Nilgiris: মেঘের ভেতর ১১৭ বছরের পুরনো টয় ট্রেনে ৫ ঘণ্টার সফর, নীলগিরির 'স্বর্গে' কী কী দর্শনীয়? 

দক্ষিণ ভারতের নীলগিরি পাহাড়ে অবস্থিত উটি, যেখানে ভোরের শান্ত বাতাসে প্রতিধ্বনিত একটি পুরনো বাঁশির সুর মুহূর্তেই আপনাকে নিয়ে যায় ১১৭ বছরের পুরনো এক শান্ত যুগে। উত্তর ভারতের পাহাড়ি এলাকায় পর্যটকের ভিড় বাড়লেও উটি এখনও তার ঔপনিবেশিক সৌন্দর্য, নীরবতা ও প্রকৃতির মায়া আগলে রেখেছে।

Advertisement
মেঘের ভেতর ১১৭ বছরের পুরনো টয় ট্রেনে ৫ ঘণ্টার সফর, নীলগিরির 'স্বর্গে' কী কী দর্শনীয়? 
হাইলাইটস
  • দক্ষিণ ভারতের নীলগিরি পাহাড়ে অবস্থিত উটি, যেখানে ভোরের শান্ত বাতাসে প্রতিধ্বনিত একটি পুরনো বাঁশির সুর মুহূর্তেই আপনাকে নিয়ে যায় ১১৭ বছরের পুরনো এক শান্ত যুগে।
  • উত্তর ভারতের পাহাড়ি এলাকায় পর্যটকের ভিড় বাড়লেও উটি এখনও তার ঔপনিবেশিক সৌন্দর্য, নীরবতা ও প্রকৃতির মায়া আগলে রেখেছে।

দক্ষিণ ভারতের নীলগিরি পাহাড়ে অবস্থিত উটি, যেখানে ভোরের শান্ত বাতাসে প্রতিধ্বনিত একটি পুরনো বাঁশির সুর মুহূর্তেই আপনাকে নিয়ে যায় ১১৭ বছরের পুরনো এক শান্ত যুগে। উত্তর ভারতের পাহাড়ি এলাকায় পর্যটকের ভিড় বাড়লেও উটি এখনও তার ঔপনিবেশিক সৌন্দর্য, নীরবতা ও প্রকৃতির মায়া আগলে রেখেছে।

৭,৩৫০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই পাহাড়ি শহর তার অপূর্ব জলবায়ু, চা-সুগন্ধি বন, গোলাপ উদ্যান এবং ইউনেস্কো তালিকাভুক্ত টয় ট্রেনের জন্য বিশ্বজোড়া পরিচিত।

১১৭ বছরের পুরনো সেই বিস্ময়, উটির টয় ট্রেন
১৯০৮ সালে ব্রিটিশ ইঞ্জিনিয়ারদের নির্মিত এই ঐতিহ্যবাহী ট্রেনটি আজও একই মুগ্ধতা নিয়ে ছুটে চলে মেট্টুপালায়ম থেকে উটি পর্যন্ত। ৫ ঘণ্টার এই ধীরগতি ভ্রমণ যেন সময়ের স্রোতকে পিছনে ফিরিয়ে দেয়।

এই যাত্রাপথের বিশেষত্ব, ২০৮টি বাঁক, ১৬টি সুড়ঙ্গ। খাড়া ঢাল পেরিয়ে পাহাড়ের বুক চিরে পথ তৈরি। মাত্র ১৬টি প্রথম শ্রেণির সিট, যা অভিজ্ঞতাকে আরও ব্যক্তিগত করে তোলে। ট্রেনটি সমতল ভূমি থেকে শুরু করে চা বাগান, পাইন বন এবং অবশেষে মেঘের ভিড়ের ভেতর হারিয়ে যায়। কুনুর স্টেশনের আর্ট ডেকো স্থাপত্য দর্শনার্থীদের পুরনো দিনের ট্রেন যুগের স্বাদ দেয়।

উটির সেই হারিয়ে যাওয়া শান্তির অনুভূতি
নীলগিরির তিনটি প্রধান শহর-উটি, কুনুর ও কোটাগিরি-পর্যটকদের ছড়িয়ে রাখে বলে এখানে উত্তর ভারতের মতো জনাকীর্ণতা নেই। কুনুরের সকালের আলো, পাইন গন্ধ, মাটির আর্দ্রতা এবং চা পাতার সুবাস মিলিয়ে তৈরি হয় এক অনন্য আবহ। দোদ্দাবেত্তা পিক থেকে সূর্যোদয় দেখা সত্যিই একটি প্রশান্ত অভিজ্ঞতা। এখানে শব্দ বলতে শুধু একটাই-দূর থেকে ভেসে আসা টয় ট্রেনের বাঁশি।

নীলগিরি পাহাড় নীল দেখায় কেন?
এ দৃশ্যের পিছনে আছে এক বিস্ময়কর প্রাকৃতিক ঘটনা। বনভূমি থেকে বাষ্পীভূত ইউক্যালিপটাস তেল সূর্যালোকের প্রতিফলনে তৈরি করে নীলাভ কুয়াশা। ফলে দূরের পাহাড়গুলো নীল রঙে মোড়া মনে হয়। নীলগিরি বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের অংশ হিসেবে এই অঞ্চল তামিলনাড়ু, কেরালা ও কর্ণাটকের মিলনস্থল-যেখানে প্রকৃতি তার সত্যিকারের রূপে সংরক্ষিত।

Advertisement

প্রায় ১০ একর জুড়ে বিস্তৃত সরকারি রোজ গার্ডেনে রয়েছে ২০,০০০টিরও বেশি গোলাপ গাছ। নভেম্বরের সকালে সূর্য ওঠার আলোয় লাল, প্রবাল ও ক্রিম রঙের গোলাপ পাহাড়কে সাজিয়ে তোলে মনোরম ফোটোজেনিক দৃশ্যে। নিবিড় সবুজে মোড়া বোটানিক্যাল গার্ডেনে রয়েছে ১,০০০ এরও বেশি প্রজাতির উদ্ভিদ, তার মধ্যে একটি ২০ মিলিয়ন বছরের পুরনো জীবাশ্ম গাছও রয়েছে।

আদিবাসী সংস্কৃতির শিকড়ে পৌঁছে যাওয়ার সুযোগ
নীলগিরি ভ্রমণ কেবল দৃশ্য দেখার জন্য নয়, এটি একটি সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা। চা বাগানে পাতা তোলা থেকে কাপিং পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়া চাক্ষুস করা যায়। টোডা উপজাতির কারুকার্য, ২,০০০ বছরের পুরনো পাহাড়ি সংস্কৃতির আসল নিদর্শন-এখনও এখানে টিকে আছে। তাদের হাতে তৈরি শিল্প আন্তর্জাতিকভাবে মিউজিয়াম-গ্রেড হিসেবে পরিচিত।

 

TAGS:
POST A COMMENT
Advertisement