আদিত্য এলওয়ান মিশনের সাফল্যের প্রথম প্রমাণ চলে এসেছে। এই স্যাটেলাইটকে সোলার আলট্রাভায়োলেট ইমেজিং টেলিস্কোপ সূর্যের প্রথম ফুল ডিস্ক ছবি তুলেছে। এই সমস্ত ছবি ২০০ থেকে ৪০০ ন্যানোমিটার ওয়েভলেংথের ছবি। অর্থাৎ আপনাকে সূর্যের এগারোটা আলাদা আলাদা রঙে এটি দেখতে পাবেন।
আদিত্য এল ১ এর সুইট পেলোড ২০২৩-এর ২০ নভেম্বর অন করা হয়েছিল। এই টেলিস্কোপ সূর্যের ফটোস্ফিয়ার এবং ক্রমোস্ফিয়ারের ছবি নিয়েছে। ফটোস্ফিয়ার মানে সূর্যের পৃষ্ঠ এবং ক্রমোস্ফিয়ার অর্থাৎ সূর্যের পৃষ্ঠ এবং বায়ুমন্ডলের মধ্যে উপস্থিত পাতলা পরত। ক্রমোস্ফিয়ার সূর্যের পৃষ্ঠ থেকে ২ হাজার কিলোমিটার উপর পর্যন্ত থাকে।
এর আগে সূর্যের ছবি ডিসেম্বর ২০২৩ এ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেটি প্রথম লাইট সাইন্স ইমেজ ছিল। কিন্তু এবার ফুল ডিস্ক ইমেজ নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ সূর্যের যে অংশ সম্পূর্ণভাবে সামনে রয়েছে, তার ছবি। এই ছবিতে সবজিতে উপস্থিত দাগ, গর্ত এবং সূর্যের শান্ত অংশের ছবিও দেখা গিয়েছে। এই ছবির সাহায্যে বৈজ্ঞানিকরা ভাল ভাবে করতে পারবেন।
কোনও সংস্থা মিলে এই সুইট পে-লোড বানিয়েছে
সুইট পে-লোড পুনের ইন্টার ইউনিভার্সিটি সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাট্রফিজিক্স, মনিপাল অ্যাকাডেমি অফ হায়ার এডুকেশন, সেন্টার ফর এক্সিলেন্স ইন স্পেস সায়েন্স ইন্ডিয়ান, ইনস্টিটিউট অফ অ্যাস্ট্রফিজিকস জয়পুর, সোলার অফজার্ভেটরি তেজপুর ইউনিভার্সিটি এবং ইসরোর বৈজ্ঞানিকেরা মিলে তৈরি করেছে।
কি এই ল্যারেঞ্জ পয়েন্ট?
ল্যারেঞ্জ পয়েন্ট অর্থাৎ L. এই নাম গণিতজ্ঞরা জোসেফ লুই ল্যারেঞ্জের নামে রেখেছে। তিনি এই ল্যারেঞ্জ পয়েন্টস প্রথম খুঁজেছিলেন। যখন কোনও বস্তু অন্তরীক্ষে ঘুরতে থাকে এবং বস্তুর মধ্যে গ্রাভিটি একটা এমন পয়েন্ট আসে, যখন কোনও বস্তুর স্যাটেলাইট দুটি গ্রহের বা কোনও বড় বস্তুর গুরুত্বাকর্ষণ থেকে বেঁচে যায়।
আদিত্য এল ওয়ানও এই পৃথিবী এবং সূর্যের দুই গুরুত্বাকর্ষণ শক্তি থেকে বেঁচে রয়েছে। লঞ্চের পরে আদিত্য ১৬ দিন পর্যন্ত পৃথিবীর চারিদিকে চক্কর দেয়। এই সময়ে ৫ বার অরবিট বদলেছে। যাতে সঠিক গতি পেতে পারে। এরপর আদিত্যের শুরু হবে ১০৯ দিনের লম্বা যাত্রা। যখনই আদিত্য এলওওয়ানে পৌঁছবে তখন সেখানকার অরবিটের ম্যানুভার হবে। এলওয়ানের পয়েন্টে চারদিকে চক্কর দিতে পারে।
আদিত্য এলওয়ান কী?
আদিত্য এল ওয়ান ভারতের প্রথম অন্তরীক্ষ্য আধারিত অবজারভেটারি। এটি সূর্যের এতদূরে মোতায়েন করা হবে যেটি গরম অনুভব করবে কিন্তু খারাপ হবে না। কারণ সূর্যের পৃষ্ঠ থেকে কিছু উপরে থেকে ফটোস্ফিয়ারের তাপমাত্রা প্রায় ৫৫০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস থাকে। কেন্দ্রের তাপমাত্রা ১.৫০ কোটি ডিগ্রী সেলসিয়াস থাকে। এই পরিস্থিতিতে কোন যান বা কোনও কিছুই সেখানে যাওয়া সম্ভব নয়।
কী করবে আদিত্য এল ওয়ান স্পেসক্রাফট?
সৌর ঝড় আসার কারণ, সমস্ত ওয়েব এবং তার পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের উপর কী প্রভাব, আদিত্য সূর্যের করোনা থেকে বেরোনো গরম এবং গরমের হাওয়ার স্টাডি করবে। সমস্ত সমস্ত হাওয়ার বিভাজন এবং তাপমাত্রা স্টাডি করবে। সৌর বায়ুমণ্ডলকে বোঝার চেষ্টা করবে।