এ বছর গত বছরের তুলনায় অধিক ফলন সত্ত্বেও সরষের দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। দেশজুড়ে ভয়াবহ পরিস্থিতির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাবে ভোজ্য তেলের দাম আরও বাড়তে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে!
পেট্রোল-ডিজেলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গোটা দেশে গত কয়েক মাস ধরে বেড়ে চলেছে ভোজ্য তেলের দাম। সাধারণ সরষের তেলের পাইকারি দাম ১২০ থেকে বাড়তে বাড়তে ১৬০ টাকা ছুঁয়েছে। খুচরো দোকানে দাম আরও কিছুটা বেশি।
সরষের তেল ছাড়া অন্যান্য সমস্ত ধরনের ভোজ্য তেলের অধিকাংশই এখনও বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। দেশের মোট চাহিদার প্রায় ৭০ শতাংশই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। তার উপর ওই সব তেলের উপর কেন্দ্রীয় আমদানি শুল্ক চাপে। সব মিলিয়ে সূর্যমুখী, সয়াবিন, রাইস ব্রান— সব ধরনের ভোজ্য তেলের দামই বেড়ে গিয়েছে।
বর্তমানে ভোজ্য তেলের উপর প্রায় ৪০-৫০ শতাংশ হারে আমদানি শুল্ক নেওয়া হয়। পোস্তার পাইকারি ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, আমদানি শুল্কের জন্য প্রতি কেজিতে ২৫-৩০ টাকা দাম বেশি পড়ে যায়।
এর উপর হু হু করে বাড়তে থাকা করোনা সংক্রমণের জেরে ট্রেন বন্ধ হওয়ায় অতিরিক্ত পরিবহণ ব্যায় যুক্ত হতে চলেছে ভিন রাজ্য থেকে আমদানি করা ভোজ্য তেলের দামে।
এদিকে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশজুড়ে ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী পেট্রোল-ডিজেলের দর! পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোট মিটতেই বাড়তে শুরু করেছে তেলের দাম, যার সরাসরি প্রভাব পড়তে চলেছে ভিন রাজ্য থেকে আমদানি করা ভোজ্য তেলের পরিবহণ ব্যায়ের উপর।
পশ্চিমবঙ্গ ভোজ্য তেল উৎপাদন করে না। রাজ্যের ভোজ্য তেলের চাহিদা পূরণ করতে নির্ভর করতে হয় মূলত রাজস্থানের উপর। রাজস্থান থেকে একেকটা ট্রাকে মোটামুটি ২৩ টন ভোজ্য তেল পোস্তা বাজারে আসে।
পোস্তা বাজারের তেল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, রাজস্থান থেকে একেকটা ট্রাকে করে এই ভোজ্য তেল পোস্তা বাজারে পৌঁছানোর খরচ গত মাস পর্যন্ত ছিল মোটামুটি ৮০ হাজার টাকা। এই পরিবহণ ব্যায় জুড়েই পাইকারি বাজারে তেলের দাম নির্ধারিত হয়।
দেশজুড়ে ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী ডিজেলের দর এবার সরাসরি প্রভাব ফেলতে চলেছে রাজ্যের ভোজ্য তেলের দামে। পোস্তা বাজারের তেল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, শীঘ্রই রাজস্থান থেকে একেকটা ট্রাকে ভোজ্য তেল পোস্তা বাজারে পৌঁছানোর খরচ প্রায় ৭ হাজার টাকা বাড়তে চলেছে।