গত ৫ মে থেকে পশ্চিমবঙ্গে বন্ধ রয়েছে লোকাল ট্রেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে ১৬ মে থেকে রাজ্যজুড়ে কার্যত লকডাউন জারি করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। বিধিনিষেধের মেয়াদ আগামী ১৫ জুন পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যে সারাদিনে হাতে-গোনা কয়েকটা ট্রেন চলছে রেলকর্মীদের জন্য।
বিগত কয়েক সপ্তাহে হাওড়া ও শিয়ালদা শাখা মিলিয়ে দেড় হাজারেরও বেশি চালক, গার্ড ও রেলকর্মী করোনায় আক্রান্ত। ইতিমধ্যে শিয়ালদহ ডিভিশনে ৩০ জন রেলকর্মীর মৃত্যু হয়েছে করোনায়। আক্রান্ত হয়েছেন হাজার খানেক কর্মী।
এই পরিস্থিতিতে ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে কর্মীদের সুরক্ষিত রাখতে স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেনে যে কোনও সাধারণ যাত্রীদের ওঠার অনুমতি দিতে নারাজ রেল কর্তৃপক্ষ। তবে এতদিন শুধুমাত্র স্বাস্থ্যকর্মীদেরই স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেনে চড়ার অনুমতি মিলেছিল। এ বার সুযোগ পেতে চলেছেন বাংলার ব্যাঙ্ককর্মীরাও।
অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অ্যাসোসিয়েশনের থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গের ধাক্কায় দেশজুড়ে লক্ষাধিক ব্যাঙ্ককর্মী করোনায় আক্রান্ত। প্রাণ হারিয়েছেন হাজারেরও বেশি ব্যাঙ্ককর্মী। প্রাণ হাতে নিয়ে ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রের জরুরি পরিষেবা সচল রাখতে চেষ্টা চালাচ্ছেন ব্যাঙ্ককর্মীরা। এ বার বাংলার ব্যাঙ্ককর্মীদের দুর্ভোগ অনেকটাই কমতে চলেছে।
মঙ্গলবার অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসার্স’ কনফেডারেশনের (AIBOC) পশ্চিমবঙ্গ শাখার সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় দাস জানান, বাংলার ব্যাঙ্ককর্মীদের পাশে দাঁড়িয়ে রাজ্যসরকার ইতিমধ্যেই পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষের কাছে স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেনে চড়ার অনুমতির আবেদন জানিয়েছে।
সঞ্জয়বাবু জানান, রাজ্যসরকারের সমর্থন মিলতেই কার্যত দীর্ঘদিনের বাধা পেরিয়ে স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেনে চড়ার অনুমতি পেতে চলেছেন এ রাজ্যের ব্যাঙ্ককর্মীরা। ইতিমধ্যেই পূর্ব রেলের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজারের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এ বার নিজেদের উপযুক্ত পরিচয়পত্র দেখিয়ে টিকিট কাউন্টার থেকে মান্থলি টিকিট কাটতে পারবেন রাজ্যের ব্যাঙ্ককর্মীরা। একই ভাবে পরিচয়পত্র দেখিয়ে স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেনে চড়ার অনুমতিও পেতে চলেছেন ব্যাঙ্ককর্মীরা।
এ প্রসঙ্গে AIBOC-এর পশ্চিমবঙ্গ শাখার সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় দাস জানান, ইতিমধ্যেই স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেনে চড়ার ক্ষেত্রে পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষের মৌখিক সম্মতি মিলেছে। হোয়াটস্যাপেও এই বার্তা পৌঁছে গিয়েছে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কাছে। অপেক্ষা শুধু সরকারি ভাবে লিখিত অনুমতিপত্র হাতে পাওয়ার, জানান সঞ্জয়বাবু।
এই সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে এসবিআই স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের (বেঙ্গল সার্কেল) প্রাক্তন ডেপুটি চিফ সেক্রেটারি (Ex Dy Chief Secretary of SBISA) অশোক মুখোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্য সরকারের প্রচেষ্টায় বাংলার ব্যাঙ্ককর্মীদের দুর্ভোগ অনেকটাই কমবে। রাজ্যের ব্যাঙ্ককর্মীদের সহযোগিতার জন্য পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষকেও ধন্যবাদ জানাই।”