরা ইন্টারভিউয়ে কার্যত ১০-এ ১০ পেয়েছেন।
আরও পড়ুন : Mamata Banerjee-DA : \'ডিএ আবশ্যিক নয়, অপশন\', জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা
মাননীয় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের আরও পর্যবেক্ষণ, ২০১৬ সালের প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বিক্রি হয়েছে তাঁদের কাছে, যাঁদের টাকা আছে। বিচারপতি লেখেন, 'এমন পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতি এর আগে কখনও পশ্চিমবঙ্গে হয়নি। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী (পার্থ চট্টোপাধ্যায়), প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতি (মানিক ভট্টাচার্য) এবং কয়েক জন দালালের মাধ্যমে পণ্যের মতো চাকরি বিক্রি হয়েছে। ওই দু’জন এখন জেলবন্দি। তদন্তকারী ইডি এবং সিবিআই এ ব্যাপারে আরও তথ্য সামনে আনছে।'
মাননীয় বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছিলে, ২০১৬ সালের প্যানেলে যে ৩৬ হাজার জন অপ্রশিক্ষিত ছিলেন, তাঁদের সকলের চাকরি বাতিল। ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণরাও এই নিয়োগে অংশ নিতে পারবেন। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে যাঁদের চাকরি গেল, তাঁরাও নিয়োগপ্রক্রিয়ায় নতুন করে চাকরির আবেদন জানাতে পারবেন। তবে এই নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে হলে সকলকেই প্রশিক্ষিত হতে হবে। যাঁদের চাকরি বাতিল করা হল তাঁরা আগামী ৪ মাস ওই একই স্কুলে চাকরি করতে পারবেন। তবে তাঁরা প্য়ারা টিচারদের সমতুল্য বেতন পাবেন।