আপনি হয়তো প্রায়শই শুনেছেন বা হয়তো নিজেও মাঝে মধ্যে বলেন যে, ‘মাইনে এখন এতটাই কম যে, তা দিয়ে সারা মাসের সংসার খরচও চলে না!’ তাহলে কী ভাবে সঞ্চয় করবেন? বেতন যখন কিছুটা বাড়বে তখন কিছু টাকা বাকি থাকবে, যা বিনিয়োগ হবে। তবে কম বিনিয়োগে আরও ভাল আয় সম্পর্কে তথ্যের অভাবে লোকেরা তাই বলে।
বর্তমান যুগে আপনার পক্ষে উপার্জন যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি আরও গুরুত্বপূর্ণ হ'ল সেই আয়ের কিছু অংশ সঞ্চয় করা। যদিও, স্বল্প আয়ে অর্থ সাশ্রয় করা কিছুটা কঠিন, তবে এটি কোনও অসম্ভব কাজ নয়। কারণ নিযুক্ত ব্যক্তিদের জন্য, সঞ্চয় করা ভবিষ্যতের সঙ্গী।
বিশেষত, বেসরকারী খাতে কাজ করা ব্যক্তিরা যত তাড়াতাড়ি বিনিয়োগ শুরু করবেন, তত আর্থিকভাবে তাদের ভবিষ্যত হয়ে উঠবে। আজ জেনে নিন, একজন বেতনভোগী কর্মচারী কী ভাবে একজন সফল বিনিয়োগকারী হতে পারেন এবং কী ভাবে পরিকল্পিত বিনিয়োগের মাধ্যমে বেতনের চেয়ে বেশি আয় করতে পারেন!
আপনার যে বেতন আছে তা থেকে আপনি বিনিয়োগ শুরু করতে পারেন। এ জন্য কেবল ব্যয় সামঞ্জস্য করতে হবে। কর্মরত মানুষের উপার্জন ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়।
বিনিয়োগ বাড়ানোর পাশাপাশি আয় বাড়িয়ে রাখা, কিছু সময়ের পরে একই ছোট বিনিয়োগ বড় তহবিলে পরিণত হবে। অর্থও অর্থোপার্জন করে বলে একটি কথাও আছে। কারণ, নিয়মিত বিনিয়োগ বিনিয়োগের পরিমাণের চেয়ে বেশি আগ্রহের জন্ম দেয়।
উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, কারও বেতন যদি ২৫ হাজার টাকা হয় তবে তার পক্ষে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা সাশ্রয় করা কঠিন। তবে তিনি ব্যয়কে কিছুটা কমিয়ে প্রতি মাসে অবশ্যই আয়ের ১০ শতাংশ অর্থ সঞ্চয় করতে পারবেন। অর্থাৎ, প্রতি মাসে ২,৫০০ টাকা পর্যন্ত সাশ্রয় করা সম্ভব। এখন এই অর্থ সঠিক জায়গায় বিনিয়োগ করতে হবে। তবেই বাড়বে সঞ্চয়।
এসআইপি-এর মাধ্যমে প্রতি মাসে মিউচুয়াল ফান্ডে ২,৫০০ টাকা বিনিয়োগ করতে পারলে ৫ বছর পরে ১৫ শতাংশ রিটার্ন ধরে চললেও আপনার মোট বিনিয়োগ করা মূলধনের পরিমাণ প্রায় ২ লক্ষ টাকা হয়ে যাবে। এদিকে বেতনও যেমন প্রতি বছর বাড়তে থাকবে, তমেনই বাড়তে থাকবে আপনার সঞ্চয়ের পরিমাণও। আপনি যদি পরের ৩ বছরের জন্য একই ভাবে বিনিয়োগ চালিয়ে যান, তাহলে চার বছর পরে আপনার আমানত বৃদ্ধি পেয়ে ৪ লক্ষ টাকায় পৌঁছে যাবে!
সাধারণত, বেতনভোগীদের মাইনে যদি বার্ষিক ১০% হারে বৃদ্ধি পায়, সে ক্ষেত্রে প্রায় 8 বছরে তা দ্বিগুণ হতে পারে। এই হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে যাঁর মাইনে মাসে ২৫ হাজার টাকা, তাঁর মাসিক বেতন ৫০ হাজার টাকায় পৌঁছাতে প্রায় ১০ বছর লেগে যাবে। যেখানে ওই ১০ বছরের জন্য মাত্র ২,৫০০ টাকা করে বিনিয়োগ করলে প্রায় ৬ লক্ষ টাকার পুঁজি জমা হবে।