প্রায় পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও দেশের মোট জনসংখ্যার একটা বড় অংশকেই এখনও টিকা দেওয়া যায়নি। মে মাসের শুরু থেকেই ১৮-৪৫ বছরের সকলকে টিকা দেওয়ার কথা কেন্দ্র ঘোষণা করলেও নানা সমস্যায় বার বার গতি রুদ্ধ হয়েছে গণটিকাকরণ প্রক্রিয়ার।
পশ্চিমবঙ্গের মতো একাধিক রাজ্যের অভিযোগ, পর্যাপ্ত টিকা মিলছে না। জবাবে কেন্দ্র জানিয়েছে, দেশজুড়ে টিকার জোগানে কোনও ঘাটতি নেই। কেন্দ্র পাল্টা রাজ্যগুলিকে টিকাকরণে পরিকাঠামোগত উন্নয়নে জোর দিতে বললেও অধিকাংশ রাজ্যই নিজেদের ব্যবস্থাপনাকে ‘ফুল মার্কস’ দিচ্ছে।
এ বার প্রশ্ন হচ্ছে, যদি টিকার জোগানে কোনও সমস্যা না থাকে, রাজ্যের টিকাকরণের পরিকাঠামোগত কোনও ত্রুটি নেই তাহলে কেন দেশ ও রাজ্যের অধিকাংশ মানুষ এখনও টিকা পাননি?
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত দেশজুড়ে ২০ কোটি ৫৭ লক্ষ করোনা টিকার ডোজ দেওয়া সম্ভব হয়েছে। অর্থাৎ, বিগত পাঁচ মাসের গণটিকাকরণ পর্বের পরও দেশের ৮০ শতাংশেরও বেশি মানুষকে টিকার সুরক্ষা দেওয়া যায়নি।
#IndiaFightsCorona
— #IndiaFightsCorona (@COVIDNewsByMIB) May 28, 2021
☑️Daily positivity rate at 9%, less than 10% for 4 consecutive days
✅20.57 Cr. vaccine doses administered so far under #LargestVaccinationDrive
☑️Testing capacity substantially ramped up- 20.7 lakh tests conducted in last 24 hourshttps://t.co/ehPGnqoOEe pic.twitter.com/2ElqywsupU
স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া হিসাবের নিরিখে বর্তমান পরিস্থিতির বিচারে দেশের সমস্ত নাগরিককে টিকা দিতে দু’বছরেরও বেশি সময় লেগে যেতে পারে। এই সময়ের মধ্যেই করোনায় মৃত্যু হতে পারে আরও কয়েক লক্ষ মানুষের!
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার (International Monetary Fund বা IMF)-এর প্রকাশিত বিশ্লেষণ অনুযায়ী, দেশের ৬০ শতাংশ নাগরিককে করোনার প্রকোপ থেকে সুরক্ষিত করতে ভারতকে অন্তত ১০০ কোটি (১ বিলিয়ন) টিকার ডোজের জোগান নিশ্চিত করতে হবে।
আপাতত উৎপাদন বৃদ্ধি করা ছাড়া ১০০ কোটি (১ বিলিয়ন) টিকার ডোজের লক্ষ্যমাত্রা ছোঁয়া সম্ভব নয়। সম্প্রতি কেরল হাইকোর্টকে একটি প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্র জানিয়েছে, ভারতে মোট যে পরিমাণ টিকা উৎপাদিত হচ্ছে তার ৫৭ শতাংশ পৌঁছচ্ছে দেশের সাধারণ মানুষের কাছে। সুতরাং, চাহিদার তুলনায় জোগানের একটা ঘাটতি রয়েছেই।
এই প্রসঙ্গে ওয়েস্ট বেঙ্গল একাডেমি অফ পেডিয়াট্রিক্স-এর প্রেসিডেন্ট ডাঃ সুব্রত চক্রবর্তী বলেন, “আমার মনে হয়, সঠিক পরিকল্পনার অভাবে দেশের গণটিকাকরণে গতি আনা যাচ্ছে না। তাছাড়া রয়েছে রাজ্য-কেন্দ্র সমন্বয়ের অভাব। দেশের প্রথমসারির করোনা যোদ্ধাদের টিকাকরণের পর যদি দেশের নিম্নধ্যবিত্ত বা দরিদ্রসীমার নিচে বসবাসকারী মানুষকে টিকা দেওয়া যেত, তাহলে বোধহয় দেশের অধিকাংশ নাগরিককেই সুরক্ষিত করা যেত!